অর্থনীতি

‘বড় বরাদ্দ আর বড় দুর্নীতি সমান্তরাল হয়ে গেছে’

‘বড় প্রত্যাশা থাকলেও গতবারের বাজেটে স্বাস্থ্যখাতকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। বিশেষ করে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য যে বরাদ্দ দেয়ার কথা, তা হয়নি। ১০ হাজার কোটি টাকার একটি থোক বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসে থোক বরাদ্দের অভিজ্ঞতা আসলে ভালো নয়। এতে দুর্নীতি, লুটপাটের ক্ষেত্র আরও বেড়ে যায়। করোনাকালে অন্তত তাই হয়েছে বলে আমরা দেখতে পেলাম।’

Advertisement

বলছিলেন অর্থনীতিবিদ ও উন্নয়ন বিশ্লেষক ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিপিআরসির নির্বাহী প্রধান এবং ব্র্যাকের চেয়ারপারসন পদে দায়িত্ব পালন করছেন হোসেন জিল্লুর। ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেট ও জনস্বাস্থ্যপ্রসঙ্গ নিয়ে মুখোমুখি হয়েছেন জাগো নিউজের।

দীর্ঘ আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, এবারের বাজেটেও বিশেষ কিছু হবে তার লক্ষণ নেই। তবে বরাদ্দ নিয়ে কথা বলার আগে আমাদের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলা জরুরি। বড় বরাদ্দ আর বড় দুর্নীতি সমান্তরাল হয়ে গেছে। এই সমীকরণ থেকে বের হয়ে আসতে হবে। বাজেট আলোচনায় পরিবর্তন না আনলে আমরা আসলে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে পারি না। স্বাস্থ্যখাতের বাজেটের বিষয়ে আলোচনা হওয়া উচিত প্রয়োজনীয় বরাদ্দ এবং দক্ষতার সঙ্গে সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিয়ে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অদক্ষতা ও দুর্নীতি রাষ্ট্রের সার্বিক দায়িত্বহীনতার প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে মন্তব্য করে এই বিশ্লেষক বলেন, স্বাস্থ্যখাতের এই চিত্র ধারাবাহিকভাবে দেখতে পাচ্ছি। দুর্নীতি, অদক্ষতা আর দায়িত্বহীনতার কারণেই স্বাস্থসেবা খাতের এই হাল বলে মনে করি। স্বাস্থ্যখাতে দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রচুর জনবল আছে। কিন্তু সঠিক সক্ষমতা ব্যবহার না করে এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে প্রশাসন। নিজেদের জন্য এক প্রকার দেয়াল তৈরি করে ফেলেছে তারা। এর বাইরে আর কোনো পরামর্শ তারা গ্রাহ্য করে না।

Advertisement

ড. হোসেন জিল্লুর বলেন, ধারাবাহিক দুর্নীতির খবর থাকার পরও সরকার কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না, তা আমার বুঝে আসে না। সরকার হয়ত মনে করে—ব্যবস্থা নিতে গেলে দুর্বলতা প্রকাশ পাবে। অথচ এই ব্যবস্থা না নেয়ার মানসিকতা গোটা বাংলাদেশকে বিপদের মুখে ফেলে দিচ্ছে। একটি সংঘবদ্ধ চক্র ক্ষমতার বলয়ে স্বাস্থ্যখাতকে কুক্ষিগত করে রাখছে। আমলাতান্ত্রিক গোষ্ঠীগুলো সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় বিশেষ ক্ষমতা গ্রহণ করছে। একটি দেশ থেকে ভ্যাকসিন ক্রয়ের বিষয়টি তো অনেক কিছুই পরিষ্কার করে দিল। স্বাস্থ্যখাতের আমূল সংস্কার জরুরি, তা বাজেটে গুরুত্ব পাক।

এএসএস/এইচএ/জেআইএম