‘মোটরসাইকেলটা এক্কেবারে নতুন। মাত্র ১ হাজার কিলোমিটার চলেছে। এ রাস্তায় আসতে গিয়ে সাইলেন্সার পাইপ আর ইঞ্জিনে পানি ঢুকেছে। আল্লাহ জানেন, মেরামত করতে কত টাকা লাগে! নিউমার্কেটে জলাবদ্ধতা আর কতদিন পোহাতে হবে!’
Advertisement
আজ মঙ্গলবার (২২ জুন) সকাল ১০টার দিকে নিউমার্কেট এক নম্বর গেটের সামনে বিকল হয়ে পড়া মোটরসাইকেলের সামনে দাঁড়িয়ে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে এক তরুণ কথাগুলো বলছিলেন।
এ সময় হাটু পানিতে লুঙ্গি পরে ৭০/৭২ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ হেঁটে যাচ্ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘বছরের পর বছর শুনে আসছি, রাস্তার উন্নয়ন কাজ চলছে, আগামী বছর থেকে আর জলাবদ্ধতা হবে না। প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচের নামে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়। সামান্য বৃষ্টি হলেই আবার আগের মতো পানি জমে।’
Advertisement
রাজধানীর নীলক্ষেত থেকে পশ্চিমে এগিয়ে আজিমপুর কবরস্থানমুখী রাস্তায় প্রতিবারের মতো এবারও বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। সকাল থেকে জীবিকার সন্ধানে বের হওয়া বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এ পথে চলতে গিয়ে জলাবদ্ধতার কারণে বিপাকে পড়েন। আজ মঙ্গলবার নিউমার্কেটে সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় নিউমার্কেট ও আশপাশের মার্কেটের মালিক-কর্মচারীদের ভোগান্তি না হলেও বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অফিস আদালত ও গার্মেন্টসকর্মীসহ নিম্নআয়ের মানুষের নিদারুণ ভোগান্তি হয়।
জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পেতে কেউ রাস্তার আইল্যান্ডে আবার কেউ কাপড় ভিজিয়েই রাস্তায় চলছেন। আজিমপুর কবরস্থানের সামনে থেকে ভ্যানগাড়িতে করে জনপ্রতি ১০টাকা করে নিয়ে পানি পারাপারের দৃশ্য চোখে পড়ে। নিউমার্কেটের সামনে বিশাল আকারের ময়লার তিনটি কন্টেইনার দেখা যায়। আষাঢ়ের বৃষ্টিতে রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় ডাষ্টবিনের ময়লা আবর্জনা ভাসতে দেখা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘গত দুই তিন বছর ধরে কখনও ওয়াসা কখনও সিটি করপোরেশন বিশাল বিশাল মোটা পাইপ বসিয়ে সংস্কার কাজ করে। প্রতিবারই আশ্বাস দেয়া হয় আগামী বছর থেকে আর জলাবদ্ধতা হবে না। কিন্তু ঘুরে ফিরে সেই একই দৃশ্য দেখা যায়।’
নিউমার্কেট এলাকার ফুটপাতের একজন ফল বিক্রেতা বলেন, সংস্কার কাজ করলে কী হবে, পুরনো ইট, নামকাওয়াস্তে সিমেন্ট ও রড ব্যবহার করে কোনভাবে শেষ করায় ড্রেনেজের কাজ টেকসই হয় না। ঠিকাদাররা সঠিক মালামাল ব্যবহার করছে কি না তা দেখার কেউ নেই।
Advertisement
এমইউ/এমএইচআর/এএসএম