ভয়াবহ এক বিমান দুর্ঘটনা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ‘টারজান’খ্যাত হলিউড অভিনেতা উইলিয়াম জোসেফ লারার। চাটার্ড বিমানে করে যাত্রা করা সময় আকাশপথে এক বিমান দুর্ঘটনায় সস্ত্রীক তার মৃত্যু হয়। জানা গেছে, ওই বিমান দুর্ঘটনায় মোট ৭ জন নিহত হয়েছেন।
Advertisement
মার্কিন শহর নেশভাইলের কাছে পার্শি প্রেইস্ট হ্রদে ভেঙে পড়ে তাদের বিমান। টারজানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে হলিউডে। মৃত্যুকালে এই গুণী অভিনেতার বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর।
কে এই জো লারা?
জো লারার আসল নাম হলো উইলিয়াম জোসেফ লারা। ১৯৩২ সালের ২ অক্টোবর তার জন্ম হয় ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়েগোতে। জো লারা শুধু একজন গুণী অভিনেতাই ছিলেন না। তিনি একাধারে একজন পাইলট, অভিনেতা, মার্শাল আর্টিস্ট, মডেল এবং সংগীত শিল্পী ছিলেন।
Advertisement
বিভিন্ন সক্ষাৎকারে জো লারা বলেছেন, ১৯ বছর বয়সে ১৯৮১ সালে মডেলিং এজেন্সির মাধ্যমে মিডিয়ায় প্রবেশ করেন তিনি। এরপর প্যারিসে, সুইজারল্যান্ডে এবং ইতালির মিলানে পোশাকের রানওয়ে মডেল হিসেবে কাজ শুরু করেন জো লারা।
১৯৮৮ সালে প্রথম সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। হরর/ওয়ার মুভি ‘নাইট ওয়ার্স’ এর মাধ্যমে সিনেমা জগতে আত্মপ্রকাশ করেন জো লারা। তিনি একজন আমেরিকান সৈনিকের ভূমিকায় অভিনয় করেন এ সিনেমায়।
টারজান হলেন যেভাবে
১৯৮৯ সালে ‘টারজান ইন ম্যানহ্যাটান’ টেলিভিশন সিরিজে অভিনয় করেন জো লারা। সেখানে টারজান চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। দর্শপ্রিয়তার কারণে তিনি আবারও টারজান চরিত্রে অভিনয় করে ‘টারজান: দ্য এপিক অ্যাভেঞ্চার’ টেলিভিশন সিনেমায়।
Advertisement
এরপর আর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তার ক্যারিয়ার ঘোড়ার মতো দৌড়েছে শুধু। এরপর থেকেই পর্দায় জো লারা থাকা মানেই উত্তেজনার কয়েক মুহূর্ত! এরপর তিনি পরপর বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেন- ১৯৯০ সালে ‘গানস্মোকে: দ্য লাস্ট অ্যাপাচি’, ১৯৯২ সালে ‘সানসেট হিট’ এবং ‘দ্য প্রেজেন্স’, ১৯৯৩ সালে ‘আমরিকান সাইবার্গ: স্টিল ওয়ারিয়র’, ১৯৯৫ সালে ‘ফাইনাল ইক্যুনিক্স’, ১৯৯৬ সালে ‘ওয়ারহেড’, ১৯৯৭ সালে ‘অপারেশন ডেলটা ফোর্স’, ১৯৯৮ সালে ‘আর্মস্ট্রং’ এবং ১৯৯৯ সালে ‘অপারেশন ডেলটাফোর্স ৪: ডিপ ফল্ট’ ইত্যাদি।
জো লারার সর্বশেষ কয়েকটি সিনেমা হলো- ডুমসডায়ার, ডেড ম্যানস রান, ডেথ গেম, স্টারফায়ার মিউটিনি, সামার ৬৭ ইত্যাদি। তার সর্বশেষ টিভি সিরিজগুলো হলো- কোনান দ্য অ্যাডভেঞ্চার, ইন সার্চ অব টারজান উইথ রোস এবং দ্য ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেন-ইত্যাদি।
যদিও ২০০২ সালে সালে নিজের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার থেকে অবসর গ্রহণ করেন জো লারা। ২০০৯ সাল থেকে তিনি মিউজিকের প্রতিই মনোনিবেশ করেন। জো লারার মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৫ মিলিয়ন ডলার। তিনি খুবই সাধারণ জীবনযাপন করতেন।
সাংসারিক জীবন
জো লারার প্রথম স্ত্রী ছিলেন নাতাশা পাভলোভিচ। তাদের একটি কন্যা সন্তান আছে। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের পর জো লারা ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট বিয়ে করেন জেন শাম্বলিনকে। তিনি ছিলেন একজন ডায়েটেশিয়ান এবং খ্রিষ্টান যাজক।
‘আ গ্রাউন্ডব্রেকিং অ্যাপ্রোচ টু ওয়েট লস’ বইয়ের লেখিকা জেন। ১৯৭৮ সালে তার প্রথম বিবাহ হয় ডেভিড সাম্বলিনের সঙ্গে। তিনি দুই সন্তানের জননী ছিলেন। এমনকি তার ৭টি নাতি-নাতনিও আছে।
সূত্র: ডেইলি সান/গসিপজিস্ট/কোনান ডেইলি
জেএমএস/এমএস