বেজোড় ম্যাচে পরাজয় আর জোড় ম্যাচে জয়- নিজেদের জন্য যেন এমন সমীকরণই বানিয়ে নিয়েছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। চলতি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটে ছয় ম্যাচ শেষে তাদের জয়-পরাজয় সমান তিনটি করে। যেখানে জয় মিলেছে জোড়তম ম্যাচে আর তারা হেরেছে বেজোড় ম্যাচগুলো।
Advertisement
বৃহস্পতিবার আসরে নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে তৃতীয় জয় তুলে নিয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বাধীন দলটি। তারা হারিয়েছে ওল্ড ডিওএইচএসকে। শেষ দিকে খানিক জমে ওঠা ম্যাচটি ৫ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের ব্যবধানে জিতেছে গাজী গ্রুপ। ষষ্ঠ ম্যাচে ডিওএইচএসের এটি তৃতীয় পরাজয়।
প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছিলেন মাহমুদুল হাসান জয়। আসরের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসে তিনি করেন ৫৫ বলে ৮৫ রান। কিন্তু অন্যদের ব্যর্থতায় ১৩৬ রানের বেশি করতে পারেনি ওল্ড ডিওএইচএস। জবাবে মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে ১৯.১ ওভারেই ম্যাচ জিতে নিয়েছে গাজী গ্রুপ।
রান তাড়া করতে নেমে ঝড়ো শুরু করেছিলেন গাজী গ্রুপের ওপেনার শেখ মেহেদি হাসান। তবে ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। তৃতীয় ওভারে সাজঘরে ফেরার আগে ১০ বলে ২২ রান করেন তিনি। আরেক ওপেনার সৌম্য সরকারের ব্যাট থেকে আসে ৩৫ বলে ৩৭ রান।
Advertisement
তিন নম্বরে নেমে মুমিনুল হক ২৭ রান করতে খেলেন ৩৪ বল। লক্ষ্য ছোট হওয়ায় তার ধীর ব্যাটিংয়ের প্রভাব পড়েনি গাজী গ্রুপের ইনিংসে। পরে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৮ বলে ১৯ ও ইয়াসির আলি রাব্বি ১৮ বলে ২৪ রানের ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করেন।
ম্যাচে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গাজী গ্রুপ। প্রতিপক্ষের আমন্ত্রণে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে ডিওএইচএস। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরে ফিরে যান ফর্মে থাকা ওপেনার আনিসুল ইসলাম ইমন (৫ বলে ১), পঞ্চম ওভারে আউট হন আরেক ওপেনার রাকিন আহমেদ (১৬ বলে ৮)।
প্রথম পাওয়ার প্লে'তে ২ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৮ রান করতে সক্ষম হয় ডিওএইচএস। বিপদ সামাল দিতে নেমে বেশি দূর যেতে পারেননি দলের অধিনায়ক মোহাইমিনুল খান সৌরভ। ইনিংসের ১১তম ওভারে আউট হওয়ার আগে ১৬ বলে ৮ রান করেন তিনি, দলের সংগ্রহ তখন ৪৬ রান।
সেই ৪৬ রানের মধ্যে জয়ের একার সংগ্রহই ছিল ২৩ রান। অর্থাৎ ইনিংসের শুরু থেকেই দলের ভার নিজের কাঁধে তুলে নেন এ তরুণ ব্যাটসম্যান। ব্যর্থ হন আগের ম্যাচের জয়ের অন্যতম নায়ক রায়ান রাফসান রহমান (৩ বলে ০) এবং রাকিবুল ইসলাম রাজা (৬ বলে ১)।
Advertisement
উইকেটে টিকতে পারেননি রাকিবুল হাসানও। ইনিংসের ১৬তম ওভারে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন দলীয় ৮২ রানের মাথায়। এরপর আলিস আল ইসলামকে নিয়ে মাত্র ২৬ বলে ৫৪ রান যোগ করেন মাহমুদুল হাসান জয়। যেখানে আলিসের অবদান ৯ বলে ১৫ রান। মজার বিষয়, এটিই দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
ইনিংসের ১৬তম ওভারের শেষ বলে ফিফটি পূরণ হয় জয়ের। এ মাইলফলকে পৌঁছতে ৪০ বল খেলেন তিনি, হাঁকান ১টি চার ও ৪টি ছক্কা। তবে তার রুদ্রমূর্তি দেখা যায় পরের ১৫ বলে, যেখানে তোলেন ৩৫ রান। বিশেষ করে ইনিংসের শেষ ২ ওভারেই ৪০ রান করে ডিওএইচএস।
অভিষিক্ত মহিউদ্দিন তারেকের করা ১৯তম ওভারে দুইটি করে চার-ছয়ের মারে আসে ২১ রান। পরে শেখ মেহেদি হাসানের করা শেষ ওভারে দুই ছয় ও এক চারের মারে ডিওএইচএস তুলে নেয় ১৯ রান। শেষের ৬ ওভারে তাদের দলীয় সংগ্রহে যোগ হয় ৬৯ রান, যেখানে জয়ের একার অবদান ৫৩ রান।
মাহমুদুল জয়ের ঝড় তোলা ইনিংসের আগে বল হাতে দারুণ নিয়ন্ত্রিত ছিলেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। তিনি ৪ ওভারে মাত্র ১০ রান খরচায় ২ উইকেট নেন। এছাড়া ১টি করে উইকেট শিকার করেছেন মহিউদ্দিন, মুকিদুল ইসলাম, মুমিনুল হক ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
এসএএস/এমকেএইচ