১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী প্রথম আঘাত হেনেছিল ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে। রাজারবাগের পুলিশই স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম বুলেটটি চালিয়েছিল। সেসময় পুলিশের কনস্টেবল, নায়েক, এসআইসহ নিহত হয়েছিলেন কমপক্ষে ৪৩ জন। ১৯৭১ থেকে এ পর্যন্ত তারা রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো সম্মাননা না পেলেও অবশেষে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধযোদ্ধাদের সম্মাননা দিলো বাংলাদেশ পুলিশ। রোববার দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের অডিটোরিয়ামে তাদের এই সম্মাননা দেয়া হয়। স্বাধীনতার যুদ্ধে সময় তাদের এই অবদানের কারণে একটি সনদ, নগদ টাকা দেয়া হয়েছে মোট ৪৩ পুলিশ মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের। এদের মধ্যে জীবিত ২৩ জন পুলিশ সদস্য সশরীরে উপস্থিত হয়ে সম্মাননা গ্রহণ করেন। বাকিদের পরিবারের সদস্যরা সনদ গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ পুলিশ ও পুলিশের মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর যৌথভাবে আয়োজন করে। এসময় উপস্থিত মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে অনেক পুলিশ সদস্য গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছেন। পুলিশের এই অবদানে আমরা গর্বিত। পুলিশ মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদদের পরিবারের ভাতার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, রাজারবাগের পাশাপাশি ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ রাতে রাজধানীর তেজগাঁও থানার দুই কনস্টেবল মিলিটারিদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল। স্বাধীনতাযুদ্ধে পুলিশের অবদান অনেক। আমরা কোনোদিন পুলিশের এই অবদান ভুলবো না। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া পুলিশ সদস্যদের সঠিক মূল্যায়ন হয়নি উল্লেখ করে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজি) এ কে এম শহীদুল হক বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে যে রাজারবাগের গৌরবগাথা ইতিহাস অনেকের জানা নাই। যুদ্ধে অবদান রেখেও পুলিশ বীরশ্রেষ্ঠর মতো কোন খেতাব পায়নি, রাষ্ট্রীয় পুরস্কার-সম্মাননাও পায়নি। তবে ২০০৯ সালে প্রথমবারের মতো মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ সদস্যদের খুঁজে বের করে সম্মাননা দেয়া হয়। আমাদের সবার উচিৎ মুক্তিযুদ্ধের এই চেতনাকে জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে জাগিয়ে তোলা। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য পুলিশের অতিরিক্ত আইজি মো. মোখলেসুর রহমান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মাহফুজুর রহমান নুরুজ্জামান, ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হাসান ইমাম প্রমুখ। এআর/এসএইচএস/আরআইপি
Advertisement