নওগাঁর নিয়ামতপুরে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে বোর্ডের নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ঘটনায় অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী বোর্ড এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ১ হাজার ৪৪৫ টাকা এবং বাণিজ্য ও মানবিক বিভাগের জন্য ১ হাজার ৩৫৫ টাকা নির্ধারণ করে। কিন্তু নিয়ামতপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়সহ কয়েকটি স্কুল বোর্ডের আদেশ অমান্য করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন। বোর্ডের নির্ধারিত ফি দিয়ে কোনো শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করতে পারেনি।নিয়ামতপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ ঝর্না বেগম বলেন, অন্যান্য স্কুলকে অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২ হাজার ৭’শ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে বোর্ডের ফি, সেশন ফি ও অতিরিক্ত কোর্চিং ফিও আছে। এবার এসএসসি পরীক্ষার জন্য ৫৮ জন শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করেছে বলে জানান তিনি।নিয়ামতপুর বহমুখী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এবার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পূরণ বাবদ ২ হাজার ১’শ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। বোর্ড ফি, ২০১৬ সালের সেশন ফি ৫’শ টাকা, কোচিং ফি ৫’শ টাকা করে মোট ২ হাজার ৪’শ টাকা হলেও এক্ষেত্রে ২ হাজার ১’শ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে।এছাড়া উপজেলার সাদাপুর খড়িবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়, টিএলবি উচ্চ বিদ্যালয়, পিএলবি উচ্চ বিদ্যালয়, শালবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়, ভবানীপুর বালিকা বিদ্যালয়, কাপাষ্টিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, নিয়ামতপুর আলিম মাদরাসাসহ অনেক প্রতিষ্ঠানে ফরম পূরণের অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও নির্বাচনী পরীক্ষায় দুই-এক বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে।নিয়ামতপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের মানবিক বিভাগের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এবার এসএসসি পরীক্ষা দিবো বলে টাকা ধার করে নিয়ে এসে ফরম পূরণ করেছি। টাকা কম নেয়ার বিষয়ে শিক্ষকরা কোনো কথাই শুনতে চান না। আফজাল হোসেন নামে এক অভিভাবক বলেন, বোর্ড ফি নির্ধারণ করে দিলেও ফরম পূরণসহ বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া শিক্ষকরা ঠিকমতো স্কুল, কোর্চিং ক্লাস করান না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি নুরুল আমীন বলেন, এ বছর প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে বোর্ডের নির্দেশিত চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে বোর্ড ফি ১ হাজার ১৪৫ টাকা, বোর্ডে যাতায়াত প্রতি ছাত্র ২’শ টাকা, সেশন ফি ৩১০ টাকা এবং স্কুল কোর্চিং ক্লাসের জন্য ৭’শ টাকা নেয়া হচ্ছে। বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ২ হাজার ৭’শ টাকা এবং মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের জন্য ২ হাজার ৬’শ করে নেয়া হবে বলে জানান তিনি।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওয়াজেদ আলী মৃধা বলেন, অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) রেজা হাসান বলেন, অতিরিক্ত অর্থ আদায়ে শিক্ষার্থী বা অভিভাবকের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে বিষয়টি দেখবেন বলে জানান তিনি।আব্বাস আলী/এসএস/আরআইপি
Advertisement