আন্তর্জাতিক

কৃষ্ণসাগরে ফের ১৩৫ বিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাসের সন্ধান তুরস্কের

তুরস্কের রাষ্ট্রপতি এরদোয়ান বলেছেন, ‘ফাতিহ ড্রিলিং জাহাজ কৃষ্ণসাগরে ১৩৫ বিলিয়ন ঘনমিটার নতুন প্রাকৃতিক গ্যাস আবিষ্কার করেছে। জাহাজটি গত বছর ৪০৫ বিলিয়ন ঘনমিটার প্রাকৃতিক গ্যাস আবিষ্কার করেছিল। কৃষ্ণসাগরে আমাদের মোট গ্যাস আবিষ্কার রিজার্ভ ৫৪০ বিলিয়ন ঘনমিটারে পৌঁছেছে।’

Advertisement

৪ জুন জঙ্গুলডাকের ফিলিওস বন্দরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া রাষ্ট্রপতি রেসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এই সুসংবাদ দেন। ফিলিওস বন্দরটি এই অঞ্চলে গ্যাস প্রসেসিংয়ের সুবিধা তৈরি করবে এবং একটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ করবে বলে জানা গেছে।

ফাতিহ ড্রিলিং জাহাজ, যা কৃষ্ণসাগরে তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে, ২০২৩ সালে এই গ্যাসের উৎপাদন শুরু করা হবে।

প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে এরদোয়ান বলেন, আমরা এটিকে তিনটি পর্যায়ে উত্তোলনের পরিকল্পনা করছি। প্রথমটি হলো সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন ব্যবস্থা স্থাপন করা।

Advertisement

দ্বিতীয় পর্যায়ে হলো সুবিধাজনক স্থলভাগে প্রাকৃতিক গ্যাস প্রক্রিয়াজাত করা এবং এটি ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা। আর তৃতীয় পর্যায়টি হলো সমুদ্রের পাইপলাইন ব্যবস্থার সঙ্গে স্থলভাগের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা। যখন প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত হবে, তখন এটি আমাদের অর্থনীতিতে দুর্দান্ত অবদান রাখবে।

তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ে, আমরা ১০টি কূপের উত্তোলনের শেষ করব এবং তারপরে আমরা নতুন ক্ষেত্রগুলোতে প্রসারিত করব। তুরস্ক যে জায়গাটি সমুদ্র ও স্থলভাগে প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধান কর্মকাণ্ডে পৌঁছেছে তা হলো যত্নশীল, ধৈর্যশীল এবং পরিকল্পনার ফসল।

ফাতিহ ড্রিলিং জাহাজের গ্যাস আবিষ্কার গভীর সমুদ্রের মধ্যে বছরের বৃহত্তম আবিষ্কার এবং এর মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম হিসাবে রেকর্ড করা হয়েছিল বিশ্বের সমস্ত গ্যাস আবিষ্কারের।

জঙ্গুলডাকে উজুন মেহমেট মসজিদ উদ্বোধন

Advertisement

একই দিন প্রসিডেন্ট এরদোয়ান জঙ্গুলডাকে উজুন মেহমেট মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করে উদ্বোধনীতে বলেন, সমুদ্রের তীরে নির্মিত এই মসজিদটি আমাদের নগরীতে যে মহিমা নিয়ে এসেছে, তা আমাদের জঙ্গুলডাককে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে আলাদা করে তুলবে।

এমএফএ কোকেয়ুসুফ মাস্ক কারখানার উদ্বোধন

ওইদিন এমএফএ কোকেয়ুসুফ মাস্ক কারখানার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি রেসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেন, মহামারিকালে আমরা এ পর্যন্ত ৬৬ হাজার ১০০ কোটি (৬৬১ বিলিয়ন) লিরা সাহায্য এবং সহায়তা সরবরাহ করেছি। এমন এক সময়ে যখন বিশ্ব করোনা যুদ্ধের মুখোমুখি হয়েছিল, আমরা প্রথম শ্রেণির স্বাস্থ্যসেবা বিনামূল্যে প্রদান করেছি।

এরদোয়ান বলেন, যদিও মহামারিটির শুরুতে ১৪ জন মাস্ক প্রস্তুতকারক ছিলেন, এই সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২৪। প্রযোজকের সংখ্যা এই বৃদ্ধি ১০০ গুণ বেড়েছে। আমরা এমন উপকরণগুলোর প্রতিরক্ষামূলক পরীক্ষার কেন্দ্রটি চালু করেছি যা বিশ্বের কাছে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তুর্কি অর্থনীতি মহামারির সময় যোগাযোগ বন্ধ করেনি। এটিই আমরা রফতানি এবং বৃদ্ধির পরিসংখ্যান পেয়েছি।

প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের দক্ষ নেতৃত্ব বিদেশনির্ভর নীতি থেকে বের হয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছে। অনুসন্ধানী সিসমিক জাহাজের পরে উত্তোলন কার্যক্রম পরিচালনার জাহাজ তুরস্কের আছে। পূর্বে বিদেশি জাহাজ ও সাহায্য নিয়ে এ ধরনের অনুসন্ধান হয়েছে বছরের পর বছর। তখন গ্যাস মাটির নিচে অধরাই ছিল।

তিনি বলেন, মূলকথা হলো রাজনীতি ও অর্থনীতি এক অন্যের হাত ধরে চলে। একটি আর একটির পরিপূরক। আজকের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে আগামীর অর্থনীতির চাকা ঘুরবে!

এমআরএম/এএসএম