রাজনীতি

শত্রুদের নয়, ভয় নিরপেক্ষদের

স্ব্যাস্থমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াত আপাত দৃষ্টিতে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে পরাজিত হয়ে। কিন্তু মনে রাখবেন গল্প এখানে শেষ নয়, গল্প আরো আছে। তারা আমাদের অর্জনগুলোকে ধ্বংস করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীশক্তিকে হাতে নিয়ে এবং আমাদের ১৪ দলের মধ্যের নিরপেক্ষ লোক। এ নিরপেক্ষ লোকদের সাথে নিয়ে তারা আবার তৎপর হয়ে সহিংস ঘটনা ঘটাতে পারে। কিন্তু শত্রুরা আমাদের ভয়ের কারণ নয়; আমাদের ভয় এ নিরপেক্ষদের নিয়ে। যারা এদিকও খাবে ঐদিকও খাবে। আমি বিশ্বাস করি আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি তারা এক থাকলে এরা সুবিধা করতে পারবে না। আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে লড়াই চালিয়ে যাবো।’রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) গেমস রুমে আয়োজিত এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গণতান্ত্রিক পার্টির সাবেক সভাপতি নূরুল ইসলাম এবং তার সন্তান ইসলাম তমোহর সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকীতে এ স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। এমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, লেখক ও কথা সাহিত্যিক জাফর ইকবাল, নূরুল ইসলামের স্ত্রী কবি রুবি রহমান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সৈয়দ মুনজুরে এলাহী, কবি অসীম সাহা, গণতান্ত্রিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহদাত হোসেন প্রমুখ।মন্ত্রী বলেন, ‘একজন শ্রমিক নেতা হিসেবে শুধু নয়, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেও তিনি এ দেশের মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন। তার হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে।’ এসময় তিনি নূরুল ইসলামের স্ত্রীকে বিচারের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘আমরা শিগগিরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, রাশেদ খান মেনন এবং আপনাকে নিয়ে বসবো। আমরা এ বিষয়টি নিয়ে সেখানে আলোচনা করবো। সে আশ্বাস আজ আমি আপনাকে দিয়ে যাচ্ছি।’তিনি আরো বলেন, ‘এক সময় তো এমন ছিল যে, আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর, জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর আমরা তো দাঁড়িয়ে বিচারও চাইতে পারিনি। কিন্তু সে সংস্কৃতি থেকে এখন আমরা বেরিয়ে আসতে পেরেছি। আমরা এখন শুধু বিচার চাইতে পারা না, বিচার কার্যকরের সংস্কৃতিতে ফিরে এসেছি। এটি সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার সাহসিকতার কারণে। তার দৃঢ় নেতৃত্বের কারণে আমরা খুনিদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পেরেছি। আবার অনেকের দণ্ড কার্যকর হয়েছে শেখ হাসিনার সাহসী ও আপোষহীনতার কারণে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি এগিয়ে যাচ্ছে। আজ আমরা যা চাচ্ছি তা পাচ্ছি। আমাদেরকে আমাদের অর্জনসমূহ ধরে রাখতে হবে। আমরা যেন তা হারিয়ে না ফেলি।’ বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘এটা দুঃখের বিষয় যে গত সাত বছর যাবৎ আমরা একটা কথা বার বার বলছি। যে নূরুল ইসলামের বিচার চাই। কিন্তু তার কোন সুরাহা হচ্ছে না। এটা খুব দুঃখের বিষয়।’তিনি বলেন, ‘২১ আগস্টের গ্রেনড হামলা, ৭৫ এর বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, শাহ এস এম কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের ধরণ দেখেছি। আমরা মনে হয় নূরুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডেরও ধরণ একই। তিনি আরো বলেন, ‘গত আমলে সংসদে আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ এ হত্যাকাণ্ডের বিচার করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি পারেন নি। আমার মনে হয় আমরা পুরোপুরি রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে পারিনি। যার কারণে এ বিচার হয় না।’তিনি বলেন, ‘আমাদের ক্ষোভ থাকবে। আমরা চাইবো এ হত্যার বিচার হবে। আমাদের নতুন প্রজন্ম তার আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে মেহনতী মানুষের পাশে দাঁড়াবে এটাই আমার প্রত্যাশা।’লেখক ও সাহিত্যিক জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর বলি হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। কিন্তু নূরুল ইসলাম সম্পর্কে বলতে পারিনা। প্রতি বছর আমরা শুধু হত্যাকারীদের সম্পর্কেই বলছি। আমরা এ হত্যার বিচার না চেয়ে যে তার সম্পর্কে বলবো সে সুযোগ এখনো আমাদের হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের সরকার চাইলেইতো হত্যাকারীদের ধরতে পারে। কারণ আমাদের দেশের সরকার ইতোপূর্বে যে সব হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চেয়েছে তা পেরেছে। কিন্তু এখানে তা ভিন্ন কেন? কেন নূরুল ইসলামের হত্যাকারীদের বিচার হচ্ছে না। সে বিষয়ে এখন চিন্তা করতে হবে।’এমএইচ/এসএইচএস/আরআইপি

Advertisement