দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর দৃশ্যেপট বদলে যাচ্ছে। মাসখানেক আগেও প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে মৃত্যু ও শনাক্তের হার সবচেয়ে বেশি ছিল রাজধানী ঢাকায়। কিন্তু হঠাৎ পরিস্থিতি ভিন্ন। ঢাকায় এখন দেশের সবচেয়ে কম রোগী শনাক্ত হচ্ছে। মৃত্যুর সংখ্যাও কমেছে।
Advertisement
তবে উল্টোচিত্র দেশের বিভিন্ন জেলা শহরের। বিশেষ করে ভারতীয় সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনার সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। সীমান্তপথে অবৈধভাবে যাতায়াতকারীদের মাধ্যমে দেশে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে।
ফলে সীমান্তবর্তী রাজশাহী, খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় দ্রুত সংক্রমণ বাড়ছে। এসব বিভাগে করোনার গুরুতর রোগীদের চিকিৎসাসেবা পর্যাপ্ত না থাকায় ধীরে ধীরে মৃত্যুহারও বাড়ছে।’
গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীসহ সারাদেশে সর্বমোট ১৮ হাজার ৫৩৫টি নমুনা পরীক্ষায় দুই হাজার ৪৫৪ জন রোগী শনাক্ত হয়। দেশের আটটি বিভাগের মধ্যে খুলনায় সর্বোচ্চ ৩৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ এবং ঢাকা বিভাগে সর্বনিম্ন ৫ দশমিক ৬ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয়।
Advertisement
রংপুরে ২৬ শতাংশ, ময়মনসিংহে ১৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ, রাজশাহীতে ১৭ দশমিক ৩২ শতাংশ, ময়মনসিংহ ১১ দশমিক ২৬ শতাংশ, চট্টগ্রাম ১৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ, বরিশালে ৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে ৮ হাজার ৫৩৬টি নমুনায় ৪৮০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে দুই হাজার ৩৬৭টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৭০ জন, রাজশাহী বিভাগে তিন হাজার ৯৩৮টি নমুনা পরীক্ষায় ৬৮২ জন, রংপুর বিভাগে ৫০৩টি নমুনা পরীক্ষায় ১৩১ জন শনাক্ত হয়।
এছাড়া খুলনা বিভাগে এক হাজার ৭২৯টি নমুনা পরীক্ষায় ৫৯৯ জন, বরিশাল বিভাগে ৩২৩টি নমুনা পরীক্ষায় ২৭টি এবং সিলেট বিভাগে ৫০৯টি নমুনা পরীক্ষায় ৭১ জন রোগী শনাক্ত হয়।
যেসব জেলায় অর্ধশতের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে, সেগুলো হলো- কক্সবাজার, নোয়াখালী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, জয়পুরহাট, যশোর, খুলনা ও বাগেরহাটে। এছাড়া কমসংখ্যক নমুনা পরীক্ষায় বেশি রোগী শনাক্ত হয় চুয়াডাঙ্গা, পঞ্চগড়, নীলফামারী, লালমনিরহাট এবং খাগড়াছড়ি জেলায়।
Advertisement
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৮ বিভাগে সর্বমোট ৪৩ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে পুরুষ ৩০ ও নারী ১৩ জন। মৃতদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩৬ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৬ জন এবং বাসায় একজন মারা যান।
২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম রোগীর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা ১৩ হাজার ৩২ জনে দাঁড়াল।
বিভাগীয় পরিসংখ্যান অনুসারে ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ ১১ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া ঢাকা বিভাগে আটজন, চট্টগ্রাম ১০ জন, খুলনা সাতজন, বরিশাল দুইজন, রংপুর চারজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে একজনের মৃত্যু হয়। এ সময়ে সিলেট বিভাগে কোনো করোনা রোগীর মৃত্যু হয়নি।
স্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর সংক্রমণরোধে কঠোর লকডাউনের পাশাপাশি করোনার সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
এমইউ/এএএইচ/এএসএম