আন্তর্জাতিক

ম্যাক্রোঁকে থাপ্পড় মারা কে সেই যুবক?

জনগণের সঙ্গে সামনাসামনি আলাপ ও সৌহার্দ্য বিনিময় করতে গিয়ে মঙ্গলবার থাপ্পড় খেয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ। ব্যারিকেডের কাছাকাছি যেতেই তার গালে সজোরে চড় মারেন এক যুবক। এ ঘটনা রীতিমতো ঝড় তুলেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে। স্বাভাবিকভাবেই সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে একটি প্রশ্ন, কে সেই যুবক?

Advertisement

ফরাসি পুলিশের বরাতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, লম্বা চুলের চশমাপরা ওই যুবকের নাম ড্যামিয়েন ট্যারেল। বয়স ২৮ বছর।

#Macron se fait gifler en direct de #Tain pic.twitter.com/tsXdByo22U

— (@AlexpLille) June 8, 2021

ম্যাক্রোঁকে থাপ্পড় মারার সময় তিনি ‘ম্যাক্রোঁবাদ নিপাত যাক’ বলে চিৎকার করছিলেন। অবশ্য সঙ্গে সঙ্গেই তাকে জাপটে ধরেন প্রেসিডেন্টের দেহরক্ষীরা।

Advertisement

আটকের পর ড্যামিয়েনের বাড়ি তল্লাশি করেছে ফরাসি পুলিশ। সেখানে বেশ কিছু অস্ত্রশস্ত্র, একটি সোভিয়েত পতাকা, জার্মান স্বৈরশাসক অ্যাডলফ হিটলারের আত্মজীবনীমূলক বই ‘মেইন কাফ’ (আমার লড়াই), কল্প-উপন্যাস, জাপানি কমিকস এবং যুদ্ধ বিষয়ক গেমস খুঁজে পেয়েছে তারা।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ড্যামিয়েন ‘নৈরাজ্যবাদী’ ছিলেন। তবে আদর্শগত কোনো সমস্যা ছিল কিনা সেটাও তদন্ত করছেন গোয়েন্দারা।

ড্যামিয়েন ট্যারেলের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ঘেঁটে দেখা যায়, সেখানে পুরোনো দিনের যুদ্ধবর্ম পরা ও তলোয়ার হাতে তার বেশ কিছু ছবি রয়েছে।

একটি সূত্র স্থানীয় লা পারিসান পত্রিকাকে বলেছে, এ যুবক গেমস, মধ্যযুগীয় লড়াইয়ের অনুকরণে একধরনের ‘সমান্তরাল পৃথিবীতে’ (প্যারারাল ওয়ার্ল্ড) বাস করেন।

Advertisement

প্রেসিডেন্টকে থাপ্পড় মারার সময় আটক করা হয়েছে ড্যামিয়েনের এক বন্ধুকেও। আর্থার সি নামে ওই যুবকও ম্যাক্রোঁকে অপমানসূচক কথা বলছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

জানা যায়, এ দুই যুবক নিজ এলাকা সেইন্ট-ভ্যালিয়ের থেকে প্রায় ১০ মাইল দূরবর্তী টেইন-ল’হার্মিটেজ গ্রামে গিয়েছিলেন, যেখানে ম্যাক্রোঁ ভোটারদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের কথা ছিল।

থাপ্পড়কাণ্ডের কয়েক ঘণ্টা আগে এক সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপও করেছিলেন ওই দুই যুবক। সেসময় অবশ্য তাদের আরেক বন্ধু সঙ্গে ছিলেন।

আলাপকালে সাংবাদিক জানতে চেয়েছিলেন, ম্যাক্রোঁ ওই এলাকায় আসা নিয়ে তারা কী মনে করছেন। জবাবে তৃতীয় বন্ধু জানান, তারা মূলত নৈরাজ্যবাদী। তবে বিষয়টি নিয়ে অনেকসময় গণমাধ্যমে ‘ভুল দৃষ্টিভঙ্গি’ প্রচার করা হয় দাবি করে এ নিয়ে আর কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। এসময় ড্যামিয়েন ট্যারেল পাশেই দাঁড়ানো ছিলেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের খবর অনুসারে, ড্যামিয়েন ও আর্থারকে আটকের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করা হবে।

তাদের বিরুদ্ধে ‘জনগণের কর্তৃত্বের অধিকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত সহিংসতা’র অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আক্রমণকারীদের সর্বোচ্চ তিন বছরের জেল এবং ৪৫ হাজার ইউরো জরিমানা হতে পারে।

কেএএ/এমএস