করোনাভাইরাসের কারণে ঋণ পরিশোধ না করলেও তাকে খেলাপি করতে পারেনি ব্যাংক। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে চলতি বছরও ঋণ পরিশোধে শিথিলতা রয়েছে। তারপরও বাড়ছে মন্দ বা খেলাপি ঋণ। ঝুঁকিপূর্ণ এসব ঋণের বিপরীতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে ১১টি ব্যাংক।
Advertisement
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রয়োজনীয় প্রভিশন রাখতে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা, বেসিক, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক। বেসরকারি খাতের বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক। এ ছাড়া বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক।
মার্চ মাস শেষে এই ১১টি বাণিজ্যিক ব্যাংক প্রভিশন সংরক্ষণ বা নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতিতে পড়েছে। এ ঘাটতির পরিমাণ ১২ হাজার ৬৪৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতে নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতির পরিমাণ ৫ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। কোনো কোনো ব্যাংক প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত অর্থনিরাপত্তা সঞ্চিতি হিসেবে রেখে দেয়ায় সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতে ঘাটতির পরিমাণ কিছুটা কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তৈরি করা মার্চ (২০২১) প্রান্তিকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
Advertisement
আলোচ্য সময়ে যে ১১ ব্যাংক প্রভিশন ঘাটতিতে তার মধ্যে সরকারি চার ব্যাংকের ঘাটতি ১০ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘাটতি জনতা ব্যাংকের। মার্চ শেষে জনতা ব্যাংকের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২৫৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এর পরই বেসিক ব্যাংকের ৩ হাজার ৫৬৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, অগ্রণী ব্যাংকের ১ হাজার ৩৫৬ কোটি ৪৭ লাখ এবং রূপালী ব্যাংকের ৭৮৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
বেসরকারি খাতের ছয় ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি এক হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভিশন ঘাটতি বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের। মার্চ মাস শেষে ব্যাংকটির ঘাটতি ৫৫৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
এ ছাড়া ঢাকা ব্যাংকের ২৪৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ১৯৫ কোটি ৪৯ লাখ, ন্যাশনাল ব্যাংকের ৩৩৮ কোটি ১২ লাখ, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৭৩ কোটি এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ১৫৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা। বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ১৬৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ শেষে ব্যাংক খাতে প্রভিশন সংরক্ষণের প্রয়োজন ছিল ৬৮ হাজার ৬৫ কোটি টাকা। এর বিপরীতে সংরক্ষণ করা হয়েছে ৬২ হাজার ৮০৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। ফলে সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতে মোট নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ হাজার ২৫৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।
Advertisement
ইএআর/এএএইচ/এসএইচএস/এমএস