সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘মিড ডে মিল’ হিসেবে খিচুড়ি প্রকল্প বাতিল হওয়ায় নতুন করে এ কার্যক্রম চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের মায়েদের সম্পৃক্ত করে শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
Advertisement
জানা গেছে, চলতি মাসের শুরুতে একনেক সভায় ‘প্রাইমারি স্কুল মিল’ প্রকল্পটি তোলা হলে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের রান্না করা খাবার না দিয়ে রান্না ছাড়া খাবারের পক্ষে মত দেন। তিনি প্রকল্পটি নতুনভাবে উপস্থাপনের নির্দেশ দেন।
একনেক সভার তথ্য মতে, স্কুলে চাল, ডাল, তেল, শাকসবজি দিয়ে খাবার রান্না করা হলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি হতে পারে। তাই গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নতুন ফরম্যাটে শিক্ষার্থীদের খাবার দেয়ার প্রকল্প নিতে বলা হয়েছে। সেই ফরমেট হতে দুধ, ডিম ও বিস্কুটসহ বিভিন্ন খাবার।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কোন পদ্ধতিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল চালু করা যায়, এখন তা নিয়ে ভাবা হচ্ছে। প্রতি স্কুলে নিয়মিত অর্থ বরাদ্দ দিয়ে রেডিমেড খাবার দেয়া, মায়েদের টিফিন বাটি কিনে দিয়ে তার সন্তানকে নিয়মিত স্কুলে পাঠানোর সময় খাবার দেয়া। তার সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
Advertisement
জানা গেছে, বুধবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে নতুনভাবে মিড ডে মিল চালু করতে সংসদীয় কমিটির সদস্যরা প্রস্তাব করেন। শিক্ষার্থীদের মায়েদের ও স্থানীয় প্রতিনিধিদের যুক্ত করতে পরামর্শ দেন তারা। এ ছাড়াও সভায় ঢাকা মহানগরীর ৩৪২টি সরকারি বিদ্যালয় দৃষ্টিনন্দনকরণ প্রকল্পের কাজ দ্রুত শুরুর করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, খিচুড়ি কার্যক্রম বাতিল হওয়ায় নতুন পদ্ধতিতে মিড ডে মিল চালু করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। তবে কোন পদ্ধতিতে এটি চালিয়ে নেয়া হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। সংশ্লিষ্টদের কাছে এ বিষয়ে পরামর্শ চাওয়া হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে, প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের স্কুলে পুষ্টিকর খাবার সরবরাহে ১৭ হাজার ২৯০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রকল্পের পুরো অর্থ যোগানো হবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে। প্রকল্পের আওতায় খিচুড়ি রান্না ও পরিবেশনের প্রশিক্ষণ নিতে ১ হাজার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিদেশ সফরের একটি প্রস্তাব ছিল, যা নিয়ে সমালোচনা হয়। ফলে খাতটি বাদ দেয়া হয়েছে।
Advertisement
আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়গামী সব শিক্ষার্থীকে পর্যায়ক্রমে স্কুল মিল কার্যক্রমের আওতায় এনে তাদের শিক্ষা, পুষ্টি, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তায় অবদান রাখাতে প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছিল। খাদ্যদ্রব্য হিসেবে চাল-ডাল, ভোজ্যতেল, বিস্কুট ও শাকসবজি ইত্যাদি কেনা হবে ১১ লাখ ১১ হাজার ৪৪ মেট্রিক টন। পরিবহন ও ইন্সপেকশনের জন্যও ব্যয় ধরা হয়েছিলো।
এমএইচএম/এসএস/জেআইএম