দেশজুড়ে

উদ্বোধনের ৪ দিনের মাথায় উপহারের ঘরে ফাটল!

পাবনার সুজানগরে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে উপহার পাওয়া ভূমিহীনদের ঘরে উদ্বোধনের চার দিনের মধ্যেই কোনো কোনোটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে নির্মাণ কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

গত ২০ জুন প্রধানমন্ত্রী সারাদেশের সঙ্গে সুজানগরেও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘরগুলো ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন। পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির ওই দিনই উপজেলা পরিষদ হলরুমে সুজানগরের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মধ্যে নতুন ঘর ও জমির দলিলপত্র হস্তান্তর করেন।

সুজানগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প আশ্রয়ণ-২ এর আওতায় সুজানগর উপজেলার ভায়না ইউনিয়নে চারটি, সাতবাড়ীয়া ইউনিয়নের কুড়িপাড়ায় চারটি ও কাদোয়া গ্রামে চারটিসহ মোট ১২টি ভূমিহীন পরিবারকে ২ শতাংশ করে খাস জমি বন্দোবস্ত দিয়ে একটি করে সেমি পাকা ঘর তৈরি করে দেয়া হয়েছে। প্রতিটি ঘর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এই কাজের দেখভাল করেছেন স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন।

বুধবার (২৩ জুন) সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ভায়না গ্রামে একটি ঘরে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, অনেকটা তড়িঘড়ি করে ঘরগুলো নির্মাণ, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার বা নির্মাণ সামগ্রী পরিমাণে কম দেয়ার কারণে এ ফাটল ধরেছে। পাকাঘর পেয়ে খুশি হলেও নির্মাণের অবস্থা দেখে উপকারভোগীদের মনে হতাশা দেখা দিয়েছে।

Advertisement

ঘর পাওয়া ভায়না এলাকার সুমি খাতুন জানান, তারা ভূমিহীন গরিব মানুষ বলেই ঘর পেয়েছেন। কিন্তু এমন ঘর পেলেন যে ঘরে নির্মাণের কয়েকদিনের মধ্যেই ফাটল ধরল। ল্যাট্রিনের রিং-স্লাবও ভাঙা। ফাঁকা মাঠে ঘর হওয়ায় যাতায়াতের রাস্তা নেই, বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, এমনকি কোনো টিউবয়েলের ব্যবস্থাও নেই।

সাতবাড়ীয়ার কাদোয়া গ্রামের উপকারভোগী শারমিন আক্তার বলেন, নতুন ঘরের টিনের চাল দিয়ে পানি পড়ে। তারা কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি আশা করেন।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন, ‘ঘরগুলো যদি টেকসই না হয় তাহলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মহান উদ্যোগে কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলবে না।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রওশন আলী বৃহস্পতিবার বলেন, ‘ঘরের কাজ চলমান রয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে উপজেলার ১২টি ভূমিহীন পরিবারকে গৃহ নির্মাণ করে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। ঘর নির্মাণে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। মিস্ত্রিদের জন্য সামান্য ত্রুটি-বিচ্যুতি হতে পারে।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, ‘ঘরের দেয়াল ফেটে যাওয়ার খবর পেয়ে আমি এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। রাজমিস্ত্রি দিয়ে সংস্কার করার জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

আমিন ইসলাম/এমআরআর/এমকেএইচ