জাবির ছাত্র অধিকার পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দফতর সম্পাদক ইকবাল হোসাইন বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে যখন গার্মেন্টস চলছে, যানবাহন চলছে, রেস্টুরেন্ট-রিসোর্ট চলছে। তখন শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ই চলছে না। এখন যে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চলছে এর মাধ্যমে মূলত রাষ্ট্র বৈষম্যের ব্যবস্থা করছে। গ্রামের যে গরীব মানুষ দু’বেলা খেতে পারে না তাদেরকে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের নামে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। যে শিক্ষা ব্যবস্থা বৈষম্য সৃষ্টি করে তা আমরা চাই না।’
Advertisement
বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবিতে করা মানববন্ধনে এ কথা বলেন তিনি। বুধবার (২ জুন) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে এ মানববন্ধন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত এ মানববন্ধনে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরাও অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু নাহিয়ান।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তরিকুল আলম বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ও ক্যাম্পাস খোলার জন্য যে শর্ত দিয়েছে এরমধ্যে অন্যতম হলো শিক্ষার্থীদের টিকাদান করা। জাবির সকল শিক্ষক-কর্মচারী ও অধিকাংশ শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছে। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে বাধা কোথায়? আমরা চাই যাতে অতি শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া হোক।’
Advertisement
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যাপারে শিক্ষক সমিতির সভাপতি বলছেন যে হল নির্মাণ শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে। অন্যদিকে প্রকল্প পরিচালক বলছে আগামী বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির আগে হলে শিক্ষার্থী উঠানো সম্ভব না। ক্যাম্পাস বন্ধের দেড় বছর পর শুনছি, হল নির্মাণকাজ শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া হবে। এ কথা প্রমাণ করে যে শুধুমাত্র করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে আছে এরকম নয়। বরং যে কাজ চলছে সেখানে দুর্নীতির ধারা অব্যাহত রাখতেই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে।’
ছাত্রফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ বলেন, ‘করোনাকালে বাংলাদেশের ৪৭ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন হতাশা থেকে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা না থাকা এর পেছনের একটি বড় কারণ। সারাদেশের শিক্ষকদের সংগঠন বলছে সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার কথা। আর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি বলছেন হলের নির্মাণকাজ শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতে চাই শিক্ষা কার্যক্রম চললে কী উন্নয়ন কাজ পরিচালনা করা সম্ভব না? নাকি ভেবে নেবো অনৈতিক ওদুর্নীতির মাধ্যমে কাজ নির্বিঘ্নে পরিচালনা করার জন্যই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে।’
জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের প্রচার সম্পাদক সাদিকুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া নাহলে আমরা আরো কঠিন আন্দোলনের পথ বেছে নেবো। আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে উদ্যোগ নিবে’।
Advertisement
ফারুক হোসাইন/এসএমএম/এএসএম