বরিশালের ২ পৌরসভায় ৪ বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে বিপাকে পড়েছে আওয়ামী লীগ। অপরদিকে একটি পৌরসভায় বিএনপির এক বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে স্থানীয় নেতাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া আরেকটি পৌরসভায় বিএনপির একজন বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলেও তিনি শেষ পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার কথা জানিয়েছেন।মুলাদী পৌরসভায় বর্তমান মেয়র শফিকুজ্জামান রুবেল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন হাওলাদার, উপজেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক মো. দিদারুল আহসান খান ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগের সহ-সভাপতি এমএ আজিজ হাওলাদার। মুলাদী পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন বলেছেন, কোনো শক্তিই তাকে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরাতে পারবেনা। কোনো অবস্থায় তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন বিদ্রোহী প্রার্থী দেলোয়ার হাওলাদার। অপরদিকে বানারীপাড়া পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র শীল। এখানে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম সালেহ মঞ্জু মোল্লা। একইভাবে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাহমুদ মাহাবুব মাস্টার বানারীপাড়া পৌরসভার মেয়র পদে বিএনপির মনোনয়ন পেলেও এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন উদয়কাঠী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. শাহে আলম মিয়া। শনিবার বিকেলে মনোনয়ন বাছাইয়ের প্রথম দিন বানারীপাড়া পৌরসভায় ৬ মেয়র প্রার্থীর সকলের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার। মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়ার পর মঞ্জু মোল্লা বলেন, কোনো চাপের কাছে তিনি নতি স্বীকার করবেন না। শেষ দিন পর্যন্ত তিনি কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনের মাঠে থাকবেন। কেউ তাকে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরাতে পারবেনা। বানারীপাড়ায় বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী শাহে আলম মিয়া বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, কৌশলগত কারণে তিনি মেয়র প্রার্থী হয়েছেন। প্রার্থীতা প্রত্যাহারে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন তিনি।অন্যদিকে, মুলাদী পৌর নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী নিয়ে স্থানীয় নেতাদের মধ্যে প্রকাশ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদ মাহমুদকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে দলটির অঙ্গ সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দল ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম দল। মুলাদী উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একই সংসদীয় নির্বাচনী এলাকার হওয়ায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীনের বিরোধের জের ধরে মুলাদী উপজেলা বিএনপি দ্বিধাবিভক্ত। মেয়র প্রার্থী আসাদ মাহমুদ, জয়নুল আবেদীন সমর্থিত প্রার্থী হওয়ায় তার বিরোধীতা করছেন বেগম সেলিমা রহমানের অনুসারী উপজেলা বিএনপি সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আ. ছাত্তারসহ তার সমর্থকরা।বিদ্রোহী প্রার্থীর বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস এমপি বলেন, প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে পৌরসভা নির্বাচন হচ্ছে। ভোটাররা ব্যক্তির চেয়ে দলের প্রতীককেই বেশী গুরুত্ব দিচ্ছে। তারপরও দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কেউ পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী হলে, সেটা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের সামিল হবে। বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান এমপি ইউনুস।বরিশাল জেলা (দক্ষিণ) বিএনপির সভাপতি এবায়েদুল হক চাঁন বলেন, তার আওতাধীন বরিশালের ৩ পৌরসভায় বিএনপির কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। বানারীপাড়ায় দল মনোনীত প্রার্থীর পরও মেয়র পদে একজন ছায়া প্রার্থীকে দিয়ে মনোনয়ন দাখিল করানো হয়েছিল কৌশলগত কারণে। নির্ধারিত সময়ে ছায়া প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন বলে জানান এবায়েদুল চাঁন।উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি মেজবাহউদ্দিন ফরহাদ বলেন, মুলাদীতে মেয়র পদে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে কারও ভেতরে ক্ষোভ থাকতে পারে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই সকল নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ করে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য তিনি চেষ্টা চালাচ্ছেন।সাইফ আমীন/এমএএস/আরআইপি
Advertisement