আইন-আদালত

জীবনে একটা সিগারেটও খাইনি, এমনকি একটা টানও দেইনি : তথ্যমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আমি জীবনে একটা সিগারেটও খাইনি, এমনকি একটা টানও দেইনি। আজকে বাংলাদেশে ধূমপানের বিরুদ্ধে সামাজিক ক্যাম্পেইন ও সরকারের আইন প্রণয়নের কারণে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ধূমপায়ীর মোট সংখ্যা বেশি না কমলেও আনুপাতিক হার অনেক কমেছে।’

Advertisement

বুধবার (১৬ জুন) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করা সংগঠন ভয়েজ আয়োজিত ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জনসংখ্যার মাত্র ৩৫ শতাংশ ধূমপানের সঙ্গে যুক্ত। এটা এক সময় ৭০ শতাংশের ওপরে ছিল। এটা খুব ভালো দিক। সরকারও এ বিষয়ে আইন করার ফলে আগের মতো প্রকাশ্য স্থানে ধূমপান হয় না। বিমানে, বাসে ও অনেক অফিসেও যেকোনো জায়গায় ধূমপান নিষিদ্ধ।’

সাংবাদিক ফোরামগুলো এরকম সামাজিক জনসচেতনতা তৈরিতে এগিয়ে এলে সমাজ উপকৃত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০৪০ সাল নাগাদ দেশকে ধূমপানমুক্ত করার জন্য তামাকবিরোধী আন্দোলনকে আরও বেগবান করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে যদি আইনের সংস্কার প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রেও আমাদের চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। সুস্থ জাতি গড়ে তুলতে ধূমপান এবং মাদকমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। কারণ, একজন ধূমপায়ী যেমন তিলে তিলে নিজেকে ধ্বংস করে, একজন মাদকাসক্ত পুরো পরিবারকে ধ্বংস করে। সুতরাং এই ক্যাম্পেইনকে আরও জোরদার করা প্রয়োজন।’

Advertisement

তিনি আরও বলেন, ‘এখনকার আধুনিক আসক্তি হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আসক্তি। আমরা যারা রাজনীতি করি, তাদের সঙ্গে সবাই ছবি তুলতে চাই, ছবির উদ্দেশ্য হচ্ছে, এটা ফেসবুকে দেবে। আমি মনে করি, এসব বিষয় নিয়েও ক্যাম্পেইন হওয়া প্রয়োজন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু দায়িত্বশীল বা যারা ক্ষমতায় আছে তাদের সমালোচনা নয়, সমালোচনা সবার ক্ষেত্রেই হতে হবে। আজকে বিত্ত যখন রাষ্ট্রকে চোখ রাঙায় বা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায়, সে বিত্ত তখন দুর্বৃত্ত হয়ে যায়। এর বিরুদ্ধেও লিখতে হবে। এভাবেই রাষ্ট্র ও সমাজের অসংগতি তুলে ধরতে হবে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দায়িত্বে থাকলে ভুল হবে। সে ভুলের সমালোচনাও হতে হবে। কিন্তু একই সঙ্গে ভালো কাজেরও প্রশংসা হতে হয়। ভালো কাজের যদি প্রশংসা না হয় তাহলে মানুষ কাজ করার উৎসাহ হবে না; এটাও মাথায় রাখতে হবে।’

ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের প্রেসিডেন্ট মাশহুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক মহাসচিব ও সিনিয়র সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল, ডিআরইউ সভাপতি মোরসালিন নোমানী, সাধারণ সম্পাদক মো. মশিউর রহমান, ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইয়াসিন, তামাক নিয়ন্ত্রণ গবেষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক ড. সোহেল রেজা চৌধুরী, আহমেদ স্বপন মাহমুদ, জায়েদ সিদ্দিকী, হাসান শাহরিয়ার, আব্দুস সালাম মিয়া, আতাউর রহমান ও সাদিয়া রহমান প্রমুখ কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন।

Advertisement

এছাড়া আজ বিকেলে মুজিববর্ষ উপলক্ষে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু আশার আলো-বিমা দাবি পরিশোধের প্রয়াস’ অনুষ্ঠানে সচিবালয় থেকে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী।

এ সময় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিমা শিল্পের ভূমিকাকে অগ্রগণ্য বর্ণনা করে মন্ত্রী বলেন, ‘উন্নত দেশের মতো আমাদের দেশেও বিমা বিশেষ করে স্বাস্থ্যবিমার ব্যাপকতর প্রসার ঘটানো প্রয়োজন।’

বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন এবং আলোচক হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সদস্য, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের সভাপতি ও বিভিন্ন বিমা কোম্পানির প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

এফএইচ/এমএসএইচ/জিকেএস