প্রায় আড়াইশ বছরে আগে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের আমলে নির্মিত সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় চলছে প্রবল শ্রমিক সঙ্কট। কারখানাটিতে ২ হাজার ৮৩৩ জন শ্রমিক থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে কাজ করছেন মাত্র ৭৮০ জন। জরুরি প্রয়োজনে দৈনিক ৫০০ টাকা চুক্তিতে কাজ করেন ১৭০ জন শ্রমিক। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০১৮ সালের জনবল কাঠামো অনুযায়ী দ্রুত সময়ের মধ্যে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।
Advertisement
করোনাকালীন সময়ে সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কারখানাটিতে কাজ চলে। এদিকে, দেশের বৃহত্তম এই কারখানায় নেই গ্যাসের সংযোগ। বাধ্য হয়ে সিলিন্ডারের গ্যাস দিয়ে চলছে জরুরি মেরামতের কাজ।
চলতি বছর মে মাস পর্যন্ত কারখানাটি ৩৮০টি কোচ হস্তান্তর করেছে। চলতি মাসে আরও ২৪টি কোচ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
১৮৭০ সালে ব্রিটিশ সরকারের আমলে ১১০ একর জমির ওপর নির্মাণ করা হয় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা। বাংলাদেশের ৬টি রেলওয়ে কারখানার মধ্যে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা সবচেয়ে বড়। মিটার গেজ, ব্রড গেজ ট্রেনের মেরামত করা হয় এই কারখানায়। এখানে ব্রড গেজ ইঞ্জিন ও বগি নির্মাণ শুরু করা হয় ১৯৫৩ সালে। মেরামত ও নির্মাণকাজের জন্য এ কারখানায় ২০ থেকে ৫০ বছর বয়সী প্ল্যান্ট আছে ৭২৫টি। ইঞ্জিন, বগি, চাকা ওয়াগনসহ ৯৯৩ ধরনের কাজ করা হয় এই কারখানায়।
Advertisement
চলমান মহামারিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করছেন কারখানাটির শ্রমিকরা। লকডাউনে দেশের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও এ কারখানায় কাজ চলেছে পুরোদমে। কারখানাটির শ্রমিকরা সপ্তাহে একদিন (শুক্রবার) ছুটি কাটান।
শ্রমিকরা জানান, দ্রুত সময়ে জনবল নিয়োগ দিলে এ কারখানায় দ্বিগুণ কোচ মেরামত করা সম্ভব।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) জয়দুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন থেকে জটিলতার কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল। ১৯৮৫ সালের জনবল কাঠামোর কারণে দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ বন্ধ ছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে প্রণীত জনবল কাঠামোর মাধ্যমে দ্রুত সময়ে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নিয়োগ কার্যক্রম হবে বলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। জনবল সঙ্কটের কারণে এখন অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের দিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
Advertisement
জাহেদুল ইসলাম/এসএস/এএসএম