মতামত

করোনা ঝড়ের সাত নম্বর মহাবিপদ সংকেত

ড. মো. হাসিনুর রহমান খান

Advertisement

এবছরের ইয়াশ, গত বছরের আম্পান, ২০১৬ সনের রানু, ২০১৩ এর মহাসিন, ২০০৯ এর আইলা, এবং ২০০৭ সালের সিডর ঘূর্ণিঝড়ের কথা মনে করতে পারি অনেকেই| সাম্প্রতিক এইসব ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা সংকেত, কিংবা মহাবিপদ সংকেত, পূর্বাভাসসহ মোকাবেলার প্রস্তুতির ব্যাপারগুলোকে কোনভাবেই আলাদা করা যায় না ঘূর্ণিঝড় থেকে| সব গুলোই যেন ঘূর্ণিঝড়কে কেন্দ্র করে একত্রে নিবন্ধিত ও গ্রথিত এক মালার মত মনে হয় আমাদের কাছে| ঘূর্ণিঝড় নামক প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রাথমিকভাবে মোকাবেলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সক্ষমতার উৎকর্ষতার কারণেই এ ধরনের মালা তৈরি করা সম্ভব হয়| এর সিংহ ভাগের সাথে সহমত প্রকাশ করা গেলেও অবশ্য ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবেলার ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্ন চিত্র মিলে|

ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য মাত্রার উপর ভিত্তি করে তাৎক্ষণিকভাবে জনসচেতনতার জন্য প্রচার প্রচারণার কাজে রেডিও-টেলিভিশন, গণমাধ্যম, সামাজিক মাধ্যম, মাইকিং এর ব্যবহার, ব্যাপক জনসম্পৃক্ততা ঘটানো এবং সুষ্ঠু, সুরক্ষিত ব্যবস্থাপনা তৈরি করা হয়| এসব করা হয় খুব অল্প সময়ের মধ্যে| দৃশ্যত এর ফলে ব্যাপক জন ও মালের ক্ষতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে আমাদের দেশে অন্তত গত দুই দশক ধরে| এই সাফল্যের পেছনে অবশ্য গত দুই দশকে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক উন্নতি ও উন্নত ঘূর্ণিঝড় পূর্বাভাস মডেল যে অনেকটা দায়ী এটা অস্বীকার করবার উপায় নেই| এসবের সংকটের কারণে গত দুই দশকের পূর্বে অবশ্য একই রকম ভাবে জন ও মালের ব্যাপক ক্ষতি রোধ করা সম্ভব হয়নি, এটাও সত্য|

বন্যা, খরা, ভূমিকম্প, মহামারিসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার ক্ষেত্রে আমাদের সক্ষমতা ও পারদর্শিতা কি অভিন্ন| দুর্যোগের ধরণ ও ব্যাপকতা বৈচিত্রমুখি হওয়ায় তা অভিন্ন না হওয়াই স্বাভাবিক| একমাত্র ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে পূর্বাভাস পাওয়া সম্ভব নয় বলে দুর্যোগপূর্ব প্রস্তুতির ধরনটি সম্পূর্ণ আলাদা| বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ দেশ হওয়ায় প্রতিটি দুর্যোগ মোকাবেলার কাঠামোগত রুপরেখা থাকলেও করোনার মতো ভয়ানক সংক্রামক রোগের মহামারী মোকাবেলায় তা স্পষ্ট নয়| করোনা মহামারি বিস্তারের পূর্বাভাস জানার জন্য ঘূর্ণিঝড়ের মত বিদেশ নির্ভর কোন পূর্বাভাস মডেলের খোঁজ পাওয়া সম্ভব নয়, এটাই বাস্তবতা| হাওর, বিল, শহর-গ্রাম, পাহাড়ি ও সমতল ভূমিতে নির্বিচারে করোনা টেস্ট ও ক্ষেত্রবিশেষে জিনোম সিকোয়েন্স করে এর প্রাদুর্ভাব, বিস্তার ও গতি প্রকৃতি জানার প্রয়োজনীয় চেষ্টা অপ্রতুল থেকে যাচ্ছে| ফলে নিজস্ব কোন পূর্বাভাস মডেল তৈরি করাও সম্ভব হচ্ছে না| আর করোনার বিস্তার ও গতি প্রকৃতি জানতে ভূমিকম্পের মতো পূর্বাভাস ছাড়াই একরকম অলস হয়ে বসে থাকতে হচ্ছে| ফলে অতিমারির নানান ধরনের সতর্কতা সংকেতও দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না|

