ডেভন কনওয়ে- নামটি বাংলাদেশের ক্রিকেট অনুরাগীদের অন্তত ভোলার কথা নয়। এই তো গত মার্চ-এপ্রিলে নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে এই বাঁহাতি টপঅর্ডারের কাছেই যেন পরাজিত হয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও স্বপ্রতিভ ছিলেন ২৯ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যান।
Advertisement
এবার অভিজাত টেস্ট ক্রিকেটের শুরুটা দুর্দান্ত করলেন কনওয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত এ কিউই ওপেনারের টেস্ট অভিষেক হলো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, তাও কি না ক্রিকেটের তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। আর অভিষেকেই দলের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়ে রেকর্ডের পাতায় নাম তুলেছেন কনওয়ে।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট শুরু হয়েছে বুধবার। অভিজ্ঞ তিন তারকা টম লাথাম, কেইন উইলিয়ামসন ও রস টেলরদের ব্যর্থতার দিন আপন আলোয় উজ্জ্বল অভিষিক্ত কনওয়ে। সঙ্গে পেয়েছেন আরেক বাঁহাতি হেনরি নিকলসকে। দুজনের ব্যাটে ভর করে প্রথম দিন শেষে কিউইদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২৪৬ রান।
দলকে নিরাপদে রাখার মিশনে নিজের অভিষেক ইনিংসেই সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন কনওয়ে। দিন শেষে তিনি অপরাজিত রয়েছেন ১৩৬ রানে। অন্যদিকে পাঁচ নম্বরে নেমে নিকলসের সংগ্রহ ৪৬ রান। দলীয় ১১৪ রানে তৃতীয় উইকেট পতনের পর চতুর্থ উইকেটে এ জুটির সংগ্রহ অবিচ্ছিন্ন ১৩২ রান।
Advertisement
প্রায় দুই বছর পর লর্ডসে টেস্ট ফেরার দিন টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কিউই অধিনায়ক উইলিয়ামসন। উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৫৮ রান। উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান লাথাম আউট হন ইংল্যান্ডের অভিষিক্ত অলি রবিনসনের প্রথম শিকারে পরিণত হয়ে। তার ব্যাট থেকে আসে ৫৭ বলে ২৩ রানের ইনিংস।
এরপর ইংল্যান্ডের পক্ষে অ্যালিস্টার কুকের সঙ্গে যুগ্মভাবে সর্বোচ্চ ১৬১তম টেস্ট খেলতে নামা জিমি অ্যান্ডারসনের বলে নিজের স্ট্যাম্প হারান ১৩ রান করা উইলিয়ামসন, রবিনসনের বলে আউট হওয়ার আগে ১৪ রান করেন টেলর। যার ফলে ৩৮ ওভারেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড।
দিনের বাকি গল্পটা লিখেছেন কনওয়ে ও নিকলস। এর পথে লর্ডসের মাঠে ষষ্ঠ অভিষিক্ত ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরি করেন কনওয়ে। তবে ছাড়িয়ে গেছেন আগের পাঁচজনকে। লর্ডসে অভিষেকে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ছিল সৌরভ গাঙ্গুলির। তিনি করেছিলেন ১৩১ রান। সেটি ছাপিয়ে ১৩৬ রানে অপরাজিত কনওয়ে।
এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের সামনে এখন সুযোগ ইতিহাসের ১৮তম ব্যাটসম্যান হিসেবে লর্ডসে ডাবল সেঞ্চুরি করার। সবশেষ ২০১৫ সালে লর্ডসে দ্বিশতকের দেখা পেয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার স্টিভেন স্মিথ, খেলেছিলেন ২১৫ রানের ইনিংস। এ মাঠে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি গ্রাহাম গুচের। তিনি ১৯৯০ সালে ভারতের বিপক্ষে করেছিলেন ৩৩৩ রান। লর্ডসে একমাত্র ট্রিপল সেঞ্চুরি সেটিই।
Advertisement
এছাড়া বিশ্বের ৩৫তম ওপেনার ও ১০৯তম ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেকেই সেঞ্চুরির দেখা পেলেন কনওয়ে। অভিষেকে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি টিপ ফস্টারের। ১৯০৩ সালে নিজের অভিষেক টেস্টে ২৮৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক। অভিষেকে ডাবল সেঞ্চুরির কীর্তি রয়েছে মাত্র ৬ জনের।
এদিকে নিউজিল্যান্ডের দ্বাদশ ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেকে সেঞ্চুরি করেছেন কনওয়ে। দেশের বাইরে অভিষেকে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি এখন তারই দখলে। ভারতের আহমেদাবাদে নিজের অভিষেক টেস্টে ১৩১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন উইলিয়ামসন। সেটি টপকে গেছেন কনওয়ে। কিউইদের পক্ষে অভিষেকে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ম্যাট সিনক্লেয়ারের, ২১৪ রানের।
এসএএস/জেআইএম