আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ আজও হয়নি। বৃহস্পতিবার তিন সাক্ষী আদালতে হাজির থাকলেও পর্যাপ্ত আসামি আদালতে উপস্থিত না থাকায় আলোচিত এই হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ পিছিয়ে দেন আদালত।আগামী ৯ ও ১০ ডিসেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য তারিখ ধার্য করে কারান্তরীণ সকল আসামিকে নির্ধারিত তারিখে আদালতে হাজির করার জন্য কারা কতৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মকবুল আহসান।এর আগে বুধবারও সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারিত থাকলেও সাক্ষী না আসায় এবং পর্যাপ্ত আসামি আদালতে হাজির না থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি।ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি কিশোর কুমার কর জাগো নিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবার আদালতে জসিমউদ্দিন, আলতাফ আলী ও মুহিবুর রহমান সাক্ষ্য দিতে হাজিরা দেন। তবে কারাগারে আটক থাকা ১৪ আসামির মধ্যে হবিগঞ্জ পৌরসভার বরখাস্তকৃত মেয়র জিকে গউছসহ ৫ আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। বাকি আসামিদের অন্য মামলায় হাজিরা ও অসুস্থতাজনিত কারণে হাজির করা যায়নি। তাই সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। অ্যাডভোকেট কিশোর কর আরও বলেন, চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার ৩২ আসামির মধ্যে ৮ জন জামিনে, ১৪ জন কারাগারে ও ১০ জন পলাতক রয়েছেন। তবে জামিনে থাকা আসামিরা নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন।এর আগে গত ২৬ নভেম্বর হরমুজ আলী ও শমসের মিয়া নামে দুইজন আদালতে সাক্ষ্য দেন। ২৫ নভেম্বর আদালতে পর্যাপ্ত আসামি হাজির না থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। গত ১৮ নভেম্বর আদালতে সাক্ষ্য দেন ২ জন। ১৯ নভেম্বর হরতাল থাকায় আদালতে আসামি ও সাক্ষীরা হাজির হতে না পারায় সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। গত ১১ নভেম্বর আদালতে পর্যাপ্ত আসামি হাজির না থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। পরদিন সাক্ষীরা হাজির না হওয়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়ে যায়। গত ৫ নভেম্বর আবদুর রউফ ও এরফান আলী নামে দুইজন আদালতে সাক্ষ্য দেন। এরও আগে গত ৪ নভেম্বর এবং ২৮ ও ২৯ অক্টোবর আদালতে পর্যাপ্ত আসামি উপস্থিত না থাকায় আলোচিত এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়নি।গত ২১ সেপ্টেম্বর আলোচিত এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারিত ছিল। কিন্তু ওইদিন বাদী পক্ষ আদালতে সাক্ষীদের হাজির করতে না পারায় বিচারক ৩০ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেন। ওইদিন আদালতে সাক্ষ্য দেন হবিগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ খান। গত ২১ অক্টোবর আদালতে সাক্ষ্য দেন আবদুল মতিন, আবদুল কাইয়ুম ও ঈমান আলী।প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদরের বৈদ্যের বাজারে এক জনসভায় গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। ওই হামলায় নিহত হন কিবরিয়ার ভাতিজা শাহ মনজুরুল হুদা, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী। এ ঘটনায় হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ খান হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন।তিন দফা তদন্তের পর এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সিলেট অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার মেহেরুন নেছা পারুল ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর আরিফুল, গউছ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১১ জনের নাম যোগ করে মোট ৩২ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন। হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ মো. আতাবুল্লাহ মামলাটি বিচারের জন্য গত ১১ জুন সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেন। ছামির মাহমুদ/এসএস/পিআর
Advertisement