দেশজুড়ে

ভারতীয় ভেরিয়েন্টের শঙ্কায় মেহেরপুরের সীমান্তবাসী

প্রতিদিন কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে দেশের সীমানায় ক্ষেত-খামারে কাজ করতে আসছেন ভারতীয়রা। নানা গল্পে ও আত্মীয়তার সূত্র ধরে বেড়াচ্ছেন নির্বিঘ্নে। সীমান্তে নজরদারি না বাড়ালে ভারতীয় ভেরিয়েন্টের সংক্রমণ আশঙ্কাজনকহারে বাড়তে পারে বলেও ধারণা করছেন বিজ্ঞজনেরা।

Advertisement

এদিকে সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও প্রশাসন বলছে, ইতোমধ্যে সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। মেহেরপুর সদর, গাংনী ও মুজিবনগরের ১১১ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা রয়েছে ভারতের সঙ্গে। ওপারে রয়েছে নবীননগর, শিকারপুর, তাজপুর, করিমপুর, ধাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম।

কৃষকরা ক্ষেত-খামারে কাজ করার নামে প্রতিদিন কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে আসেন বাংলাদেশের সীমানায়। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে মেলামেশা সেই সঙ্গে আত্মীয়তার সুবাদে বেড়িয়ে যান সীমান্তঘেষা গ্রামগুলোতে। সদালাপী বাঙালিরা একই প্লেটে খাবার খাওয়া এমনকি খাবার বিনিময়ও করে থাকেন। এতে করে কখন যে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন তারা নিজেরাই জানছেন না।

সীমান্তবাসীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ৭৪টি সীমান্ত ফটক রয়েছে যেগুলো দিয়ে প্রতিদিন পাশ জমা দিয়ে অন্তত ১০ হাজার ভারতীয়রা কাজ করতে আসে। বিজিবি টহল থাকলেও কাজের ছলে এদিকে এসে অনেকেই আত্মীয় বাড়ি বেড়িয়ে যায়। এদের সবাই যে সুস্থ তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারে না।

Advertisement

গত এক সপ্তাহে গাংনীর তেঁতুলবাড়িয়া সীমান্ত এলাকার হিন্দা গ্রামে ২৩ জন করোনায় আক্রান্ত। এদের মধ্যে ভারতীয় ভেরিয়েন্ট রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করলে পাওয়া যেতে পারে বলে ধারণা অনেকের।

স্থানীয় অনেকেই বলেছেন, এ মুহূর্তে সীমান্ত নজরদারি বাড়ানো উচিৎ। ভারতীয়দের সঙ্গে বাংলাদেশিদের মেলামেশা বন্ধ ও সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। অন্যথায় ভারতীয় ভেরিয়েন্ট মহামারি আকার নিতে পারে।

মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের কোভিড ইউনিটের মেডিকেল অফিসার ডা. শোভন মল্লিক জানান, সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোই এখন বাংলাদেশের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এজন্য সীমান্তগুলোতে দরকার কঠোর নজরদারি।

মেহেরপুর সিভিল সার্জন নাসির উদ্দীন জানান, যারা করোনায় আক্রান্ত তাদের মধ্যে ভারতীয় ভেরিয়েন্ট আছে কিনা তা পরীক্ষার জন্য আইইডিসিআর চাইলে নমুনা দেয়া হবে। তবে আক্রান্তরা ভারতীয়দের সংস্পর্শে গিয়েছিল কিনা তা জানার চেষ্টা চলছে।

Advertisement

মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মুনছুর আলম খান জানান, ইতোমধ্যে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির সঙ্গে আলাপ করে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সীমান্তবাসীদের সতর্ক করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে।

৬ বিজিবির অধিনায়ক কর্নেল খালেকুজ্জামান জানান, সীমান্ত বাহিনী সব সময় সতর্ক রয়েছে। লোকজন যাতে ভারতীয়দের সঙ্গে মেলামেশা না করে সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।

আসিফ ইকবাল/এমআরএম/জিকেএস