Advertisement

এর ফলে যেকোন ধরনের প্রো-অ্যাকটিভ সিদ্ধান্ত গ্রহণ অধরাই থেকে যাচ্ছে এবং ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর প্রতিক্রিয়াশীল বা উপলব্ধি ভিত্তিক তথ্যের ভিত্তিতেই সবকিছু করতে হচ্ছে| আর এর মাশুল গুনতে হচ্ছে সাধারন জনগণকে| করোনা নিয়ন্ত্রণের প্রধান হাতিয়ার টিকা হাতে না থাকলেও অন্যান্য অন্যতম হাতিয়ার গুলোকে কি ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারছি| ব্যাপক নির্বিচারে টেস্ট, আইসোলেশন, কোয়ারেন্টাইন হাতিয়ার গুলোকে যথেচ্ছ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যাপক উদাসীনতা কি লক্ষণীয় নয়! এসবের যথেষ্ট ব্যবহার জীবন-জীবিকার ভারসাম্য বিনষ্ট করতে পারে এমন কোন যৌক্তিক কারণও দেখিনা| তথাপিও এদের যথেচ্ছ ব্যবহারে কেন কৃপণতা দেখানো হচ্ছে তার উত্তর জানা নেই|

অন্যদিকে জীবন-জীবিকাকে সরাসরি আঘাত করতে পারে এমন হাতিয়ার লকডাউন ব্যবহার করা হচ্ছে| সবল, দুর্বল, আসল, নকল নানা বিশেষণে লকডাউন আজ শ্রী লাভ করেছে| ফলে মানুষ লকডাউন এর প্রকৃত অর্থ বুঝতে বিভ্রান্তিতে পড়ছে, যা লকডাউন এর সুফল পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটা অন্তরায় হিসেবে কাজ করছে| আবার মহামারীর পূর্বাভাস না থাকার কারণে স্থান-কালভেদে লকডাউনের শুরু বা শেষ সম্পর্কে আগেভাগেই মানুষকে অবহিত করা যাচ্ছে না| ফলে সাধারণ জনগণকেকে কখনো কখনো অতিশয় বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে| রোগের মহামারি নিয়ন্ত্রণে বিজ্ঞানের লকডাউন তত্ত্বের যাচ্ছেতাই ব্যবহারের কারণে প্রত্যাশিত সুফল মিলছে না| অন্যদিকে মানুষদেরকে প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য বিধি মানার ব্যাপারে সফলতার উল্লেখযোগ্য কোটাও নিশ্চিত করা যাচ্ছে না|

ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার প্রস্তুতির কার্যক্রমের তালিকাটা ছোট, অন্যদিকে করোনা মহামারি নামক ঘূর্ণিঝড় বা যুদ্ধ মোকাবেলার প্রস্তুতির কার্যক্রমের তালিকাটা শুধুমাত্র আশাতীতভাবে বড়ই না বরং বৈচিত্র্যময় এবং প্রকৃতপক্ষে সমস্যা জর্জরিত কিংবা চ্যালেঞ্জিং, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই| ফলে আমাদের দেশে মহামারিকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতির ব্যাপারগুলোকে নিয়ে প্রত্যাশিত মালা গাঁথা স্বপ্নেই থেকে যাচ্ছে| অনেক দেশ আবার এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পেরেছে, ঢাল-তলোয়ার বিহীন নিধিরাম সরকার হয়েও|

মূলত শহরকেন্দ্রিক বিশেষ করে ঢাকা চট্টগ্রামসহ বড় বড় শহরে করোনার বিস্তার করে করোনা এখন গ্রাম মুখী হয়েছে| এমন বিশ্বাস এর সপক্ষে গত এক-দেড় মাস যুক্তি ও মিলছিল বিশেষ করে যখন ডেল্টা ভেরিয়েন্ট (আগের ভারতীয় ভেরিয়েন্ট) এর উপস্থিতি সীমান্তবর্তী জেলা গুলোর প্রত্যন্ত অঞ্চলে দেখা মিলছিল| করোনা বড়লোকদের বা শহুরে মানুষদের রোগ এ সম্পর্কে ওই অঞ্চলের গ্রাম অঞ্চলের মানুষের কিছুটা হলেও ভ্রান্ত ধারণার বরফ গলতে শুরু করেছে বলে মনে হয়| দেশের অন্যান্য জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগণদের ক্ষেত্রেও একই ধারণা পোষণ করতে হয়তো আরো সময় লাগবে| আর হয়তো ততদিনে ডেল্টা ভারিয়ান্ট এর বিস্তার ঘটবে সারাদেশব্যাপী|

