তথ্যপ্রযুক্তি

যে কারণে বিশ্বে এফিলিয়েট মার্কেটিং সবচেয়ে সেরা

গালিব হোসেন

Advertisement

ব্যবসা এবং ঝুঁকি একে অন্যের পরিপূরক। ব্যবসাতে সফল হতে হলে ঝুঁকির সাথে আরো অনেক ঝামেলা সামাল দিতে হয়। কিন্তু এফিলিয়েট মার্কের্টিং এমন একটি ব্যাবসায়িক স্ট্রাটেজি যেটা আর ১০টা স্ট্রাটেজি থেকে একদম আলাদা।

এই ব্যবসার মাধ্যমে আপনি আপনার সর্বোচ্চ আয়ের সম্ভাবনা বজায় রেখেও বিভিন্ন ইস্যু থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন। কিসের ভিত্তিতে এফিলিয়েট মার্কেটিংকে সবচেয়ে উত্তম ব্যবসায়িক আইডিয়া যে ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।

সময়ের স্বাধীনতা

Advertisement

সময় একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা মূলত টাকা আয় করি আমাদের সময়কে বিক্রি করে। অফিসের বেতনের বিনিময়ে আমরা আমাদের পুরো মাস ব্যয় করি। কিন্তু এফিলিয়েট মার্কেটিং প্ল্যানের মধ্যে আপনি অন্য কারো সময়ের উপর নির্ভরশীল নন। আপনি আপনার চাহিদা মতো আপনার সময়কে ম্যানেজমেন্ট করে ব্যবহার করতে পারেন।

স্থানের স্বাধীনতা

আপনি ব্যবসা বা চাকরি যেটাই করেন আপনার ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে অথবা অফিসে আপনাকে অবস্থান করতেই হবে। কিন্তু এফিলিয়েট মার্কেটিং-এর ক্ষেত্রে আপনার ব্যবসায়িক ক্ষেত্রটিই হচ্ছে আপনার কম্পিউটার যেটাতে ইন্টারনেট সংযোগ থাকবে।

মনে করুন আপনি সেন্টমার্টিন গিয়েছেন বন্ধুদের সাথে ঘুরতে। এই সময় যদি আপনার সাথে ইন্টারনেট সংযোগসহ আপনার ল্যাপটপটি থাকে তাহলেই আপনার পুরো ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ আপনার হাতে কারণ এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে এই দুটো জিনিসই মাত্র লাগে।

Advertisement

কোনো পণ্য সংরক্ষণাগারের প্রয়োজন নেই

ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট নিয়ে ব্যবসা করতে চাইলে পণ্য সংরক্ষণাগারের জন্য একটি জায়গা প্রয়োজন। এটি সব ব্যবসার ক্ষেত্রেই একটি মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যদি ডিজিটাল প্রোডাক্ট হয় সেই ক্ষেত্রে কোনো সংরক্ষণাগারের প্রয়োজন হয় না। তবে সেক্ষেত্রেও প্রোডাক্টটি আপনাকে তৈরি করতে হবে অথবা ম্যানেজমেন্ট করতে হবে। কিন্তু এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে ফিজিক্যাল বা ডিজিটাল কোনো প্রোডাক্টের ক্ষেত্রেই আপনার কোনো সংরক্ষণাগার বা প্রোডাক্ট তৈরি বা ম্যানেজ করার কোনো প্রয়োজন নেই। যেহেতু আপনার নিজস্ব কোনো প্রোডাক্ট বা সংরক্ষণাগার কিছুই নেই তাই পেমেন্ট নিয়েও আপনাকে ভাবতে হবে না।

নিজের প্যাশন-এর সাথে কাজ করার সুযোগ যেহেতু আপনার নিজের কোনো প্রোডাক্ট বা সংরক্ষণাগারের প্রয়োজন নেই, তাই আপনি যেকোনো প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করতে পারেন। মনে করুন, আপনি বাগান করতে পছন্দ করেন। সেক্ষেত্রে বাগান রিলেটেড অনেক প্রোডাক্ট আপনি পেয়ে যাবেন। যে বাগান করতে পছন্দ করে সে জানে বাগান করতে কী কী প্রোডাক্ট লাগে। আমি পছন্দ করি না তাই আমি জানি না। এরকমভাবে আপনার যে বিষয়ের প্রতি প্যাশন রয়েছে আপনি সেই বিষয়ের উপর নির্দিষ্ট প্রোডাক্ট খুঁজে সেই প্রোডাক্টগুলো নিয়ে কাজ করতে পারেন।

সীমাহীন আয়ের সম্ভাবনা

একটি ব্যবসার মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রি করা। এই ক্ষেত্রে প্রয়োজন হচ্ছে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস এবং ক্রেতা। আপনার কাছে প্রোডাক্ট আছে কিন্তু ক্রেতা নেই তাহলে কোনো লাভ নেই আবার ক্রেতা আছে প্রোডাক্ট নেই তাহলেও কোনো লাভ নেই। প্রোডাক্ট এবং ক্রেতা দুই-ই যখন আছে তখন হয় লাভ। এখন আপনি যত বেশি ক্রেতা নিয়ে আসতে পারবেন তত আপনার বিক্রি বেশি হবে। আবার শুধু ক্রেতা নিয়ে আসলেও যথেষ্ট হবে না। সেই ক্রেতা যেন প্রোডাক্ট কিনে সেভাবেই কাজ করতে হবে। তাহলে আপনার বিক্রি আরো বেড়ে যাবে এবং যত বিক্রি তত লাভ।

এক্ষেত্রে সত্যি বলতে কোনো লিমিট নেই। আপনার নিজের দক্ষতার উপর নির্ভর করে আপনি কী পরিমাণ বিক্রি করতে পারবেন। এমন অনেক এফিলিয়েট মার্কেটার আছেন যারা প্রতিদিন ১০০০ ডলার আয় করেন। বো বেন্নেট নামের একজন বিশিষ্ট উদ্যোক্তা বলেন এফিলিয়েট মার্কেটিং দিয়ে কোটি কোটি ডলারের ব্যবসা করেছেন। এবং কাউকে কাউকে করে দিয়েছেন কোটিপতি।

শেষ কথা

নিশ্চই বুঝতে পেরেছেন কেনো এফিলিয়েট মার্কেটিংকে সেরা ব্যবসায়িক আইডিয়া বলা হয়েছে। ব্যবসায়িক মানসিকতার মানুষগুলো এখন এটা নিয়ে কাজ শুরু করবেন। তার আগে জানা প্রয়োজন এই আইডিয়াটি ইমপ্লিমেন্ট করার জন্য আপনাকে অবশ্যই কিছু প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হবে।

এক গবেষণা থেকে জানা গেছে, ৯০ ভাগ মানুষ এই প্রক্রিয়ার ৯০ ভাগ শেষ করে সফল হওয়ার আগেই সেখান থেকে ফিরে আসে এবং ১০ ভাগ চূড়ান্ত ধৈর্যশীল মানুষই শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারে। তাই আপনি সফল হতে পারবেন কিনা তা আপনার পরিশ্রম এবং ধৈর্যের ক্ষমতার উপরই নির্ভর করে।

যাদের শুরু করতে চান, তারা দেরি না করে আজকে থেকেই শুরু করে দিন। কারণ ভালো একটা আইডিয়া পেলে মানুষ সেটার উপর এমনভাবে হামলে পড়ে যে পরবর্তীতে কম্পিটিশনে টিকে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই কম্পিটিশন কঠিন হয়ে যাওয়ার আগেই শুরু করে দিন।

এমএমএফ/এএসএম