সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনার সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। ফলে অনেক এলাকায় চলছে লকডাউন ও বিধিনিষেধ। কিন্তু মৌসুমি ফল আমসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে এসব জেলা থেকে প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্তে যাচ্ছে পণ্যবাহী যান। এসব যানবাহনের চালক ও তাদের সহযোগীরা রয়েছেন সংক্রমণ ঝুঁকিতে। এদের মধ্যে নেই কোনো স্বাস্থ্য সচেতনতা।
Advertisement
এ অবস্থায় ট্রাক শ্রমিকদের মাধ্যমে করোনা যেন ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও আরিচাঘাটে সরকারিভাবে করোনা পরীক্ষার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দুই ঘাটে দুটি বুথের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে নমুনা।
আগামীকাল রোববার (২০ জুন) দুপুর থেকে শুরু হবে এ করোনার পরীক্ষা কাযর্ক্রম। পুলিশ প্রশাসন, বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএর সমন্বয়ে এ পরীক্ষা কাযর্ক্রম চলবে।
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম আবু দারদা জানান, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজীরহাট ঘাট দিয়ে ফেরিতে প্রতিদিন সীমান্তবর্তী বিভিন্ন জেলার শত শত ট্রাক পার হয়। বিশেষ করে রাজশাহী, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকা থেকে ট্রাকে আম নিয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে। এসব ট্রাকের চালক ও তাদের সহযোগীরা ওই এলাকায় অবস্থান করার কারণে করোনা ছড়ানোর একটি সম্ভাবনা রয়ে যায়। তাই এ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
Advertisement
মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ জাগো নিউজকে জানান, জেলা করোনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পাটুরিয়া ও আরিচাঘাটে এ করোনা পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। সীমান্ত এলাকার ট্রাক শ্রমিকরা যাতে ঘোরাফেরা করে এলাকায় সংক্রমণ আরও বাড়াতে না পারেন বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট যেন ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য ট্রাক শ্রমিকদের করোনা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মাত্র আধাঘণ্টার মধ্যেই এ পরীক্ষার ফল পাওয়া যাবে। কারো করোনা পজিটিভ হলে তাকে আইসোলেশনে নেয়া ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। আর কারো রিপোর্ট নেগেটিভ আসলে তারা গন্তব্যে চলে যেতে পারবে।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফেরি পার হয়ে আসা ট্রাক চালকদের থামিয়ে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা কষ্টসাধ্য হবে। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর একেকটি যানবাহনকে ফেরি পার হতে হয়। পার হওয়ার পর কোন যানবাহন কত দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাবে চলে তার প্রতিযোগিতা। এমতাবস্থায় চলন্ত গাড়ি থামিয়ে করোনা পরীক্ষায় বাধ্য করতে লোকবলের প্রয়োজন হবে। ফেরি পার হওয়ার আগে এ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হলে বেশি কার্যকর হতো বলে মনে করছেন অনেকে।
এছাড়া দেশের গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজীরহাট রুটে রাত দিন ২৪ ঘণ্টাই যানবাহন পারাপার হয়। তাই ২৪ ঘণ্টাই নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা না করা হলে এ কাযর্ক্রমের সুফল মিলবে না বলেও জানান তারা।
Advertisement
সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বলেন, ‘কাজটি বাস্তবায়নে নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এরপরও কয়েকটি দফতরের সমন্বয়ে এটি বাস্তবায়ন করা হবে। যখন যেখানে যা করা প্রয়োজন সে অনুযায়ী দফতরগুলো কাজ করবে।’
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই এ কাযর্ক্রমের সফলতা আনা হবে বলে জানান তিনি।
বি এম খোরশেদ/এসএমএম/এমএস