জাতীয়

মানবাধিকার লঙ্ঘনের সিংহভাগই আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর বিরুদ্ধে

এ পর্যন্ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের যতগুলো অভিযোগ এসেছে তার সিংহভাগই আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর বিরুদ্ধে বলে জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন : চাই প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিশ্রুতি’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।মিজানুর রহমান বলেন, মানবাধিকার রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব। মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীকে যখন রাষ্ট্র বিচারের আওতায় আনে না, তখন বুঝতে হবে সেই মানবাধিকার লঙ্ঘন রাষ্ট্রীয় মদদেই হয়ে থাকে।তিনি বলেন, একজন অপরাধীরও যে মানবাধিকার আছে এটা আমরা অনেকেই মানতে পারি না বা জানি না। পুলিশ ও মানবাধিকার কমিশন একে অপরের প্রতিপক্ষ নয়। একেক জনের প্রতিক্রিয়া একেক রকম হতে পারে।এ সময় মিজানুর রহমান প্রশ্ন রেখে বলেন, নির্দেশ দেওয়ার পরও তা যদি মেনে না চলা হয় তাহলে কি বলা যায় না- পুলিশের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে গেছে?তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করে খালি হাতে ফিরে যায় নি আমাদের কাছ থেকে। এখতিয়ার বর্হিভূত হলে আমরা পরামর্শ দিয়ে থাকি। এছাড়া আগের চেয়ে অনেক বেশি অভিযোগ আসছে আমাদের কাছে। তার মানে জনগণের কাছেও এই প্রতিষ্ঠানটি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।মানবাধিকার কমিশন শুধমাত্র সুপারিশমালা প্রণয়ন করে থাকে বলে উল্লেখ করে মিজানুর রহমান বলেন, আমরা সুপারিশমূলক প্রতিষ্ঠান। এর বাইরে তেমন কিছু করতে পারি না। তদন্তের বিষয়ে আইনের দুর্বলতা অনেকটা অন্তরায় হিসেবে কাজ করে।মিজানুর রহমান বলেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে শুধুমাত্র মানবাধিকার কমিশনই একমাত্র পথ- এটা ভাবা ঠিক নয়। সুশীল সমাজ, সাধারণ মানুষসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে রাষ্ট্রের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আসকের নির্বাহী পরিচালক ও মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল এতে সঞ্চালনা ও সভাপতিত্বের দায়িত্বে ছিলেন।সভাপতির বক্তব্যে সুলতানা কামাল বলেন, রাজনৈতিক কারণে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন পূর্ণ স্বাধীনতা পাচ্ছে না। সীমিত ক্ষমতা নিয়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার কমিশন যে কাজ করছে তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। মানুষ বিচার পায় না বলেই মানবাধিকার কমিশনের প্রতি প্রত্যাশা অনেক বেড়ে গেছে।অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন আসকের সিনিয়র প্রোগ্রাম অর্গাইনেজার আকলিমা ফেরদৌস লিসা। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মী, মানবাধিকারকর্মীসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এতে অংশগ্রহণ করেন।

Advertisement