জাতীয়

তিন ‘নারী সঙ্গী’ নিয়ে উত্তরায় লুকিয়ে ছিলেন নাসির

চিত্রনায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

সোমবার (১৪ জুন) দুপুরে রাজধানীর উত্তরা-১ নম্বর সেক্টরের-১২ নম্বর রোডের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ

অভিযান শেষে ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন-অর-রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা (যেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে) পরীমনির কস্টিউম ডিজাইনার অমির বাসা। পরীমনির সংবাদ সম্মেলনের পর থেকে নাসির তার তিন রক্ষিতাকে নিয়ে এ বাসায় পালিয়ে ছিলেন। মাদক রাখার অভিযোগে সেই তিন নারীকেও আমরা গ্রেফতার করেছি।’

নাসির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নাসিরের বিরুদ্ধে আগেও মাদক এবং নারী নির্যাতনের মামলা হয়েছে। নানা অভিযোগে তাকে উত্তরা ক্লাব থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে বলে জেনেছি। কেউ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে আমরা সেগুলোর তদন্ত করব।’

Advertisement

পরীমনি ক্লাবের সদস্য না হয়ে সেখানে যাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে যুগ্ম কমিশনার বলেন, ‘সে (পরীমনি) স্বনামধন্য নায়িকা। সে ওখানে (বোট ক্লাব) যেতেই পারেন। সে গেলে যে তাকে ওখানে হ্যারেজ (হয়রানি) করবে সেটা ঠিক নয়। আসলে কী ঘটেছে তা বিস্তারিত তদন্ত করে বলতে পারব।’

পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এ ঘটনা নিয়ে রোববার রাতে সংবাদ সম্মেলন করেন পরীমনি। সংবাদ সম্মেলনের পরপরই আমরা অভিযানের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, তবে যেহেতু রাতে মামলা হয়নি তাই আমরা অ্যাকশনে যাইনি। সাভার থানায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর অভিযান চালিয়ে আমরা তাকে গ্রেফতার করি।’

নায়িকা পরিমনিকে হত্যাচেষ্টা ও ধর্ষণচেষ্টার মামলায় নাসিরকে সাভার থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। বর্তমানে মাদক উদ্ধারের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়েছেন বলে জানান হারুন।

এর আগে রোববার ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়ে অভিযোগ তোলার পর রাতে সাংবাদিকদের বনানীর বাসায় ডেকে ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরেন তিনি।

Advertisement

পরীমনির স্ট্যাটাস সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশ সদরদফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা জাগো নিউজকে বলেছিলেন, ‘তিনি অবশ্যই ন্যায়বিচার পাবেন। আমরা তার ন্যায়বিচারের জন্য কাজ করব। কেন তিনি আইজিপি স্যারের নাম উল্লেখ করেছেন তা আমি বুঝতে পারছি না। আমরা নিশ্চিত, তিনি মোটেই আইজিপি স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। আইজিপি স্যার সর্বদা নারী ও শিশুদের অধিকারের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল।’

এরপর রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার বনানীর বাসায় সাংবাদিকদের কাছে ‘নির্যাতনকারীদের’ নাম-পরিচয় প্রকাশ করেন পরীমনি।

সংবাদ সম্মেলনে পরীমনি বলেন, ‘গত বুধবার (৯ জুন) রাত ১২টায় আমাকে বিরুলিয়ায় নাসির ইউ. মাহমুদের কাছে নিয়ে যায় অমি। ওই সময় নাসির ইউ. মাহমুদ নিজেকে ঢাকা বোট ক্লাবের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন। সেখানে নাসির ইউ. মাহমুদ আমাকে মদ খেতে অফার করেন। আমি রাজি না হলে আমাকে জোর করে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে আমাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। তারপর আমাকে নির্যাতন ও হত্যার চেষ্টা করেন। অমিও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত।’

টিটি/এসএস/এএসএম