জমজম। বহুগুণে সমৃদ্ধ মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে পাওয়া বরকতময় নেয়ামতের পানি। হজ ও ওমরায় অংশগ্রহণকারীরা এবং জমজমের এ পানি পাওয়ার ক্ষেত্রে সম্ভব্য ব্যক্তিদের জন্য এ পানি পানের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন। হাদিসে ঘোষিত নিয়ম অনুযায়ী তৃপ্তি সহকারে জমজমের পানি পান করা ঈমানের বহিঃপ্রকাশ। মুনাফিকরা চাহিদা মতো জমজমের পানি পান করত না। তাছাড়া এ পানি পানের রয়েছে বিশেষ উপকারিতা। কী সেই উপকারিতা?
Advertisement
জমজমের পানির গুণাগুণ ও উপকারিতার বিষয়টি চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রমাণিত। তারপরও এ পানির একটি বিশেষ উপকারিতা আছে। এ পানি পানে নিয়ত অনুযায়ী উপকারিতা পায় মুমিন। হাদিসে এসেছে->> হজরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, জমজমের পানি যে উপকার পাওয়ার আশায় পান করা হবে; তা অর্জিত হবে বা সে উপকার পাওয়া যাবে।’ (ইবনে মাজাহ)
আবার এ পানি পানের সঙ্গে ঈমানের বিষয়টিও জড়িত। হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ পানি পানের নির্দেশ ও তা পান করার বর্ণনা করে উল্লেখ করেন->> হজরত মুহাম্মাদ বিন আবদুর রহমান বিন আবু বাকর (মাকবুল) বর্ণনা করেন, আমি হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর কাছে বসা ছিলাম। (এমন সময়) এক ব্যাক্তি তাঁর কাছে এলে তিনি জিজ্ঞাসা করনে, তুমি কোথা থেকে এসেছো?সে বলল- জমজমের কাছ থেকে।তিনি জিজ্ঞাসা করলেন- ‘তুমি কি তা থেকে প্রয়োজনমত পানি পান করেছ?সে বলল- তা কিরূপে?তিনি বললেন, তুমি তা (জমজম) থেকে পান করার সময়-১. কেবলামুখী হবে।২. আল্লাহর নাম স্মরণ করবে।৩. তিনবার নিঃশ্বাস নেবে এবং৪. তৃপ্তি সহকারে পান করবে।৫. পানি পান শেষে তুমি মহামহিম আল্লাহর প্রশংসা করবে।কারণ , রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমাদের ও মুনাফিকদের মধ্যে নিদর্শন এই যে, তারা তৃপ্তি সহকারে জমজমের পানি পান করে না।’ (ইবনে মাজাহ)
>> হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনায় এসেছে, ‘জমজমের এ পানি দাঁড়িয়ে কেবলামুখী হয়ে তিন নিঃশ্বাসে পান করা সুন্নাত। বরকত ও উপকার পাওয়ার আশায় জমজমের পানি পান করার সময় এ দোয়া করাও উত্তম-اللَّهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا, وَرِزْقًا وَاسِعًا, وَشِفَاءً مِنْ كُلِّ دَاءٍউচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আস'আলুকা ইলমান নাফি'আ, ওয়ারিজকান ওয়াসিয়া, ওয়াশিফা'আন মিন কুল্লি দায়িন।’অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে উপকারী জ্ঞান, প্রশস্থ রিজিক এবং যাবতীয় রোগ থেকে আরোগ্য কামনা করছি।’ (দারা কুতনী, আব্দুর রাজ্জাক ও হাকেম)
Advertisement
মুমিন মুসলমানের উচিত, জমজমের পানি পানের বিশেষ উপকারিতা পেতে যথাযথ সম্মান ও দোয়ার সঙ্গে পান করা। মনের একনিষ্ঠ নিয়ত পূরণে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনায় এ পানি পান করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জমজের পানি পান করে যাবতীয় বরকত ও উপকারিতা পাওয়ার তাওফিক দান করুন। মুনাফেকির আচরণ থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমকেএইচ
Advertisement