পাঁচদিন চেষ্টা করেও মেরামত করা সম্ভব হয়নি খুলনার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া ও দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের গাতিরঘেরি এলাকার ভাঙা বেড়িবাঁধ।
Advertisement
স্থানীয়রা কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে মেরামতের চেষ্টা চালালেও জোয়ারের পানির তোড়ে টিকছে না তা। এদিকে সোমবার (৩১ মে) বাঁধ মেরামতের জন্য সকালে এলেও বৃষ্টির কারণে ফিরে গেছেন অনেকেই।
এদিকে বাঁধ ভাঙা থাকায় লোকালয়ে অবাধে প্রবেশ করছে লবণাক্ত পানি। এতে জলমগ্ন গ্রামগুলোতে দেখা দিয়েছে সুপেয় পানি ও খাবারের সঙ্কট।
উপজেলা প্রশাসন জানায়, বুধবার (২৬ মে) ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে কপোতাক্ষ, কয়রা ও শাকবেড়িয়া নদীতে জোয়ারের পানি ৬-৭ ফুট বৃদ্ধি পায়। এতে কয়রা উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ১১টি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জরাজীর্ণ বাঁধ টপকিয়ে লবণাক্ত পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। এতে ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়।
Advertisement
পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় বাঁধের ৯টি পয়েন্ট আটকানো সম্ভব হলেও মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া ও উত্তর বেদকাশী ইউনিয়েনের গাতিরঘেরীর বাঁধ মেরামত করা যায়নি। এদিকে বৃহস্পতিবার (২৭ মে) দুপুরের বাঁধের এ পয়েন্ট দিয়ে জোয়ারে পানি প্রবেশ করে আরও ১৫-২০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়। তবে মেরামত করায় এ স্থান দিয়ে বর্তমানে জোয়ারের পানি প্রবেশ বন্ধ রয়েছে।
জানা যায়, দশালিয়ার পাঁচটি স্থানে বেড়িবাঁধের আনুমানিক দুই হাজার ফিট পর্যন্ত অংশ ভেঙে গেছে। এসব ভাঙা অংশ আটকাতে না পারলে যেকোনো সময় উপজেলা পরিষদসহ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দশালিয়া ভাঙনের স্থান মেরামতের চেষ্টা সফল হয়নি। রাতে জোয়ারে পানি আবারও ঢুকেছে লোকালয়ে। সোমবার ভাঙন এলাকায় এলাকাবাসী বাঁধ মেরামত করতে আসলেও অতিবৃষ্টির কারণে থমকে যায় মেরামত কাজ।
বাগালী ইউপি চেয়ারম্যান আ. ছাত্তার পাড় বলেন, দশহালিয়া ভাঙনের পানিতে বাগালী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। লবণাক্ত পানির কারণে এসব এলাকার অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দশহালিয়া বেড়িবাঁধ মেরামত না হওয়া পর্যন্ত দুর্ভোগ কমবে না। এদিকে ইতোমধ্যে প্লাবিত এলাকায় পানিবাহিত রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ।
Advertisement
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুদীপ বালা বলেন, প্লাবিত এলাকায় আমাদের মেডিকেল টিম সেবা দিচ্ছে।
কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহসীন রেজা বলেন, রোববার (৩০ মে) সকাল থেকে মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া এলাকার বাঁধ স্থানীয়রা বাঁশ, মাটি, সিমেন্টের বস্তা দিয়ে অস্থায়ীভাবে মেরামতের চেষ্টা করছেন। তবে দুপুরের জোয়ারে তা আবারও তা ভেঙে যায়।
কয়রা উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় বাকি আটটি স্থানের বাঁধ আটকানো সম্ভব হয়েছে। তবে গাতিরঘেরি ও দশহালিয়ায় পানি আটকানো সম্ভব হয়নি।
পাউবো সাতক্ষীরা বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশিদুর রহমান বলেন, বাঁধ নির্মাণের কাজে বালুর বস্তা ও জিও ব্যাগসহ সব ধরনের সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
আলমগীর হান্নান/এসএমএম/জিকেএস