নরসিংদীতে ট্রাক-মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৯ জন। এদের মধ্যে আহত দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
Advertisement
শনিবার (১৯ জুন) দিবাগত রাত ১২টায় পাঁচদোনা-ঘোড়াশাল-টঙ্গী সড়কের নরসিংদী সাকুরার মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এনামুল হক সাগর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নিহতরা হলেন, সাভারের আশুলিয়ার ঝিরাবো এলাকার আব্দুর রশিদের স্ত্রী রুবি আক্তার (৩৩), তার মেয়ে রাইমা খান (৫), শাশুড়ি রোকেয়া আক্তার (৫২), রুবি আক্তারের ভাসুরের স্ত্রী মুক্তি আক্তার (৩০) ও তার ছেলে সাদিকুল (৮)।
Advertisement
আহতরা হলেন, রাজিয়া (৪০), ইউসুফ মিয়ার ছেলে রশিদ (৪০), জাহের আলীর ছেলে কাজিম উদ্দিন (৪২), সাইফুল ইসলামের মেয়ে সাইফা (১২), হারুন মিয়ার স্ত্রী শারমীন (৪০) ও মেয়ে ইসরাত জাহান (৮), কাদির মিয়ার স্ত্রী সামসুননাহার (৬০) এবং দুজনের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি।
পুলিশ জানায়, শনিবার সকালে একটি মাইক্রোবাসে করে আব্দুর রশিদ ও তার পরিবারের ১৪ সদস্য আশুলিয়ার জিরাবো এলাকা থেকে সিলেটে মাজার জিয়ারত করতে যান। জিয়ারত শেষে জাফলং বেড়াতে যান তারা। সেখান থেকে আশুলিয়ায় বাড়ি ফিরছিলেন।
পথে মাইক্রোবাসটি পাঁচদোনা-ঘোড়াশাল-টঙ্গী সড়কের নরসিংদী সাকুরা মোড়ে পৌঁছালে একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে রুবি আক্তার ও তার মেয়ে রাইমা মারা যান। এসময় মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে।
পরে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা আহতদের সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নেয়ার পথে সাদিকুল (৮) মারা যায়। পরে গুরুতর অবস্থায় চারজনকে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। নেয়ার পথে রোকেয়া আক্তার ও মুক্তি আক্তার মারা যান।
Advertisement
এদিকে দুর্ঘটনার পরপরই পাঁচদোনা-ঘোড়াশাল-টঙ্গী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহনগুলোকে রাস্তা থেকে সরিয়ে নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
আহত যাত্রী আব্দুর রশিদ বলেন, ‘সিলেটে মাজার জিয়ারত শেষে জাফলং-এ যাই। সেখান থেকে আশুলিয়া ফেরার পথে একটি ট্রাক মাইক্রোবাসের ওপর উঠে যায়। এরপর দেখি আমার স্ত্রী ও মেয়েসহ পরিবারের সদস্যরা রাস্তায় পড়ে আছে।’
প্রত্যক্ষদশী নান্নু মিয়া বলেন, ‘মাইক্রোবাসটি যাচ্ছিলো সামনে দিয়ে। হঠাৎ বিকট শব্দ হয়। এরপর দেখি মাইক্রোবাসটি ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। রাস্তার ওপর নারী ও শিশুরা পড়ে আছে। দৌড়ে গিয়ে তাদের উদ্ধার করি ও একটা পিকআপ থামিয়ে তাদের হাসপাতালে পাঠাই।’
জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আসাদ বলেন, ‘গুরুতর অবস্থায় চারজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’
মিডিয়া সমন্বয়ক নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এনামুল হক সাগর বলেন, ‘দুর্ঘটনায় পাঁচজন মারা গেছেন। আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘাতক ট্রাকটিকে জব্দ করা হয়েছে।’
সঞ্জিত সাহা/এসএমএম/এমএস