আন্তর্জাতিক

ফেলে দিতে হলো ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত মুম্বাইয়ের তিন শিশুর চোখ

ভারতের মুম্বাই শহরে তিনটি শিশু ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নামে পরিচিত মিউকরমাইকোসিস রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তাদের প্রত্যেকের একটি করে চোখ অপসারণ করা হয়েছে। শিশুদেরও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা আশঙ্কাজনক বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। সাধারণত ডায়াবেটিস রোগী অথবা করোনা থেকে সুস্থ হওয়া ব্যক্তিরাই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।

Advertisement

চিকিৎসকরা জানান, আক্রান্ত শিশু তিনটির বয়স ৪, ৫ ও ১৪ বছর। মুম্বাইয়ের দুটি হাসপাতালে তাদের অপারেশন করা হয়। প্রথম দুটি শিশুর ডায়াবেটিস নেই, তবে ১৪ বছরের শিশুটির ডায়াবেটিস আছে। ১৬ বছর বয়সী আরেকটি শিশু করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছে। তার পাকস্থলির কিছু অংশে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ধরা পড়েছে।

মুম্বাইয়ের ফোর্টিস হাসপাতালের সিনিয়র শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. জেসাল শেঠ বলেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে দুটি কন্যা শিশুকে আমরা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হতে দেখেছি। দুজনেরই ডায়াবেটিস রয়েছে। সে (১৪ বছর বয়সী শিশু) আমাদের কাছে আসার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তার চোখ কালো হয়ে যায়। তার নাকেও ফাঙ্গাস ছড়িয়েছে। সৌভাগ্যবশত, ফাঙ্গাস তার মস্তিস্কে পৌঁছায়নি। তাকে আমরা ছয় সপ্তাহ ধরে চিকিৎসা দেই। দুঃখজনকভাবে, সে তার চোখ হারিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৬ বছর বয়সী শিশুটি এক মাস আগে সুস্থ ছিল। সে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়েছে। তার ডায়াবেটিসও ছিল না। কিন্তু হঠাৎ সে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে আমাদের কাছে আসে। তার অন্ত্রে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। আমরা এনজিওগ্রাফি করাই এবং দেখি যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস তার পাকস্থলির কাছের রক্তনালীগুলোকে আক্রান্ত করেছে।’

Advertisement

অন্য দুটি শিশুর ডায়াবেটিস ছিল না। তবে দুজনেরই আগে করোনা হয়েছিল। তাদেরকে মুম্বাইয়ের কেবিএইচ বাচুয়ালি অফথালমিক অ্যান্ড ইএনটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ওই হাসপাতালের চিকিৎসক প্রিথেশ শেঠি বলেন, ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ওদের চোখে ছড়িয়ে পড়েছিল, আমরা যদি চোখ ফেলে না দিতাম তাহলে ওদের জীবন বিপন্ন হয়ে উঠতে পারত। ওদের একটি চোখ ইতোমধ্যেই অন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং এতে ওদের অনেক ব্যথা হচ্ছিল। এদের মধ্যে একজন গত ডিসেম্বরে আমাদের কাছে আসে, আরেকজন আসে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়।’

ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হলে তা দ্রুত শনাক্ত হওয়া প্রয়োজন কারণ এটি অতি দ্রুত শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। ফাঙ্গাসে আক্রান্ত মৃত টিস্যু অপসারণ করতে হয়। মস্তিস্কে যাতে না ছড়ায় এজন্য চিকিৎসকরা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত বিভিন্ন রোগীর নাক, চোখ এমনকি চোয়াল অপসারণ করেছেন।

সূত্র : এনডিটিভি

Advertisement

এমকে/জেআইএম