Advertisement

সপ্তাহ ব্যাবধানে মোট আক্রান্ত সংখ্যার বৃদ্ধির পরিবর্তনের (রিলেটিভ চেঞ্জ রেট) হিসাব অনুযায়ী ২ সপ্তাহ আগে সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছিল রাজশাহী বিভাগে (৭.৩%), দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রংপুর বিভাগে (৬%) এবং সর্বনিম্ন ছিল ঢাকা এবং বরিশাল বিভাগে (১-০.৯%)| এক সপ্তাহ আগেও সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছিল রাজশাহী বিভাগে (৯.৮%) কিন্তু দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হিসেবে খুলনা বিভাগে (৮%), অন্যান্য বিভাগেও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায় এবং কিছুটা কম বৃদ্ধি পেয়ে যথারীতি সর্বনিম্ন ছিল ঢাকা বিভাগে (১.১%)| এই সপ্তাহে (২২ শে জুন) সর্বোচ্চ আসনে বসে খুলনা বিভাগ (১৬.৭%) যেখানে এক সপ্তাহের ব্যবধানে পরিবৃদ্ধি ঘটেছে দ্বিগুণেরও বেশি, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে রাজশাহী (১১.৩%), তৃতীয় রংপুর (৬.৫%), অন্যান্য বিভাগগুলি (৩.২-৪.৪%) এবং ঢাকা (১.৭%) সর্বনিম্ন অবস্থানে|

এসব পরিসংখ্যানের সহজ সমীকরণ যেটা বলছে করোনার ঝড় সীমান্তবর্তী জেলা থেকে ঢাকার আশেপাশের জেলাগুলোতে এবং সেখান থেকে ক্রমশ হাটি হাটি পা করে রাজধানীর দিকে ধাবিত হচ্ছে| যদিও ঢাকায় আগে থেকেই ডেল্টা ভেরিয়েন্ট এর উপস্থিতি ধরা পড়েছিল কিন্তু কমিউনিটি পর্যায়ে সংক্রমণ ঘটেছে কিনা সে ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি| এই ঝড়ের উৎপত্তিস্থল ভারতে হলেও শুরুর দিকে এ বিষয়ে আমরা মাথা ঘামাতে দেখিনি| কোনরূপ পূর্বাভাস মডেল ব্যবহার না করে বরং বোকার মত অনেককে বলতে শুনেছি যে আমাদের দেশে নাও আসতে পারে| আর ভারতের অবস্থা খারাপ হয়ে যখন সীমান্তে আসলো তখন বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো| তাতেও যখন কাজ হলোনা, যখন কমিউনিটি বিস্তার ঘটলো তখন লকডাউন দেওয়া হল| এতে করে কিছু কিছু জেলায় ফল পাওয়া গেলেও অনেক জেলাতে তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল| এখন ঢাকাকে বাঁচানোর জন্য আশেপাশের জেলাগুলোতে লকডাউন দেওয়া হয়েছে|

ফলে প্রশ্ন জন্মায় সঠিক সময়ে করোনা ঝড়ের সঠিক সর্তকতা সংকেত জানাতে পেরেছি কিনা! ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখানোর বিপরীতে শুধু সাবধান থাকতে বলেছি কিনা| ৫ নম্বর সতর্কতা সংকেত এর বিপরীতে এক নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়েছি কি না, কিংবা সাত নম্বর মহাবিপদ সংকেত এর বিপরীতে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখানো হয়েছে কিনা| আগেও বলেছি এ ধরনের ভুল সতর্কতা সংকেত দেওয়ার পেছনে বৈজ্ঞানিক যুক্তি হতে পারে--সঠিক পূর্বাভাস মডেল না থাকা, এবং ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে করতে বিলম্বিত সংকেতের ব্যবস্থা করা| এখানে সর্তকতা সংকেত বোঝাতে বলা হয়েছে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া এবং যথাযথভাবে কার্যকরী করা|

ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে কঠোর লকডাউন ও বিধি নিষেধ যথাযথভাবে কার্যকরী না করতে পারলে, পাশাপাশি রাজধানীতেও কঠোর বিধি নিষেধ চলমান না রাখতে পারলে পরিসংখ্যানের সহজ সমীকরণ অনুযায়ী ঢাকার অবস্থা ভারতের রাজধানী দিল্লির মত হতে পারে যেখানে একদিনে ২৫ হাজারেরও বেশি সনাক্ত হয়েছিল| আর ঢাকায় ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশে ভারতের মতো করে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে| সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লে কি অবস্থা হতে পারে? বাংলাদেশের জনসংখ্যা ভারতের মোট জনসংখ্যার আট ভাগের এক ভাগ হলেও বাংলাদেশে জনসংখ্যার ঘনত্ব ভারতের তুলনায় অনেক বেশি| সম্প্রতি ভারতে একদিনে সর্বোচ্চ চার লক্ষ ১৪ হাজারেরও বেশি শনাক্ত হয়েছে এবং এপ্রিল হতে আজ অবধি ভারত গড়ে ১৮ লক্ষেরও বেশি প্রতিদিন টেস্ট করে গড়ে প্রতিদিন দুই লক্ষ ৩০ হাজারের মতো শনাক্ত করতে পেরেছিল, মৃত্যু হয়েছিল গড়ে প্রতিদিন ২৮৫০ এর চেয়েও বেশি| জনসংখ্যার ঘনত্বকে বিবেচনায় না নিলেও এই হিসাব মতে বাংলাদেশেও প্রতিদিন গড়ে ২৯-৩০ হাজার সনাক্ত হতে পারে যদি গড়ে প্রতিদিন ২ লক্ষ ২৫ হাজার টেস্ট করা যায় এবং প্রতিদিনের গড় মৃত্যুর সংখ্যা হতে পারে ৩৫০ এরও বেশি|

ইতিমধ্যে বিশ্বের ৮০ টি দেশে করোনা ভাইরাসের এই ডেল্টা ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে| সাধারণ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হারের তুলনায় ডেল্টা ভারিয়ান্ট (যা প্রথম ধরা পড়েছিল গতবছরে ভারতে) এর সংক্রমণের হার ৫০% বেশি অর্থাৎ ১০০ জন করোনা ভাইরাসের জীবাণু বহন করে থাকলে দেখা যাচ্ছে যে তারমধ্যে সাধারণ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে আটজন, অন্যদিকে সেখানে একইভাবে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে ১২ জন| বিশেষজ্ঞদের ধারণা অচিরেই এই রকম দেশের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং বৈশ্বিক ভাবে শনাক্তকৃত করোনাভাইরাসের অধিকাংশই এই ভেরিয়েন্ট অফ কন্সার্ন হবে|

এ বছরের এপ্রিলে ভারতে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট প্লাস নামে আরেকটি করোনাভাইরাস এর ধরন শনাক্ত হয়েছে, যার প্রায় চল্লিশটি স্যাম্পল ইতিমধ্যে ভারতের তিনটি প্রদেশের পাওয়া গেছে| এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, পর্তুগাল, সুইজারল্যান্ড, জাপান, পোল্যান্ড, নেপাল, রাশিয়া ও চীনসহ বিশ্বের নয়টি দেশেও এর অস্তিত্ব মিলেছে| দ্রুত সংক্রমণের শক্তি, সহজেই ফুসফুসকে আক্রান্ত করা, ও এন্টিবডিকে পাশ কাটিয়ে আক্রান্ত করার ক্ষমতা সম্পন্ন এই করোনাভাইরাসের এখনোও অনেক কিছু অজানা| এখন পর্যন্ত ৭.৬ বিলিয়ন লোকের এই বিশ্বে ২২ দশমিক ২ শতাংশ মানুষকে কমপক্ষে এক ডোজ টিকা দেওয়া হলেও তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির ক্ষেত্রে তা তাদের জনসংখ্যার মাত্র এক শতাংশ হয়েছে, এবং বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যা এখন পর্যন্ত ৬ দশমিক ১%| এসব কারণে এটাই প্রতীয়মান হয় যে আমাদের দেশে করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে টিকা দানের গুরুত্বের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানা, বেশি বেশি টেস্ট করা, প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা রাখা, পর্যায়ক্রমিক এবং লোকাল কঠোর লকডাউন ব্যবস্থা রাখা এবং সর্বোপরি করোনার বিস্তারের প্রক্ষেপণ জানতে সঠিক দেশীয় পূর্বাভাস মডেল তৈরি করা|

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, ফলিত পরিসংখ্যান, আই এস আর টি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সভাপতি, আই এস আর টি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন নির্বাহী কমিটি।

এইচআর/জিকেএস