দেশজুড়ে

নূর হোসেনের পক্ষে আদালতে আওয়ামীপন্থী আইনজীবী

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত চাঁদাবাজি মামলার শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা। তিনি আদালতের এজলাসে এসে নূর হোসেনের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর শুনানিতে অংশ নেয়ার চেষ্টা করলেও আসামির পক্ষে ওকালতনামা না থাকায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি।নূর হোসেনের পক্ষে আওয়ামী লীগ নেতা খোকন সাহা শুনানিতে অংশগ্রহণের জন্য আদালতে হাজির হলে সাধারণ আইনজীবীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কারণ এর আগে সাত খুনের পর নারায়ণগঞ্জ আইনজীবীরা ঘোষণা দিয়েছিল নূর হোসেনসহ আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে অংশগ্রহণ করবে না।এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অশোক কুমার দত্তের আদালতে সিদ্ধিরগঞ্জের একটি চাঁদাবাজি মামলায় নূর হোসেনের উপস্থিতিতে শুনানি শেষে মামলাটি বিচারের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে। পরে আদালত আগামী ১১ জানুয়ারি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলাটির শুনানির দিন ধার্য করেন।জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৩০ মে সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকার ইকবাল হোসেন নামের একজন ব্যবসায়ীর কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে নূর হোসেন ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় ইকবাল বাদী হয়ে ২০১৪ সালের ৮ জুন সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ তদন্ত শেষে নূর হোসেন, তার ভাতিজা নাসিকের বরখাস্তকৃত কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল, ক্যাশিয়ার আলী মোহাম্মদ, দেহরক্ষী গোলাম মর্তুজা চার্চিল, শাহজাহান ও বুলবুল ওরফে টুন্ডা বুলবুলের বিরুদ্ধে গত ১৫ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। এর মধ্যে নূর হোসেন, আলী মোহাম্মদ ও চার্চিল ৭ খুনের দু’টি মামলায় গ্রেফতার রয়েছেন। বুলবুল ওরফে টুন্ডা বুলবুল ও বরখাস্তকৃত কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল জামিনে আছেন। পলাতক রয়েছেন শাহজাহান (যিনি সাত খুন মামলারও আসামি)। নূর হোসেনকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করা হলেও অন্যরা সময় প্রার্থনা করেছেন।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কঠোর নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষা করে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নূর হোসেনকে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অশোক কুমার দত্তের আদালতে হাজির করা হয়। ডান্ডাবেরী অবস্থায় পুলিশ ভ্যান থেকে নামানো থেকে কাঠগড়ায় ওঠানো পর্যন্ত পুরোটা সময়েই নূর হোসেন ছিল হাসিমুখে। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা আদালতের এজলাসে এসে নূর হোসেনের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর শুনানিতে অংশ নেন।এ সময় অ্যাডভোকেট খোকন সাহা আদালতে জানান, তিনি নূর হোসেনের পক্ষে কথা বলতে চান। তখন আদালত তার কাছে জানতে চান তিনি আসামির পক্ষে ওকালতনামা নিয়েছেন কিনা। তখন খোকন সাহা আদালতকে জানান, তিনি এখনো আসামির পক্ষে ওকালত নামা নেননি। পরে আদালত তাকে ওকালত নামা নিয়ে শুনানিতে অংশ নেয়ার জন্য বলেন।রাষ্ট্রপক্ষে থাকা নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের উপ-পরিদর্শক গোলাম হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, নূর হোসেনের পক্ষে অ্যাডভোকেট খোকন সাহা শুনানিতে অংশ নিতে চাইলেও ওকালত নামা না থাকায় তিনি শুনানি করতে পারেননি। শুনানি শেষে আবারও নূর হোসেনকে ঢাকার কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আগামী ১১ জানুয়ারি জজ কোর্টে মামলাটির পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।উল্লেখ্য, গত ৩০ নভেম্বর সাত খুনের দু’টি মামলাতে নূর হোসেন, র্যাব-১১ এর চাকরিচ্যুত ৩ কর্মকর্তাসহ ২৩ জনকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে হাজির করা হয়। আগামী ১১ জানুয়ারি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি মামলার চার্জগঠন ও অপরটির শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।শাহাদাত হোসেন/এসএস

Advertisement