অর্থনীতি

তামাকদ্রব্য করের আওতায় আনার দাবি

গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ পেতে বিগত ৪ বছরে আমরা তেমন কিছুই অর্জন করতে পারিনি। বাকি দিনগুলোতে আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট কর আরোপের কোনো বিকল্প নেই। ২০২১-২২ অর্থবছর থেকেই এটা করতে হবে এবং কর কাঠামোর বাইরে থাকা তামাকজাত দ্রব্যগুলো কর জালের আওতায় আনতে হবে।’ রোববার (৩০ মে) ‘তামাক ব্যবহার ত্যাগে মূল্য ও করের প্রভাব’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো (বিইআর), বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা) এবং বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি) সম্মিলিতভাবে এই ওয়েবিনার আয়োজন করে।

Advertisement

এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. নাসির উদ্দিন, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধাপক ও বিএনটিটিপির কনভেনর ড. রুমানা হক। ওয়েবিনারে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান, সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত ও গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী।

বাংলাদেশে তামাক কর আদায়ের ক্ষেত্রে আধুনিকায়নের অভাব রয়েছে মন্তব্য করে ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘এ বাধা কাটিয়ে উঠতে পারলে অনেক বাধা কেটে যাবে। তবে দেশকে তামাকমুক্ত করতে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। বর্তমান মূল্যের চেয়ে কয়েক গুণ কর বৃদ্ধি করে ভোক্তাদের মধ্যে একটি ধাক্কা দিতে হবে। যাতে স্বল্প মূল্যে তারা ক্রয় করতে না পারে। এতে তরুণরাও ধূমপান থেকে নিরুৎসাহিত হবে।’

রুমানা হক বলেন, ‘আমাদের দেশে তামাকজাত দ্রব্যের ওপর করারোপে অ্যাডভেলোরেম (শতাংশ হারে) পদ্ধতি অনুসরন করা হয়। পদ্ধতিটি জটিল ও ত্রুটিপূর্ণ। তাই এটি তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনা বা রাজস্ব বৃদ্ধিতে কাঙ্ক্ষিত অবদান রাখতে পারছে না। বরং তামাক কোম্পানি অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে লাভবান হচ্ছে এবং তামাক কোম্পানির কর ফাঁকি দেয়ার সুযোগ থেকে যাচ্ছে। অ্যাডভেলোরেম পদ্ধতির পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে করারোপ করা হলে তামাকের ব্যবহার কমবে ও সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।’

Advertisement

বিশ্ব ব্যাংকের একটি গবেষণার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য প্রতি বছর ১০ শতাংশ হারে বৃদ্ধিতে এর ব্যবহার উচ্চ আয়ের দেশে ৪ শতাংশ এবং নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে ৮ শতাংশ কমে আসে এবং তরুণরা তামাক ব্যবহার শুরু করতে নিরুৎসাহিত হয়।’

হাবিবে মিল্লাত বলেন, ‘আমরা এখন ২০৪০ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণামতো বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার জন্য কাজ করছি। সংসদে আমাদের সহযোদ্ধার সংখ্যা বাড়ছে। দেশের মানুষের স্বার্থেই দেশকে তামাকমুক্ত করতে হবে। সম্মিলিত চেষ্টায় নিশ্চয়ই আমরা তা অর্জন করবো।’

পিডি/এমএসএইচ/এমকেএইচ

Advertisement