ফরিদপুরসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলার মানুষের একমাত্র উন্নত চিকিৎসার শেষ ভরসা ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। বর্তমানে এখানে বেড়ে গেছে দালালদের দৌরাত্ম্য। হাসপাতালে আসলেই দালালের খপ্পরে পড়ে পদে পদে গুনতে টাকা। এতে অতিষ্ঠ রোগী ও স্বজনরা।
Advertisement
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা প্রায় হাজারেরও অধিক। হাসপাতালের প্রত্যেকটি ফ্লোরে রোগী ভর্তি। যারা বিভিন্ন কারণে জেলা, উপজেলা ও আশপাশের জেলা থেকে বদলি হয়ে অথবা সরাসরি এসেছেন চিকিৎসা সেবা নিতে। এসেই তাদের পড়তে হচ্ছে নানা ভোগান্তিতে।অনেকে পড়ছেন দালালের খপ্পরে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারী বলেন, গ্রামাঞ্চল থেকে আসা রোগীরা কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই পড়ছেন দালালের খপ্পরে। ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েই ওষুধপত্র নেয়ার দোকান ঠিক করে দেয় তারা। এরপর ডাক্তার দেখানোর নামেও হাতিয়ে নেয় আরও কিছু টাকা। জরুরি বিভাগের সামনে অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছানো মাত্রই রোগীকে উপরে তুলে দেয়ার নাম করে রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে নেয়া হয় ১০০ টাকা।
ফরিদপুরের সালথা উপজেলা থেকে আসা রোগীর স্বজন হাসি বেগম বলেন, ‘গত তিন দিন আগে রোগী ভর্তি করেছি। এখনো বেড পাইনি। অনেকেই আসে কিছু টাকা দিলে বেডের ব্যবস্থা করে দেব। কিন্তু আমি টাকা দিয়ে বেড নিইনি।’
Advertisement
পার্শ্ববর্তী নগরকান্দা থেকে আসা রোগী স্বজন এহসানুল হক বলেন, ‘আমি নতুন মানুষ বলে এখানে এসে পদে পদে দালালের খপ্পরে পড়তে হয়েছে। প্রথমে টের পাইনি পরে বুঝছি। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া থেকে সর্বশেষ ধাপ পর্যন্ত এখানে দালালের দৌরাত্ম্য। আর তাদের ছাড়াও কোনো উপায় নেই।’
এসব প্রসঙ্গে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে লোকবল সঙ্কটের কারণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবুও রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
দালালের বিষয়টি অকপটে স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা কিছু দালালদের নাম উল্লেখ করে ৩০ মে পুলিশ সুপারের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য একটি চিঠি দিয়েছি। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এসজে/এএসএম
Advertisement