যশোরে নমুনা পরীক্ষায় রেকর্ড সংখ্যক তিন শতাধিক ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩০৫ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত করা হয়। শনাক্তের হার ৪৭ শতাংশ।
Advertisement
একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে দুজন এবং উপসর্গ নিয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এরা সবাই যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন এতথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, যশোরে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৪৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩০৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে, একদিনের হিসেবে এটি সর্বোচ্চ সংখ্যক।
Advertisement
যশোর জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে নতুন করে ৫১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালের করোনা রেড ও ইয়েলো জোনে ৯৯ শয্যার বিপরীতে ১২২ জন ভর্তি রয়েছেন। এরমধ্যে ৮০ শয্যার করোনা ইউনিটে (রেড) ৮৭ জন ও ১৯ শয্যার আইসোলেশন (ইয়েলো) ওয়ার্ডে ৩৫ জন ভর্তি রয়েছেন। বর্তমানে হাসপাতালে কোনো শয্যা খালি নেই। তিন শয্যার আইসিইউ ইউনিটও রোগীতে পূর্ণ।
যশোর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘প্রতিদিনই হাসপাতালে করোনা রোগীর চাপ বাড়ছে। শয্যার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি করতে হচ্ছে। রোগীর চাপ সামাল দিতে আরও ৫০ শয্যার দুটি করোনা ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হচ্ছে। এরমধ্যে ২৫ শয্যার একটি ওয়ার্ডের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। সেখানে সংকটাপন্ন রোগীদের স্থানান্তর করা হবে।’
তিনি আরও জানান, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সাজেদা ফাউন্ডেশনের অর্থায়ন ও অবকাঠামোগত সুবিধা নিয়ে এ হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানো হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি করোনা চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, যশোরে দিনে দিনে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে করোনা পরিস্থিতি। শনাক্তের এ ঊর্ধ্বগতি রুখতে কঠোর বিধি-নিষেধ কার্যকরে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। তবে পরিস্থিতি ভয়াবহ হলেও সাধারণ মানুষের মাঝে এখনো বিধি-নিষেধ প্রতিপালনে গাফিলতি লক্ষ্য করা গেছে।
Advertisement
যশোর পৌর এলাকা ও আশপাশের চারটি ইউনিয়নে চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও সাধারণ মানুষের মাঝে তা উপেক্ষার প্রবণতা রয়েছে।
জেলায় করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ৯ জুন মধ্যরাত থেকে যশোর ও নওয়াপাড়া পৌরসভায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। ১৬ জুন মধ্যরাতে এই বিধিনিষেধ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ২৩ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বিধিনিষেধের সময়সীমা ও পরিধি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামান জানান, করোনা শনাক্তের এ ঊর্ধ্বগতি রুখতে লকডাউন কার্যকরে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। সেইসঙ্গে রোগীর চাপ সামাল দিতে নতুন ওয়ার্ড খোলার পাশাপাশি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসা কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে। জেলার পাঁচ পৌরসভা ও ৯ ইউনিয়নে লকডাউন বলবৎ রয়েছে।
জেলায় এখন পর্যন্ত মোট ১১২ জন করোনায় মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৭৮২ জন। এরমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ছয় হাজার ১৪৭ জন।
মিলন রহমান/এসআর/এমএস