জাগো জবস

শেষ হতে যাচ্ছে নারী উদ্যোক্তাদের ১ বছরের প্রশিক্ষণ

আগামী ২৬ জুন শেষ হবে উই আয়োজিত নারী উদ্যোক্তাদের টানা ১২ মাসের প্রশিক্ষণ। এরকম একটি বৈশ্বিক আয়োজনে বিশ্বের নানা বিষয়ের প্রশিক্ষকরা কথা বলেছেন, সেশন নিয়েছেন। মাস্টারক্লাসগুলো শুধু উদ্যোক্তাদের জন্যই ছিল। এতে মিলেছে সনদও। এ রকম একটি ভিন্নধর্মী উদ্যোগের পেছনের কারিগর হলেন উই সভাপতি নাসিমা আক্তার নিশা। সঙ্গে ছিলেন সিল্কক গ্লোবালের সিইও, উইয়ের বৈশ্বিক উপদেষ্টা সৌম্য বসু।

Advertisement

তাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল আড্ডায় কথা বলেছেন বেনজির আবরার। জাগো নিউজকে তারা জানালেন নানা প্রাসঙ্গিক বিষয়। পাঠকের জন্য আলাপনটি তুলে ধরা হলো—

মাস্টারক্লাসগুলোর মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়াতে পেরে আপনাদের অনুভূতি কী? এমন প্রশ্নের উত্তরে সৌম্য বসু বলেন, ‘ব্যবসা বিষয়ক প্রশিক্ষণ ব্যবসায় ভালো করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগের কাছে এটি সহজ হয়, এমন তথ্য থেকেই শুরু করা। ধারণাটি ছিল তাদের সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনার সঠিক জ্ঞান দেওয়ার। তারা যাতে বিশ্বে লড়াই করতে পারে। অনেকগুলো সমস্যা থাকতে পারে উদ্যোক্তা জার্নিতে। তবে এটি দ্বিতীয় সুযোগ হতে পারে, বাড়তি কয়েকটি জিনিস শেখার অন্য সুযোগ। যদি আমরা তাদের জীবন ও ব্যবসায়ের প্রায় ১ শতাংশও পরিবর্তন করতে পারি, তবে আমাদের প্রোগ্রামটিকে সত্যিই সফল মনে করব।’

দেশের নারীদের অগ্রযাত্রায় বৈশ্বিক মাধ্যমে এটি বড় ঘটনা। মাস্টারক্লাসের আইডিয়া মাথায় এলো কিভাবে? এর জবাবে উই সভাপতি নিশা বললেন, ‘সৌম্য বসু দার সঙ্গে ২০১৯ সালে যশোরের এইচটিপিএ ইভেন্টে দেখা হয়েছিল। যেখানে তিনিই একমাত্র মূল বক্তা ছিলেন। তার সেশনগুলো দেখার পর আমি তাকে উইয়ের সাথে যুক্ত করতে চেয়েছিলাম। ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে কোভিডের থাবায় উদ্যোক্তারা যখন হতাশ; তখন সদস্যদের জন্য বিশেষ কিছু করতে চেয়েছিলাম। যা মহামারিতে তাদের সহায়তা করতে পারে।’

Advertisement

তিনি বলেন, ‘মিস্টার বসুর সাথে অনেক আলোচনার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, বাংলাদেশে এন্টারপ্রেনারশিপ মাস্টারক্লাসের একটি বিশেষ আয়োজন করবো। যা এর আগে অন্যান্য দেশে প্রচলিত ছিল। এ ছাড়াও এর সাথে একটি শিক্ষামূলক সিরিজের মডেল আনার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন অবশেষে সত্য হয়েছিল।’

দুজনের কাছেই প্রশ্ন ছিল, ‘মাস্টারক্লাসগুলোয় সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল উপস্থিত ছিলেন। এটি সম্পর্কে আপনাদের অনুভূতি কী?’ উত্তরে সৌম্য বসু বলেন, ‘আমি মনে করি, এটি সরকারের গভীর আগ্রহের একটি দুর্দান্ত উদাহরণ। আমরা প্রথম থেকেই আইসিটি মন্ত্রনালয় এবং এলআইসিটি প্রকল্পের সমর্থন পেয়েছি। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের এ পৃষ্ঠপোষকতায় কাজটি সফল হয়েছে। আমরা যখনই কারও কাছে সহায়তার জন্য যোগাযোগ করেছি, আমরা সাড়া পেয়েছি। আমরা এ পর্যন্ত ৭ লাখের বেশি ভিউয়ারশিপ রেকর্ড করেছি। আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ অভিযানে অবদান রাখতে সাহায্য করার জন্য সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি যখন গ্লোবাল অ্যাডভাইজার হিসাবে উইতে যোগ দিয়েছি; তখন প্রচুর ভালো প্রতিভা দেখেছি। শেখার ক্ষুধা দেখেছি। বেড়ে ওঠার আগ্রহ দেখেছি। ফলে দরকার ছিল একটি পরিকল্পনা এবং সেই লক্ষ্যে কাজ করা। নিশার সাথে আমি প্রথমে একটি করণীয় তালিকা তৈরি করেছি। যা ভবিষ্যতে যুগান্তকারী হতে পারে। সুতরাং এন্টারপ্রেনারশিপ মাস্টারক্লাস, উই সামিট আন্তর্জাতিক মানের সম্মেলনের চেয়ে কম কিছু নয়।’

উই সভাপতি নাসিমা আক্তার নিশা বলেন, ‘আমি যুক্ত করতে চাই, এর জন্য উইয়ের দুর্দান্ত এবং অসাধারণ টিমকে ধন্যবাদ। যারা এর পেছনে কাজ করেছেন। আন্তরিক ধন্যবাদ তাদের, যারা দৃষ্টিভঙ্গিটি নিজেদের মধ্যে ধারণ করে নিয়েছেন এবং সম্ভব করে তুলেছেন। আমরা এখন দেশের বাইরেও কাজ করছি। জাপান ও মালয়েশিয়ায় দুটি শাখা খুলেছি। আমাদের দেশীয় পণ্যগুলো বিশ্বের প্রতিটি অঞ্চলে নিয়ে যেতে চাই। যাতে বাংলাদেশি পণ্যগুলো সর্বাধিক আলোচনায় আসে।’

Advertisement

মাস্টারক্লাসের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সৌম্য বসু বলেন, ‘অনেক আগ্রহ থাকায় মাস্টারক্লাস সিজন-২ করবো আমরা। যারা সেশন মিস করেছেন, তারা আবার শুরু করতে পারবেন। সুতরাং একই মডিউলটি ভবিষ্যতেও চলবে। প্রথম অধিবেশনটি জুলাইয়ে শুরু হবে। এ ছাড়া যারা প্রথম মডিউল শেষ করেছেন বা ব্যবসার প্রবৃদ্ধির পর্যায়ে আছেন, জুলাইয়ের শেষ থেকে তাদের জন্য মাস্টারক্লাস-অ্যাডভান্স মডিউল চালু করব।’

এসইউ/জিকেএস