ভ্রমণ

পৃথিবীর সবচেয়ে সুরক্ষিত ৩ বাড়ি

সবাই নিজের বাড়ি সুরক্ষিত রাখতে চায়। আপনি নিশ্চয়ই বিভিন্ন থ্রিলার সিনেমায় দেখে থাকবেন, অত্যাধুনিক সিকিউরিটিসম্পন্ন বিভিন্ন বাড়ি। আপনি জানলে অবাক হবেন, বিশ্বের ধনী এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের বাড়িগুলো তার চেয়েও বেশি সুরক্ষিত।

Advertisement

এসব বাড়ির আশেপাশে গেলে আপনার মৃত্যুও হতে পারে! কারণ এতোটাই অত্যাধুনিক নিরাপত্তাবলয় দিয়ে ঘেরা আছে বাড়িগুলো, যা আপনি হয়তো খালি চোখে দেখতেই পাবেন না। এ কারণেই তাদের বাড়িগুলো বিশ্বের সবচেয়ে সুরক্ষিত স্থান হিসেবে বিবেচিত। জেনে নিন তেমনই কয়েকটি বাড়ির হদিস-

রায়ংসং রেসিডেন্স

উত্তর কোরিয়ার পিয়ং ইয়ং সিটিতে অবস্থিত এই বাড়িটি। প্রেসিডেন্ট কিম জং উন, যার নাম শুনলেই কাঁপে পুরো উত্তর কোরিয়া, তার বাড়িতে আবার কে ঢুকবে! নিশ্চয়ই এমনটি ভাবছেন। তবে জানলে অবাক হবেন, কিম জন উনের বাড়িটি বিশ্বের সবচেয়ে সুরক্ষিত স্থান হিসেবে বিবেচিত। কড়া নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে বাস করে তিনি।

Advertisement

নিজের বাড়ির নিরাপত্তা বিষয়ক যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে কিম জন উন পিছপা হন না। তার বাড়ির চারপাশে ইলেকট্রিক চালিত দেওয়াল আছে। আর এই দেওয়ালের বাইরে সিকিউরিটি গার্ডরা দিন-রাত কড়া নজর রেখে চলেছেন।

সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় হলো, রায়ংসং রেসিডেন্সের চারপাশে লুকিয়ে মাইন পুঁতে রাখা আছে। তাই অচেনা কেউ এই বাড়ির চারপাশে গেলেই নির্ঘাত মারা পড়বেন। লোহার খাঁচার মাঝখানে গলিত কংক্রিট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই বাড়ির চারপাশের দেওয়াল।

জানা যায়, যেকোনো পরমাণু হামলাতেও কিম জন উনের এই বাড়িটির কিছুই হবে না। শুধু তাই নয় বাড়ির ভেতরের সবাই থাকবেন সুরক্ষিত। তারপরেও যদি এই বাড়ি থেকে কখনো বের হতে হয়। সে জন্য আছে গোপন সুড়ঙ্গ পথ। সেই সুরক্ষা পথ দিয়ে চাইলেই কিম জন উন ও তার পরিবার বিপদ মুহূর্তে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে পারবেন।

সব নিরপত্তা বলয় পেরিয়েও যদি কেউ বাড়িতে প্রবেশ করেন, তাহলে সে হয়তো আর বাড়ির বাইরে বের হতে পারবেন না। কারণ একবার এই বাড়িতে ফায়ার অ্যালার্ম বেজে উঠলে, চারপাশে ছড়িয়ে পড়বে বিষাক্ত রাসায়নিক গ্যাস। তাই বাড়িতে যদি কেউ প্রবেশ করে, তাহলে বিষাক্ত গ্যাসে সেখানেই মারা পড়বেন তিনি।

Advertisement

হোয়াইট হাউস

পুরো বিশ্বের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হলো হোয়াইট হাউস। বিশ্বের সবচেয়ে সুরক্ষিত বাড়িগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো এটি। এ বাড়ির চারপাশের দেওয়াল লোহার গ্রিল দিয়ে তৈরি হলেও, বিরাট সব ট্রাকের ধাক্কাতেও কিছুই হবে না। এ বাড়ির ভেতরে-বাইরে এবং চারপাশে অনেক সিকিউরিটি গার্ড নিযুক্ত আছেন। তাই কেউ চাইলেও এই বাড়িতে ঢুকতে পারবেন না।

