জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গেলে নির্বাচন বিনষ্ট হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপি। সোমবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা জানান।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কার্যাবলী ইতোপূর্বে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক পরিচালিত হয়েছে। কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরকারের অধীনে মন্ত্রণালয়।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কর্তৃত্ব হস্তান্তর করা হলে তা স্বাধীন নিরপেক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ন্যূনতম সম্ভাবনাটুকুও বিনষ্ট করবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে এই ধরনের সিদ্ধান্তহীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হলে তা ভবিষ্যতে গণতন্ত্রের ন্যূনতম পরিসরকেও ধ্বংস করবে এবং শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়াকে চিরতরে ধ্বংস করবে।
অবিলম্বে এরকম কার্য্ক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
Advertisement
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এক বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শিকড় আছে বলেই বিএনপি টিকে আছে। এত নির্যাতন, গুম-খুন, হাজার হাজার মামলার পরও বিএনপি টিকে আছে শুধু এই দলের ডিপ রুট (গভীর শিকড়), মানুষের হৃদয়ের অনেক গভীরে চলে গেছে বিএনপি।’
তিনি বলেন, ‘অনেক বেশি ঋণ নির্ভর হয়ে পড়ছে দেশের অর্থনীতি এবং এটা এখন শেষ সীমায় এসে পৌঁছে যাচ্ছে। অর্থনীতিতে গত ১ যুগ ধরে সরকারের ভ্রান্ত অর্থনৈতিক নীতির বাস্তবায়ন চলছে। যার প্রভাবে এক ধরনের মন্দাভাব চলছে, উৎপাদন খাত শ্লথ হয়ে পড়েছে। ফলে রাজস্ব আয় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারছে না। ভ্যাট, শুল্ক ও আয়কর সব ক্ষেত্রে আদায় কম। আয় কমে যাওয়ায় খুব স্বাভাবিকভাবেই খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। একগুচ্ছ বৃহৎ মেগা প্রকল্প, আছে দৈনন্দিন খরচ। বছরের পর বছর ধরে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করে ব্যয় অযৌক্তিকভাবে বাড়াচ্ছে সরকার। সবমিলিয়ে ব্যয় বেড়েই চলেছে।’
দেশের বিদ্যালয়ে কড় বড় গেট করার প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘বিভিন্ন স্কুলে বড় বড় গেট তৈরি করা হচ্ছে। এটা কোনো অগ্রাধিকার হতে পারে না। ওই টাকা দিয়ে যদি দুটি ক্লাসঘর করা যেত, তাহলে বাচ্চারা ভালোভাবে পড়তে পারতো।’
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি কোন মাত্রায় গেছে যে, পাবনার মতো জেলা শহরের একটা কোম্পানির কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা ঘুষ চাওয়া হয়েছে ভ্যাটের জন্য। ব্যবসায়ীদের একটা নীরব কান্না আছে। এভাবে তাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চলছে।’
Advertisement
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমার একজন পরিচিত ব্যবসায়ী তার কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ চাওয়া হয়েছে কাস্টমস ডিপার্টমেন্ট থেকে। তিনি বলছেন, এতো টাকা আমি কোথা থেকে দেব? দিতে পারবো না। যেহেতু তিনি ৫০ লাখ টাকা ঘুষ দিতে পারেননি, তাকে সেজন্য ১১ কোটি টাকার ইনকাম ট্যাক্স ধরিয়ে দিয়েছে। পরে তিনি আপিল-টাপিল করে সেটা কমিয়ে এনেছেন প্রায় এক কোটি টাকায়। ১১ কোটি আর ১ কোটি। এটা তো আমি একজনের কথা বললাম। সব জায়গায় এমন ঘটছে।’
কেএইচ/এমএসএইচ/এমকেএইচ