দেশজুড়ে

তিস্তার কড়াল গ্রাসে বিলীন ৩ শতাধিক বসতবাড়ি

তিস্তার ভাঙনে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের কাশিমবাজারের তিন শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। হুমকিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ বেশকিছু সরকারি স্থাপনা। ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা। তবে পানি উন্নায়ন বোর্ড প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে।

Advertisement

সরেজমিনে দেখা যায়, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের গত ১৫ দিনে ভিটেমাটি হাড়িয়ে নিঃস্ব হয়েছে তিন শতাধিক পরিবার। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঘরবাড়ি সরাতে ব্যস্ত সবাই। কারও সঙ্গে কথা বলার যেন সময় নেই তাদের। হুমকিতে আছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ওয়াফদা বাঁধ। ১৯৪২ সালে প্রতিষ্ঠিত নাজিমাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত নাজিমাবাদ বি-এল উচ্চ বিদ্যালয়, ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত নাজিমাবাদ দাখিল মাদরাসা ও ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত কাশিমবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশকিছু সরকারি স্থাপনা এখন হুমকির মুখে।

স্থানীয় মাদারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মমতাজ বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘নদীভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নিলে নাজিমাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাজিমাবাদ বি-এল উচ্চ বিদ্যালয়, নাজিমাবাদ দাখিল মাদরাসা ও কাশিমবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হবে। তাই সরকারসহ জনপ্রতিনিধিদের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের কাশিমবাজারের বাসিন্দা আব্দুল মালেক জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভিটেমাটি হাড়িয়ে পথে পথে ঘুরছি, মনে অনেক কষ্ট। কেউ খোঁজ নিতে আসেনি।’

Advertisement

এই বাজারের নদীভাঙনের শিকার কমলা বেগম বলেন, ‘কয়েক বছর থেকে নদী ভাঙনের কথা বলে বলে আমাদের আশ্বাস দেয় কিন্তু ভাঙন প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’

ভাঙনের শিকার কলিম উদ্দিন বলেন, ‘ঘরবাড়ি নদীতে গেল কেউ আসলো খোঁজ নিতে। এখন আমরা কোথায় যাবো, কী করবো নিজেও জানি না।’

হরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল মিন্টু জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা বার বার যোগাযোগ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি, কিন্তু তারা নেয়নি। ফলে গত এক বছরে দু হাজারের বেশি বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। এখন আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। ভাঙন প্রতিরোধের জন্য গাইবান্ধায় যোগাযোগ করলে বলে কুড়িগ্রামের কথা, আর কুড়িগ্রামে যোগাযোগ করলে বলে গাইবান্ধার কথা। কেউ আসেনি খোঁজ নিতে। আমরা কোনো জেলার বাসিন্দা এখনও বুঝতে পারছি না।’

ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘গাইবান্ধার মানচিত্রে হরিপুরের ইউনিয়নের কাশিমবাজারটি থাকলেও গাইবান্ধা থেকে ওই এলাকা অনেক দূরে। ওই এলাকার দেখাশোনার দায়িত্ব কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের। তারপরও কুড়িগ্রাম গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভাঙন রোধে স্থায়ী পদক্ষেত নেয়া হয়েছে। বেশকিছু এলাকায় কাজ শুরু হয়েছে।’

Advertisement

জাহিদ খন্দকার/ইএ/জেআইএম