এ ছাড়াও এই বাড়ির চারপাশে বিমান হামলার সুযোগ নেই। কারণ হোয়াইট হাউজে আছে এর নিজস্ব রাডার। এই বাড়ির উপরের আকাশে বিমান উড়ানো কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। যদি কেউ ভুল করেও চলে যান, তাকে গুনতে হবে জরিমানা ও শাস্তি। যদি কেউ দূর থেকে এই বাড়িতে গুলি ছোঁনে তবুওি কিছুই হবে না। কারণ এর সব দরজা-জানালা বুলেটপ্রুভ।

হোয়াইট হাউসে বসবাসরত প্রেসিডেন্টের খাবারও শতভাব সুরক্ষিত। বিভিন্ন মেশিনের মাধ্যমে ল্যাবে পরীক্ষা করে প্রেসিডেন্টের খাবার তার সামনে যায়। এই বাড়ির ভেতরেও স্পেশাল ফোর্সসহ আধুনিক সব অস্ত্র আছে। হোয়াইট হাউজের আশেপাশে আরও আছে প্রচুর সিসিটিভি ক্যামেরা। এসব ক্যামেরা এতোটাই উন্নত যে, ক্ষুদ্র বস্তুও ক্যাপচার করতে সক্ষম।

হোয়াইট হাউজে পরমাণু হামলা বা বিস্ফোরণ ঘটলেও বাড়ির বা এর ভেতরে থাকা মানুষের কোনো ক্ষতি হবে না। প্রয়োজনে বাড়ি থেকে দ্রুত লুকিয়ে পড়ার জন্য আছে গোপন বাংকার। এই বাংকারে প্রবেশ করলেই নিরাপদ থাকবেন প্রেসিডেন্ট। দ্য করবি সেইফ হাউজ

ক্যালিফোর্নিয়ার হলিউড হিলে অবস্থিত এই বাড়িটি। ২০০১ সালে তৈরি করা হয় দ্য করবি সেইফ হাউজ। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে একজন হলেন আল করবি। নিজের পরিবারের সুরক্ষার জন্য তিনি কোনো কমতি রাখেননি। বাড়িটি পুরোপুরিভাবে বুলেটপ্রুভ। বাড়ির সামনে হেলিকপ্টার নামার জন্যও আছে হেলি-প্যাড।

এই বাড়ির সিকিউরিটি সিস্টেম কোনো সায়েন্স ফিকশন মুভির চেয়ে কম নয়। এই বাড়ির যে কেউ চাইলেই যখন তখন পুলিশকে ডাকতে পারেন, তাও আবার ফোন না করে। শুধু কয়েকটি বাটনে প্রেস করলেই পুলিশ এসে হাজির হবে এই বাড়িতে। এ ছাড়াও একটি বাটনে প্রেস করলে বাড়ির একটি ঘর মহূর্তেই বাঙ্কারে পরিণত হবে।

এই বাড়ির প্রতিটি দরজা ব্যালেস্টিক। যেকোনো হামলাতেও বাড়িরে ভেতরের মানুষের কিছুই হবে না। যত বড় ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পই হোক না কেন, এই বাড়ি এক চুল পরিমাণও নড়বে না। এই বাড়ির প্রতিটি পিলার মাটির নিচে ৩০ ফুট পর্যন্ত বিস্তৃত।

রাসায়নিক ও পারমাণবিক হামলা প্রতিরোধ করতে পারে বাড়িটি। এ ছাড়াও এই বাড়িতে লাগানো আছে অনেক সিসিটিভি ক্যামেরাসহ বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা। যার মাধ্যমে বাড়ির চারপাশে কোনো অচেনা ব্যক্তিকে সহজেই সনাক্ত করা যাবে।

সূত্র: ওন্ডার লিস্ট

জেএমএস/এএসএম