দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার মান্দ্রা-ফজুশাহ সড়কটির বেহাল দশা। বিভিন্ন স্থানে পিচ ঢালাই উঠে তৈরি হয়েছে ছোট বড় খানাখন্দ। এতে অনেকটাই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে স্থানীয় দুটি ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের মানুষের প্রধান ভরসার এই সড়কটি।
Advertisement
বর্তমানে নিত্যনৈমিত্তিক কাজের জন্য সড়কটি দিয়ে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এসব গ্রামের হাজারও বাসিন্দা ও পথচারীদের।
উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা যায়, দেড় বছর পূর্বেই সড়কটি সংস্কারে ঠিকাদার নিয়োগ করা হলে ঠিকাদারের অবহেলায় কাজটি এগোচ্ছে না। তাই নতুন করে সংস্কার কাজের জন্য প্রক্রিয়া চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের সিদ্ধেশ্বরী বাজারের পশ্চিম দিকে মান্দ্রা হয়ে আড়িয়ল ইউনিয়নের ফজুশাহবাজার পর্যন্ত মান্দ্রা-ফজুশাহ সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় দুকিলোমিটারের কিছুটা বেশি। সড়কটি স্থানীয় মান্দ্রা, পোদ্দারপাড়া, বাসিরা, নিতিরা, ভাঙনীয়, যোগানিয়া, আড়িয়ল, ফজুশাহসহ আশেপাশের ১০গ্রামের মানুষের যাতায়াতের প্রধান পথ।
Advertisement
এরমধ্যে উপজেলায় যাতায়াতে পাঁচটি গ্রামের মানুষের একমাত্র সড়ক এটি। তবে তিন বছরের অধিক সময় ধরে সংস্কার না হওয়ায় সড়কটির বেহাল দশার কারণে এলাকাবাসীকে এখন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
সরজমিনে দেখা যায়, সড়কটি অধিকাংশ স্থানেই খানাখন্দ আর ভাঙা। কয়েকটি স্থানে পিচ ঢালাই শতফুট পর্যন্ত উঠে গেছে। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করতে হচ্ছে। এছাড়া এলাকাটির কৃষি নির্ভর হওয়ায় জমি থেকে আলুসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনের পর বাজারজাত করতেও সমস্যা হচ্ছে। গাড়িতে ঝাঁকুনি থেকে বাঁচতে অনেকই পায়ে হেঁটে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিচ্ছেন। বৃদ্ধ ও রোগীদের বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বৃষ্টিতে রাস্তার অবস্থা আরও বেশি নাজুক হয়। ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা উল্টে দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রায়শই।
অনিল বিশ্বাস নামের স্থানীয় একজন বলেন, ‘গত ২-৩বছর যাবত এমন সমস্যা আমাদের। এর আগে যখন রাস্তার কাজ করেছিল তখনো ভালোভাবে করে যেতে পারেনি। রাস্তার পাশে ওয়াল দেয়ার দরকার ছিল সেগুলো দেয়নি। প্রতিদিন মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যাতায়াত ভাড়াও দ্বিগুণ হয়ে গেছে।’
ইলিয়াস ব্যাপারী নামের আরেকজন বলেন, ‘ভাড়া দ্বিগুণ দিলেও গাড়ি আসতে চায় না। হেঁটেই মানুষকে রাস্তা পাড়ি দিতে হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত এ সড়ক সংস্কার হোক।’
Advertisement
স্থানীয় আলেয়া বেগম বলেন, ‘রোগীদের চলাচলে খুব অসুবিধা। গর্ভবতী নারীরা কীভাবে এ সড়কে চলবে। সরকার কী এগুলো দেখে না।’
স্থানীয় মসজিদের ইমাম বলেন, ‘রাতে গাড়ি চলাচল একেবারেই করতে পারে না। রাতে এশা ও ভোরে ফজরের নামাজ আসা মুসল্লিদেরও ভাঙা রাস্তার কারণে সমস্যা হয়। রাস্তাটা যেন ঠিক করে দেয়া হয়।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহ মোয়াজ্জেম জাগো নিউজকে বলেন, ‘ওই সড়কটি সংস্কারে দেড় বছর পূর্বে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয় তবে তারা সময় মতো কাজ করতে ব্যর্থ হওয়ায় টেন্ডারটি বাতিল হয়। এরপর করোনা ও বন্যা পরিস্থিতির কারণে কাজ হয়নি। নতুন করে আবারও ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। চলতি জুন মাসে সড়কের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এক কিলোমিটার অংশ মেরামতের কাজ সম্পূর্ণ করা হবে।’
আরাফাত রায়হান সাকিব/এসজে/এএসএম