‘ব্যক্তিগত কারণে ২০০৬ সালের দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে একটা অফিসে গিয়েছিলাম। লিফট দিয়ে যখন উপরে উঠছিলাম তখন সেখানে ছিলেন বিজ্ঞাপন নির্মাতা অমিতাভ রেজা ভাই। আমাকে দেখে তার ভালো লাগে। এরপর তিনি নিজেই আমাকে তার বিজ্ঞাপনে কাজ করার প্রস্তাব দেন।এটা শোনার পর আমি চমকে উঠি। অতো বড় মাপের একজন নির্মাতা নিজে থেকে বলছেন আমাকে নিয়ে কাজ করবেন। ভাবতে পারছিলাম না আসলে স্বপ্ন দেখছি কি না। কিন্তু না। সেটা সত্যি ছিলো। পরবর্তীতে তার বিজ্ঞাপনে কাজ করার জন্য অডিশন দেই। ব্যাস! টিকে গেলাম। তারপর অমিতাভ রেজার নির্মাণে পরপর তিনটি বিজ্ঞাপনে কাজ করি। গ্রামীণফোনের ডিজুস, ক্লোজআপ ওয়ান তোমাকেই খুঁজচ্ছে বাংলাদেশ এবং তোশিন টিভি। সেসময়ে তোশিন টিভির বিজ্ঞাপনে আমার বিপরীতে ছিলেন মোনালিসা। এগুলো প্রচারিত হয় ওই বছরই। তারপর থেকেই মিডিয়াতে আমার পথচলাটা অনেক সহজ হয়ে গেল’।জাগো নিউজের সাথে আলাপে শোবিজে নিজের শুরুটা এভাবেই জানালেন ছোট পর্দার পরিচিত মুখ ইমতু রাতিশ।শুরুর গল্প বলতে গিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘আমার শুরুটা অনেকটা কাকতালীয়ভাবে। প্রথম তিনটি বিজ্ঞাপন সেসময় দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। এরপর থেকে ক্লোজআপ, প্রাণ ডাল, আরসি কোলাসহ আরো অনেক বিজ্ঞাপনে কাজ করেছি। এরমধ্যে প্রাণ ডালের ‘মুঠোয় মুঠোয় সময় পার’ আর আরসি’র বিজ্ঞাপনের ‘আরসি কোলা আজ আমার দিল খোলা’ এই সংলাপ দু’টো আজও আমায় বিভিন্ন জাগায় গেলে অনেকের মুখে শুনতে পাই।’সাফল্যের হাত ধরে ইমতু পরবর্তীতে কাজ করেছেন বেশ কিছু টিভি নাটকে। তার প্রথম একঘণ্টার নাটক প্রচারিত হয় ২০০৭ সালের প্রথমদিকে। পারভেজ আমিন পরিচালিত নাটকটির নাম ছিল ‘টমের চিঠি’। এখানে তার সহশিল্পী ছিলেন মোসালিসা এবং সজল। এছাড়া ইমতু অভিনীত বেশকিছু জনপ্রিয় নাটকের মধ্যে রয়েছে মামুনুর রশিদের ‘দুঃখী নয়ন’, রেদওয়ান রনির ‘লাকী থার্টিন’, হৃদি হকের ‘নাইন্টিন টোয়েন্টি’, অনন্য ইমনের ‘রেইন ফরেস্ট’, একুশে টিভি’র ‘আজিজ মার্কেট শাহবাগ ঢাকা’ ইত্যাদি। বিজ্ঞাপন-নাটক ছাড়া ইমতুকে পাওয়া যায় প্রাণবন্ত এক উপস্থাপক হিসেবে একুশে টেলিভিশনের ‘সিনেটিক’ এবং এটিএন বাংলায় ‘তাজা চায়ের চুমুকে’ নামের দু’টি বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানে। এছাড়া বিভিন্ন রিয়্যালিটি শোতেও কালেভাদ্র দেখা মেলে রঙ্গিন ভুবনের সম্ভাবনাময়ী এই যুবককে।ইমতু বর্তমানে সদ্য আত্মপ্রকাশ করা বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দীপ্ত-তে ‘পালকী’ নামের সিরিয়ালের অভিনয় করছেন। আপাতত এই নাটকটি নিয়েই তার সবকিছু। ইমতু বললেন, ‘সিরিয়ালটি একটি চমক হিসেবে দর্শকদের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে। বড় বাজেটের এই সিরিয়ালটি এরই মধ্যে দর্শকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। এখানে গ্রামের এক সাধারণ মেয়ের অসাধারণ হয়ে ওঠার গল্পই দেখানো হয়েছে। বেশ ভালোই সাড়া পাচ্ছি চারপাশের মানুষের থেকে।’বিজ্ঞাপন, নাটক, উপস্থাপনার মাঠ তো বাজিমাত হলো। চলচ্চিত্র নিয়ে কিছু ভাবছেন কী? এই প্রশ্নের জবাবে ইমতু জানান, তিনি মূলত চলচ্চিত্রেই প্রতিষ্ঠিত হতে চান। অভিনয়ের সবচেয়ে বড় এই মাধ্যমটিতে কাজ করবেন বলেই দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার ভাবনার পুরোটাই চলচ্চিত্র জুড়ে। তিনি আরো জানান, এ মাসের শেষের দিকেই একটি চলচ্চিত্রের কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন তিনি। নার্গিস আক্তারের পরিচালনায় সেই ছবির নাম ‘যৈবতি কন্যার মন’। একজন নারীর জীবনে বিভিন্ন মানুষের আগমন নিয়ে তির এই ছবিতে প্রেম-বিরহে থাকছে হৃদয় ছোঁয়া এক কাহিনী। ইমতু মনে করেন, একজন প্রকৃত শিল্পীর নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের মাধ্যম হচ্ছে বড়পর্দা। ধীরে ধীরে নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে নিজের সেরাটা দিয়ে বড়পর্দায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা উচিত। আর সেভাবেই নিজেকে গড়ে তুলছেন তিনি। তাই স্পষ্টই বলে দিলেন, ‘আমি যত কাজই করি না কেন আমার মূল ডেসটিনেশন হচ্ছে চলচ্চিত্র।’সাফল্যের পথে তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে সতেজ এই অভিনেতাকে শুভ কামনা।এনই/এলএ
Advertisement