নিজের দ্বিতীয় বিদেশ সফরে এবার রাশিয়া পৌঁছেছেন মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং। দ্য ডিপ্লোম্যাটের প্রতিবেদন বলছে, রাজধানী নেপিদো থেকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে করে রওয়ানা দিয়ে রোববার মস্কোতে পৌঁছান তিনি। গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেতা অং সান সু চির কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করে মিন অং হ্লাইং। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পর এটি তার দ্বিতীয় প্রকাশ্য বিদেশ সফর।
Advertisement
এর আগে গত ২৪ এপ্রিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক জোট আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দিতে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় গিয়েছিলেন মিন অং হ্লাইং। মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান ছাড়াও সে সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আসিয়ানভুক্ত ১০টি দেশের প্রতিনিধিরা। সেসময় তারা মিয়ানমারের বর্তমান সংকট নিয়ে আলোচনা করেছিলেন।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুয়ের আমন্ত্রণে দেশটিতে পৌঁছান মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান। আগামী মঙ্গলবার থেকে মস্কোতে শুরু হবে তিন দিনের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাবিষয়ক সম্মেলনে। সে সম্মেলনে অংশ নিয়ে নিজ দেশ মিয়ানমারের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন মিন অং হ্লাইং। আগামী ২২ জুন থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত চলবে এ সম্মেলন।
অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পর থেকেই মানবাধিকার সংস্থা ও পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনার মুখে রয়েছে জান্তা সরকার। ১ ফেব্রুয়ারির এ ক্যু’র পর থেকে দেশটিতে গণতন্ত্রকামীদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে সেনা প্রশাসন। যাতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ৮৭১ জন। আটক রাখা হয়েছে ছয় হাজারের বেশি আন্দোলনকারীকে।
Advertisement
এমন পরিস্থিতিতে গত ১৮ জুন মিয়ানমারের ওপর অস্ত্রনিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। দেশটির জান্তা সরকারের প্রতি একটি নিন্দাপ্রস্তাবও গৃহীত হয়েছে সেখানে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মিয়ানমারের ওপর অস্ত্রনিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছে ১১৯টি দেশ। স্বৈরশাসিত বেলারুশই একমাত্র এর বিপক্ষে মত দেয়। আর চীন-রাশিয়াসহ মোট ৩৬টি দেশ প্রস্তাবে মতামত দেয়া থেকে বিরত থাকে। ঠিক তার কিছুদিন পরই রাশিয়া সফরে যাচ্ছে জান্তাপ্রধান।
এদিকে এক টুইট বার্তায় জান্তাপ্রধানের এমন রাষ্ট্রীয় সফর ও রাশিয়ার আমন্ত্রণের সমালোচনা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে সবথেকে বেশি অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে চীন ও রাশিয়া। ১৯৯৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত শুধু রাশিয়ার কাছ থেকেই দেড়শো কোটি ডলারের বেশি সেনা সরঞ্জাম কিনেছে মিয়ানমার।
সূত্র: দ্য ডিপ্লোম্যাট
এএমকে/এএসএম
Advertisement