দেশজুড়ে

রাজশাহীতে নাট্যোৎসব

রাজশাহী থিয়েটারের তিন দশক পূর্তি উপলক্ষে নাট্যোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) অডিটোরিয়ামে এ নাট্যোৎসবের আয়োজন করা হয়। নাট্যোৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, সংস্কৃতি আমাদের গৌরব, অহংকার। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। আমাদের পরিচয় আমরা বাঙালি। মানুষ সংস্কৃতি ছাড়া বাঁচে না। দিনে দিনে সংস্কৃতির পরিবর্তন হয়েছে। ফলে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রার পরিবর্তনগুলো ফুটে ওঠে। মানুষের সুখ, শান্তি ও স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করার জন্য এখনো যুদ্ধ করতে হচ্ছে। এই যুদ্ধেই পরাজিত করতে হবে ওই দানব যুদ্ধাপরাধীদের। মানুষের জন্যই নাটক, গান ও সংস্কৃতির সৃষ্টি। নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালিদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। পৃথিবীতে ধর্মের সৃষ্টি হয়েছে শান্তির জন্য। বাঙালিরা সব বর্ণ ও ধর্মের মানুষই হতে পারে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিকে শেষ করার জন্য এক শ্রেণির অপশক্তি কাজ করছে। তার অনুসারী মৌলবাদীরা ধর্মের নাম ব্যবহার করে সহিংসতা, মারামারি ও সাম্প্রদায়িক ডাঙা সৃষ্টি করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। এমনকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হচ্ছে। যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করেননি। দেশকে স্বাধীন করেছেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও নগর সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধরে রেখেছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় শিল্পীরা দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করতেন। যা তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধাদের মনে অনুপ্রেরণা ও আশার আলো জাগাতে ভূমিকা রাখতো। দেশে আল-বদর, রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিতারিত করার জন্য বিচার চলছে। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের আরো কঠোর ভূমিকা রাখতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের থামা যাবে না। নতুন প্রজন্মকে আগামীতে দেশের হাল ধরতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাস্তবায়ন করতে হবে।এদিকে, বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভাষাসৈনিক আবুল হোসেন বলেন, আমরা বাঙালি। ভাষা আন্দোলন ও যুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। বঙ্গবন্ধু ও চার নেতাকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীদের জিয়াউর রহমান দেশে এনেছেন। সে সময় মানুষ যুদ্ধকে ভুলে গিয়ে মৌলবাদের দিকে অগ্রসর হয়েছিল। এখন রাজশাহী থিয়েটারের মতো সংগঠনগুলো পথে পথে নাটক, গান, কবিতা, গম্ভীরা করে প্রগতিশীল ধারাকে বোঝানোর চেষ্টা করছে। প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করার জন্য সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। রাজশাহী থিয়েটারের সভাপতি কামার উল্লাহ সরকার কামারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, ভারতীয় দূতাবাসের সহকারী হাই কমিশনার মি সন্দীপ মিত্র, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাজী সাহেদ হোসেন দুলাল ও মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন প্রামাণিক। এসময় অন্যদের মধ্যে বিভিন্ন সংগঠনের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে অনুষ্ঠানে ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা ও উত্তরী পদক প্রদান করা হয় এবং নাট্যোৎসব উপলক্ষে র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া অনুষ্ঠান শেষে নাটক প্রদর্শন করা হয়েছে।শাহরিয়ার অনতু/একে

Advertisement