আন্তর্জাতিক

‘বন্ধুর পথে’ এগিয়ে চলেছে টিকাদান, বিতরণ ২০০ কোটির বেশি

ইতিহাসের বৃহত্তম টিকাদান কর্মসূচি এগিয়ে চলেছে সগৌরবে। ইতোমধ্যে বিশ্বের অন্তত ১৭৬টি দেশ ও অঞ্চলে মোট ২০০ কোটির বেশি ডোজ বিতরণ হয়েছে। এখন পর্যন্ত পুরোপুরি টিকাকরণের আওতায় আনা গেছে বৈশ্বিক জনসংখ্যার ১৩ দশমিক ২ শতাংশ মানুষকে। তবে টিকাদানের হারে ব্যাপক বৈষম্য রয়েছে ধনী-দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে। দরিদ্রদের তুলনায় বিশ্বের ধনী অঞ্চলগুলোতে টিকাদান অন্তত ৩০ গুণ দ্রুত চলছে। শুক্রবার মার্কিন সংস্থা ব্লুমবার্গের কোভিড ট্র্যাকারের হালনাগাদ তথ্যে এ চিত্র উঠে এসেছে।

Advertisement

ব্লুমবার্গের হিসাবে, যুক্তরাষ্ট্র এ পর্যন্ত ২৯ কোটি ৮০ লাখ ডোজ বিতরণ করেছে। সেখানে গত সপ্তাহে দৈনিক গড় টিকাদানের হার ছিল ৯ লাখ ৯৯ হাজার ৪৭৪ ডোজ।

জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হবে কবে?এখন পর্যন্ত করোনারোধী সর্বোত্তম টিকা ৯৫ শতাংশ কার্যকর বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই বৈশ্বিক মহামারি প্রতিরোধে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ।

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফউসির মতে, জনসংখ্যার ৭০ থেকে ৮৫ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে পারলেই তার দেশে জনজীবন স্বাভাবিক হয়ে আসার আশা করা যাবে।

Advertisement

তবে বৈশ্বিক পর্যায়ে টিকাদান কর্মসূচি এখনো মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে দৈনিক টিকাদানের হার ৩ কোটি ৬৪ লাখ ডোজ। ফলে উচ্চমাত্রায় বৈশ্বিক অনাক্রম্যতা (ইমিউনিটি) অর্জনে আরো বছর খানেক লেগে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে আশার কথা হচ্ছে, প্রতিনিয়ত নতুন নতুন টিকা বাজারে আসার জেরে টিকাদানের হার ক্রমেই বাড়ছে।

মহামারির ভয়াবহতা কি কমছে?ব্যাপক টিকাদানের ইতিবাচক ফলাফল প্রথমেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে ইসরায়েল। গত ফেব্রুয়ারিতেই তারা ৭০ বছর বয়সোর্ধ্ব ৮৪ শতাংশ ইসরায়েলিকে দুই ডোজ করে টিকা দিয়ে ফেলেছিল। যার ফলে সেখানে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার দ্রুত কমে যায়। অনেকটা একই ধরনের চিত্র দেখা গেছে যুক্তরাজ্যেও।

টিকাদানের হারবিশ্বের যেসব অঞ্চলে টিকাদানের হার সর্বোচ্চ, সেখানে করোনায় সংক্রমণের হার অনেকটাই কম। বর্তমানে বিশ্বের ১৩টি দেশ ও অঞ্চল তার ৪০ শতাংশ জনসংখ্যাকে করোনা টিকা দিয়ে সুরক্ষিত করতে পেরেছে।

Advertisement

এক্ষেত্রে সবার উপরে সিশেলস। দেশটি তার জনসংখ্যার ৭০ শতাংশকে ইতোমধ্যেই করোনা টিকা দিয়েছে। এরপর রয়েছে মালদ্বীপ (৬৪ দশমিক ৬), সান ম্যারিনো (৬৩ দশমিক ১), সংযুক্ত আরব আমিরাত (৬১ দশমিক ২) ও বাহরাইনের (৫৯ দশমিক ১) মতো দেশগুলোর নাম।

যুক্তরাজ্য এ পর্যন্ত তার ৪৯ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষকে করোনা টিকা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছে ৪৬ দশমিক ৪ শতাংশ, কানাডা ৩৩ দশমিক ১, ভুটান ৩২ দশমিক ২, ইতালি ৩০, ফ্রান্স ২৯ দশমিক ৯, স্পেন ২৯ দশমিক ৭ শতাংশ।

চীনের মূল-ভূখণ্ডে করোনা টিকা নিয়েছে অন্তত ২৫ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ। ভারত এবং রাশিয়াতে এর হার ৮ দশমিক ২ শতাংশ।

এ তালিকায় অনেকটাই নিচের দিকে বাংলাদেশ। এদেশে জনসংখ্যার মাত্র ৩ শতাংশ মানুষ করোনা টিকা পেয়েছে।

ব্লুমবার্গের তথ্যমতে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক টিকাদানের হার দৈনিক ১২ হাজার ৬১৭ ডোজ। এই গতিতে এগোলে জনসংখ্যার ৭৫ শতাংশকে টিকা দিতে ১০ বছরেরও বেশি সময় লেগে যাবে দেশটির।

কেএএ/জেআইএম