জাতীয়

ঢাকায় ৭১ ও চট্টগ্রামে ৫৫ শতাংশ মানুষের দেহে অ্যান্টিবডি

ঢাকা ও চট্টগ্রামের বস্তি ও বস্তি সংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারী নারী ও পুরুষের মধ্যে সেরোপজিটিভিটির (অ্যান্টিবডি) হার বেশি। ঢাকায় ৭১ শতাংশ ও চট্টগ্রামে ৫৫ শতাংশ নারী ও পুরুষের মধ্যে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। বয়স্ক ও তরুণদের অ্যান্টিবডির হার প্রায় সমান। নারীদের মধ্যে অ্যান্টিবডির হার ৭০ দশমিক ছয় শতাংশ এবং পুরুষদের ৬৬ শতাংশ।

Advertisement

আইসিডিডিআরবির সম্প্রতি সার্চ-কভ-২ সংক্রমণের বিস্তার নির্ণয়ের জন্য এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তিন হাজার ২২০ জনের ওপর পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, চট্টগ্রামের তুলনায় ঢাকায় অ্যান্টিবডির হার বেশি। যেসব অংশগ্রহণকারীর (মোট দুই হাজার ২০৯ জন) মাঝে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে, তাদের মধ্যে শুধু ৩৫ দশমিক ৫ শতাংশের ক্ষেত্রে মৃদু উপসর্গ দেখা দিয়েছিল।

জানা গেছে, আইসিডিডিআরবি সম্প্রতি সার্চ-কভ-২ সংক্রমণের বিস্তার নির্ণয়ের জন্য একটি গবেষণা পরিচালনা করে। গবেষণাটি ঢাকা ও চট্টগ্রামের বস্তি এবং বস্তি সংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারী সার্চ-কভ-২ এর উপসর্গযুক্ত ও উপসর্গহীন ব্যক্তিদের ওপরে করা হয়েছে। এই সমীক্ষার মাধ্যমে সেরােপজিটিভিটি (রক্তে সার্চ-কভ-২ এর উপস্থিতি) সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় বিশ্লেষণ করা হয়।

এ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে ফরেইন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) ও ইউনাইডেট নেশনস পপুলেশন ফান্ড (ইউএনএফপিএ)। বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ এই গবেষণায় অ্যাডভােকেসি পার্টনার হিসেবে কাজ করেছে।

Advertisement

এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল বস্তি ও বস্তির বাইরে বসবাসকারীদের রক্তে কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি এবং তার সম্ভাব্য কারণ নির্ণয় করা। যেসব সম্ভাব্য কারণ বিশ্লেষণ করা হয়েছে সেগুলাে হলাে- শরীরে অন্যকোনো শ্বাসকষ্টজনিত ভাইরাসের উপস্থিতি, পুষ্টিগত অবস্থা (যেমন: ভিটামিন ডি, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম) এবং রােগপ্রতিরােধ ক্ষমতা। এই সমীক্ষাটি ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি সময়ের মধ্যে পরিচালিত হয়।

গবেষণা থেকে প্রাপ্ত মূল তথ্যের মধ্যে রয়েছে

১. স্বল্পশিক্ষিত, অধিক ওজন, উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রয়েছে যাদের, তাদের মাঝে অধিকমাত্রায় সেরােপ্রিভেলেন্স (রক্তে কোভিড উপস্থিতির হার) দেখা গেছে।২. বারবার হাতধোয়ার প্রবণতা, নাক-মুখ স্পর্শ করা, বিসিজি টিকাগ্রহণ এবং মাঝারি ধরনের শারীরিক পরিশ্রম করা ব্যক্তিদের মাঝে কমমাত্রার সেরােপ্রিভেলেন্স দেখা গেছে।৩. সেরােনেগটিভ ব্যক্তিদের তুলনায় সেরােপজিটিভ ব্যক্তিদের মাঝে সেরাম জিংকের মাত্রা বেশি দেখা গেছে।৪. গবেষণায় ভিটামিন ডি-এর অপর্যাপ্ততার সাথে সেরােপজিটিভিটির কোনাে প্রভাব দেখা যায়নি বরং গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মাঝে ভিটামিন ডি-এর উচ্চমাত্রার ঘাটতি দেখা গেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, বস্তির বাইরে বস্তিসংলগ্ন এলাকার নিম্ন-মধ্য আয়ের মানুষের তুলনায় সার্স-কোভ-২ অ্যান্টিবডি সেরােপ্ৰিভেলেন্স বস্তিতে বেশি। প্রতিরােধমূলক ব্যবস্থার মধ্যে ঘনঘন হাতধােয়া, সংক্রমণ প্রতিরােধে প্রভাব ফেলেছে। সেরােপজিটিভিটির সাথে যুক্ত অন্য প্রভাবক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত ওজন, ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ। মাঝারি কায়িক শ্রম যারা করে তাদের মাঝে সেরােপজিটিভিটির সম্ভাবনা কম দেখা গেছে।

Advertisement

এমইউ/বিএ/এমএস