ইংল্যান্ডে করোনাভাইরাসরোধী টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে আগ্রহ কম দেখা গেছে পাকিস্তানি ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতদের মধ্যে। এ দুই শ্রেণির ৭০ বছর বয়সোর্ধ্বদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে প্রায় দুইজনই করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিতে যাননি। সোমবার যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান দফতর (ওএনএস) এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
Advertisement
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, করোনা টিকার প্রথম ডোজ নেয়ার পর গত ৯ মে পর্যন্ত পাকিস্তানি বংশোদ্ভূতদের ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ দ্বিতীয় ডোজ নিতে হাজির হননি। বাংলাদেশির ক্ষেত্রে এর হার ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ। অথচ প্রথম ডোজ নিতে এ দুই শ্রেণির মানুষদের মধ্যে যথেষ্ট আগ্রহ দেখা গেছিল।
ওএনএসের তথ্য অনুসারে, ইংল্যান্ডে বসবাসকারী কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকান বংশোদ্ভূতরা করোনা টিকার প্রথম ডোজ নিতে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখিয়েছেন। তালিকাভুক্তির পর তাদের উপস্থিতির হার ছিল ৬৭ দশমিক ৪ শতাংশ। তবে এদের মধ্যে ১৬ শতাংশ আর দ্বিতীয় ডোজ নিতে যাননি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে পূর্ণসুরক্ষা পেতে টিকার দুটি ডোজ নেয়াই আবশ্যক। বিশেষ করে অতিসংক্রামক নতুন ধরনগুলো থেকে বাঁচতে এর বিকল্প নেই।
Advertisement
ওএনএস বলছে, ইংল্যান্ডে এ পর্যন্ত চার কোটির বেশি, অর্থাৎ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রতি চারজনের তিনজন অন্তত এক ডোজ করে টিকা পেয়েছেন। আর দুই ডোজ টিকাই পেয়েছেন ২ কোটি ৭৬ লাখের মতো, অর্থাৎ প্রায় অর্ধেক প্রাপ্তবয়স্করা।
সংস্থাটির পরিসংখ্যান বলছে, টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিতে সবচেয়ে কম হাজির হয়েছেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূতরা। তাদের প্রায় ৩৩ হাজার ৩০০ জন প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন। তবে পরের ১১ সপ্তাহের মধ্যে ৫ হাজার ৯০০ জন দ্বিতীয় ডোজ নিতে যাননি।
এর পরেই রয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতরা। তাদের প্রায় ১০ হাজার জন টিকার প্রথম ডোজ নিলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নিতে যাননি অন্তত ১ হাজার ৭০০ জন।
কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকানদের মধ্যে এর হার ১৫ হাজার ১০০ জনের মধ্যে ২ হাজার ৪০০ জন। কৃষ্ণাঙ্গ ক্যারিবীয়দের ১৩ শতাংশ, অর্থাৎ ৪০ হাজার জনের মধ্যে প্রায় ৫ হাজার ২০০ জন দ্বিতীয় ডোজ নেননি।
Advertisement
পরিসংখ্যান অনুসারে, ইংল্যান্ডে দুই ডোজ টিকা নেয়ার হার সবচেয়ে বেশি শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশদের (৯৬ দশমিক ৩ শতাংশ)। এরপরেই রয়েছে অন্য দেশের শ্বেতাঙ্গরা (৯৪ দশমিক ৯)। তৃতীয় ভারতীয়রা (৯৪ দশমিক ৩) এবং চতুর্থ চীনারা (৯৩ দশমিক ৪ শতাংশ)।
তালিকার নিচের দিকে থাকা বাংলাদেশিদের মধ্যে এর হার ৮২ দশমিক ৭ এবং একেবারে তলানিতে থাকা পাকিস্তানিদের হার ৮২ দশমিক ৪ শতাংশ।
ওএনএসের হিসাবে, ইংল্যান্ডে ৭০ বছর বয়সোর্ধ্বদের যারা গত ১৫ মার্চের মধ্যে করোনা টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন, গত ৯ মে’র মধ্যে গড়ে তাদের ৯৬ শতাংশ দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছেন পুরুষেরা। তাদের মধ্যে এর হার ৯৬ দশমিক ২ শতাংশ। আর নারীদের মধ্যে এর হার ৯৫ দশমিক ৮ শতাংশ।
সূত্র: ডেইলি মেইল, ইয়াহু নিউজ
কেএএ/এএসএম