প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে। এখান থেকেই প্রথম মহামারি রূপ নেয় করোনাভাইরাস। এরপর গত বছরের ২৩ জানুয়ারি প্রথম লকডাউনের আওতায় আনা হয় উহান শহরকে। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত বাইরের জগৎ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন রাখা হয় শহরটিকে। সে সময় এত কড়া বিধিনিষেধ আরোপে অবাক হয়েছিল পুরো বিশ্ব।
Advertisement
এখন আবারও বিশ্ববাসিকে অবাক করে দিয়ে যেন সবকিছু মহামারির আগের মতো স্বাভাবিক করে নিল উহানের বাসিন্দারা। গত রোববার উহানের সেন্ট্রাল চায়না নরমাল ইউনিভার্সিটিতে স্নাতক পর্যায়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে সমবেত হয়েছে ১১ হাজারের বেশি শিক্ষক-শিক্ষার্থী।
ওই অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা গাঢ় নীল রংয়ের গাউন পরে উপস্থিত হন। কিন্তু তারা কেউই করোনার প্রাথমিক সুরক্ষাবিধি মেনে চলেননি। একজনও মাস্ক পরে আসেননি। এমনকি মানা হয়নি কোনো ধরনের সামাজিক দূরত্বও।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই হাজার শিক্ষার্থীকে সম্মাননা দেয়া হয়েছে। করোনাবিধির কারণে ২০২০ সালে না হওয়া সমাবর্তন ছিল এটি। এসময় উপস্থিত অতিথিরা বিদায়ী শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করেন। গত বছর উহানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সব ধরনের ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছিল। প্রদেশটিতে নেয়া হয়েছিল সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা।
Advertisement
এদিকে চীনে এরই মধ্যে পৌঁছে গেছে ভারতীয় ধরন বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। সম্প্রতি দেশটির গুয়াংজুতে ৭৫ বছর বয়সী এক নারীর শরীরে এ ধরনটি শনাক্ত হয়েছে। এখনও চীনে করোনা পরিস্থিতি একবারে স্বাভাবিক হয়নি। কারণ মহামারি এখনও ছড়াচ্ছে বিশ্বের সর্বোচ্চ জনসংখ্যার দেশ চীনে। মঙ্গলবার দেশটির গুয়াংজুতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ২০ জন। চীনে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণে ৪ হাজার ৬৩৬ জনের প্রাণহানি হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই উহানের বাসিন্দা।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২২০টি দেশ ও অঞ্চলে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস তাণ্ডব চালাচ্ছে। কিন্তু করোনার উৎস কোথায় এবং কিভাবে এই ভাইরাস এলো সে বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়।
করোনা প্রথমবার উহানে শনাক্ত হলেও চীন বরাবরই বলে আসছে যে, করোনার মূল উৎস উহানে নয়। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এই মহামারি সম্ভবত চীন, স্পেন, ইতালি অথবা যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের কোনো দেশে শুরু হয়েছে। হিমায়িত খাদ্যের মাধ্যমে এটি চীনে প্রবেশ করেছে বলেও দাবি করা হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
সূত্র: এনডিটিভি
Advertisement
এএমকে/জেআইএম