বগুড়ায় বেড়েই চলেছে করোনার সংক্রমণ। তবে আগে শুধু শহরে এ সংক্রমণের হার বেশি থাকলেও বর্তমানে গ্রামেও ছড়িয়ে পড়ছে এ ভাইরাস। নন্দীগ্রাম উপজেলার গ্রাম-গঞ্জেও সংক্রমণের হার বাড়ছে প্রতিদিনই। গ্রামের ফার্মেসিগুলোতে মিলছে না প্রয়োজনীয় ওষুধ। এতে জনমনে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। এরপরও বিধিনিষেধ মানছেন না তারা।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে নন্দীগ্রামে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সসহ সাতজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে উপজেলায় সংক্রমণের শুরু থেকে মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৯৩ জনের। করোনা আক্রান্ত বেশিরভাগেরই বাড়ি গ্রামে। এ উপজেলায় এ পর্যন্ত ছয়জন করোনায় মারা গেছেন।
নন্দীগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় ক্লিনিকগুলোতে সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত রোগী আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। হাসপাতালে উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষের মধ্যে পৌর শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলের মানুষই বেশি। এছাড়া সামাজিক বিড়ম্বনার ভয়ে উপসর্গ থাকার পরও অনেকে করোনা পরীক্ষা করাতে চান না।
গ্রামের মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও মাস্ক ব্যবহারেও উদাসীনতা দেখা যায়। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ প্রবণতাকে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার পাশাপাশি লোকজনকে সচেতন করতে ব্যাপকভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে।
Advertisement
এদিকে ফার্মেসিতে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে বাড়ানো হয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপের নাপা, অ্যাজিথ্রোমাইসিন ও প্যারাসিটামল ওষুধের দাম এমন অভিযোগ উঠেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে প্যারাসিটামল ও অ্যাজিথ্রোমাইসিন ওষুধের বিক্রি বেড়েছে ফার্মেসিগুলোতে। টাকা দিয়েও ওষুধ না পেয়ে ভোগান্তি আর বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন এলাকার মানুষ।
উপজেলা ড্রাগ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন বলেন, বেক্সিমকোর বিক্রয় প্রতিনিধিরা ওষুধ না দেয়ার কারণে নাপা ও প্যারাসিটামল ফার্মেসিতে নেই। তবে অন্য কোম্পানির ওষুধ রয়েছে। এছাড়া কোনো ফার্মেসিতে কেউ ওষুধ বেশি দামে বিক্রি করছে না।
এ বিষয়ে বেক্সিমকো কোম্পানির নন্দীগ্রামের প্রতিনিধি সনজিত কুমার বলেন, ‘চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় মার্কেটে নাপা জাতীয় ওষুধের সঙ্কট রয়েছে। তবে কয়েকদিনের মধ্যে সাপ্লাই স্বাভাবিক হবে।’
নন্দীগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তোফাজ্জল হোসেন মণ্ডল বলেন, ‘বেক্সিমকো গ্রুপের নাপা জাতীয় ওষুধ ফার্মেসিতে পাওয়া যাচ্ছে না বলে শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বারবার উপদেশ দেয়ার পরেও জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত লোকজন করোনা পরীক্ষায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তারা পরীক্ষা না করে বিভিন্ন ফার্মেসিতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে করোনার উপসর্গ নন্দীগ্রাম উপজেলার গ্রাম-গঞ্জেও ছড়িয়েছে।’
Advertisement
এসএমএম/এএসএম