পেশায় একটি ওষুধ কোম্পানির এলাকা ব্যবস্থাপক ওমর সিদ্দিক (৩৩)। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে এসেছিলেন ছেলের চিকিৎসা করাতে। চিকিৎসা শেষে হাসপাতালেই অন্য এক সহকর্মীর সঙ্গে দেখা হয় তার। দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় রামেকে কর্তব্যরত এক আনসার সদস্যের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। ওই আনসার সদস্যের গায়ে হাত তোলার অভিযোগে তাকে আটক করে থানাহাজতে নেয় পুলিশ।
Advertisement
রোববার (১৩ জুন) সকালে হাসপাতালের বহির্বিভাগে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওমর সিদ্দিক ও তার দুই সহকর্মী সেলিম রেজা (৩৩) ও সোহেল রানাকে (৩০) আটক করে রাজপাড়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
রামেক কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা রোগীদের ওষুধপত্রের ছবি তুলছিলেন। ওষুধ কোম্পানির কর্মীদের ছবি তুলতে নিষেধ করায় তারা আনসার সদস্যদের গায়ে হাত তুলেছেন। তাই তাদের পুলিশে দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে থানাহাজতে থাকা ওমর সিদ্দিক গণমাধ্যমকে জানান, আনসার সদস্যরা খারাপ আচরণ করেন। প্রতিবাদ করায় তারা তাদের (ওষুধ কর্মীদের) গায়ে হাত তোলেন।
Advertisement
ওমর সিদ্দিকের বাড়ি চারঘাট উপজেলার বরকতপুর গ্রামে। অন্য দুজনের বাড়ি ডাকরা গ্রামে। ওমরের সন্তানের বয়স সাড়ে তিন বছর। অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে তাকে হাজতে নেয়ার সময় তার সন্তানকে এক স্বজনের মাধ্যমে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
আটক ওমর সিদ্দিক জানান, তার বাচ্চার কানে চর্মরোগের সমস্যা। সকালে বাচ্চাকে নিয়ে তিনি রামেক বহির্বিভাগের এক চিকিৎসককে দেখান। তার সহকর্মী সোহেল রানাও হাসপাতালের ৩৪ নম্বর কাউন্টারে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন। ছেলের চিকিৎসা শেষে তিনি সোহেল রানার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে আনসার সদস্যরা তাকে ওই দিকে যেতে বাধা দেন। এ নিয়ে তারা বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
তিনি আরও জানান, একপর্যায়ে একজন আনসার সদস্য তার গালে একটি চড় মারেন। তখন কোলে থাকা বাচ্চাটি মাটিতে পড়ে যায়। সহকর্মী সেলিম রেজা বাচ্চাটিকে মাটি থেকে টেনে তোলার পাশাপাশি চড় মারার প্রতিবাদ করলে তাকেও হেনস্তা করেন আনসার সদস্যরা। পরে তাদের হাসপাতালের পরিচালকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিচালক তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার পরামর্শ দেন।
রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এজাহার পেলে সে অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
Advertisement
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, ‘ওষুধ কোম্পানির কর্মীরা হাসপাতালে এসে রোগীর ব্যবস্থাপত্রের ছবি তুলে নেন। অনেক রোগীর গোপনীয় চিকিৎসার ব্যাপার থাকে। এভাবে ব্যবস্থাপত্রের ছবি তোলা ঠিক নয়। এজন্য আনসার সদস্যদের বিষয়টির দিকে নজর রাখার নির্দেশ দেয়া আছে। তারা তাদের দায়িত্ব পালন করছিল। এ নিয়েই ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাদের বাগবিতণ্ডা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আনসার সদস্যরা আমাকে জানায়, কোম্পানির কর্মীরা তাদের গায়ে হাত তুলেছে। গায়ের জামা ছিঁড়ে ফেলেছে। কোম্পানির কর্মীরা পাল্টা অভিযোগ করেছে। তাই বিষয়টি দেখার জন্য পুলিশকে জানানো হয়।’
ফয়সাল আহমেদ/এসজে/এমএস