খেলাধুলা

নেতৃত্বের সঙ্গে বদলে গেলো সিলেটও

এবারের বিপিএলে সবচেয়ে দুর্ভাগা দল ভাবা হচ্ছিল তাদের। প্রথম দুই ম্যাচে মাত্র ১ রানের ব্যবধানে পরাজয়কে দুর্ভাগ্য না বলে কী আর উপায় আছে! তৃতীয় ম্যাচেও হার মাত্র ৬ রানে। এভাবে হারতে হারতে ঢাকায় প্রথম পর্বের চার ম্যাচের কোনটাতেই আর জয় পেলো না মুশফিকুর রহিমের দলের।ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় চট্টগ্রাম গিয়ে প্রথম সাফল্য আসে সিলেট সুপাার স্টারসের। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সর বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৪ উইকেটে প্রথম জয়ের স্বাদ পায় তারা। পরের ম্যাচে চিটাগাং ভাইকিংসের বিপক্ষে আফ্রিদি খেলতে নামেন সিলেটের হয়ে। ২২ রানে চার উইকেট পড়ে যাওয়ার পর সিলেটের হাল ধরেন আফ্রিদি। ৪১ বলে ৬২ রান করার পর সিলেটের আরও একটি জয় প্রত্যাশা করেছিল সবাই। কিন্তু চট্টগ্রামের দুই ওপেনারই হারিয়ে দেয় মুশফিকুর রহিমের দলকে।ঢাকায় আসার পর দলকে কিভাবে কাংখিত লক্ষ্যে ফিরিয়ে আনা যায়, এ নিয়ে ব্যাপক বিচার-বিশ্লেষণ চালালো সিলেটের টিম ম্যানেজমেন্ট। শেষ পর্যন্তু মুশফিকের অনুরোধেই পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক শহিদ আফ্রিদির কাঁধে তুলে দেওয়া হয় সিলেটের নেতৃত্ব। সিদ্ধান্তটা আগেই নেয়া হয়েছিল। তবে রাখা হয়েছিল গোপন। ঠিক ম্যাচের আগ মুহূর্তে যখন টস হচ্ছিল, তখনই প্রতিপক্ষ বরিশাল জানলো তাদের আসল প্রতিপক্ষ তো সিলেট সুপাার স্টারস নয়, আফ্রিদি। কারণ, অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার শুধু ম্যাচের পারফরম্যান্স নয়, নেতৃত্ব দিয়েই বদলে দিতে পারেন অনেক কিছু। তারওপর তিনি নিজেও এখন টি২০ স্পেশালিস্ট।বরিশাল বুলসের যা পরিকল্পনা, সম্ভবত আফ্রিদিকে অধিনায়ক দেখে তাতে পরিবর্তণ করতে হয়েছিল, কিংবা নতুন পরিকল্পনা করার কোন সুযোগই পাননি তারা। ফল যা হওয়ার তা মাঠের পারফরম্যান্সেই বোঝা গেলো। নেতার পরিবর্তণে কিভাবে ভাগ্যও পরিবর্তণ হয়ে যায় তার জল-জ্যান্ত উদাহর তো দেখা গেলো এই ম্যাচই।গেইল আর এভিন লুইস নেমেছিলেন বরিশালের ইনিংস ওপেন করতে। এ মুহূর্তে বিশ্বে না হোক, বিপিএলে তো সবচেয়ে বিধ্বংসী জুটি বলা চলে এটিকে। লুইস করেছিলেন সেঞ্চুরি। আর গেইল তো সাক্ষাৎ দানব। সুতরাং, সিলেটের বোলাররা উড়ে যাওয়ার কথা তাদের সামনে; কিন্তু ঘটলো উল্টোটা। তৃতীয় ওভারেই পাকিস্তানি সোহেল তানভিরের  বলে লুইসের আউট দিয়ে শুরু। এরপর একটিমাত্র ছক্কা মেরে আউট হয়ে গেলেন গেইলও। বিপজ্জনক জুটির বিদায়ের পর আশাবাদী হয়ে ওঠে সিলেট। এরপর বাকিটা তো ইতিহাস। সিলেটের বোলাররা যেন এদিন সাক্ষাৎ যম হয়ে আবির্ভূত হলেন বরিশাল বুলসের ব্যাটসম্যানদের সামনে। ফল, মাত্র ৫৮ রানেই অলআউট হয়ে গেলো বরিশাল। জবাবে এক উইকেট হারিয়ে মাত্র ১১.২ ওভারেই জয়ের বন্দরে নোঙ্গর ফেললো সিলেট। এলো দ্বিতীয় জয়।নেতা পরিবর্তণে ভাগ্যটাও পরিবর্তণ হয়ে গেলো। ম্যাচ শেষে সিলেটের কোচ সারওয়ার ইমরান জানালেন, টিম ম্যানেজমেন্টও চিন্তা করছিল, কিছু একটা বদল করা প্রয়োজন। মুশফিক নিজেই এগিয়ে এলেন। বললেন, নেতৃত্বটা আফ্রিদিকে দেওয়া হোক। আমরা তাকে সহযোগিতা করবো।’সিদ্ধান্তটা যে যুগপোযোগি ছিল, তা তো একটা ম্যাচই দেখিয়ে দিলো। বাকি চারটি ম্যাচেও এ ভাগ্যকে টেনে নিতে পারবে কি না সিলেট সেটাই দেখার বিষয় এখন। কোচ সারওয়ার ইমরান যেমনটা বললেন, ‘বাকি ম্যাচগুলোও আমাদের জন্য নকআউট। শেষ চারে যেতে হলে, আমাদেরকে সবগুলোতেই জিততে হবে।’আইএইচএস/আরআইপি

Advertisement