অর্থনীতি

‘ফুল বিক্রি করে গাড়িভাড়াও উঠছে না’

করোনাভাইরাসের প্রথম ধাক্কা সামাল দিয়ে উঠতে পারছেন না ফুল ব্যবসায়ীরা। এরমধ্যে চলতি বছর ফের করোনার সংক্রমণ বাড়ায় সারাদেশে চলছে বিধিনিষেধ। বিয়েসহ অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠান কম হওয়ায় একেবারেই বিক্রি নেই শাহবাগের ফুল মার্কেটে।

Advertisement

বিক্রেতারা বলছেন, বেচাকেনা অর্ধেকের বেশি কমেছে। ফুল বিক্রি করে খরচ তোলা কঠিন হয়ে পড়েছে।

শুক্রবার (২৮ মে) সকালে শাহবাগ মোড়ে বটতলা ফুলের মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ দোকানই বন্ধ। যাদের দোকান খোলা তারা অল্প কিছু ফুল দোকানে তুলেছেন।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, শাহবাগ মোড়ের এই মার্কেটটিতে দুই শতাধিক দোকান রয়েছে। গোলাপ, জারবেরা, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, জিপসি, রডস্টিক, কেলেনডোলা, চন্দ্রমল্লিকাসহ প্রায় ১৫ ধরনের ফুল বিক্রি হয়।

Advertisement

স্বাভাবিক সময়ে দিনে ৪-৫ হাজার টাকার ফুল বিক্রি হয়। তবে বিয়ে বা অন্য অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতি থেকে শনিবার বিক্রি বেড়ে যায় তিন থেকে চারগুণ। আর ভ্যালেনটাইন্স ডে, পহেলা বৈশাখ, বসন্তবরণসহ জাতীয় দিবসে বিক্রি বাড়ে আরও কয়েকগুণ। তবে করোনার কারণে বিগত দেড় বছর ধরে বিক্রি নেই বললেই চলে।

শিমুল পুষ্পালয়ের স্বত্তাধিকারী আবদুল করিম জাগো নিউজকে বলেন, গত বছরের লকডাউনের পর থেকেই ফুল ব্যবসায় মন্দাবস্থা। ফুল পর্যাপ্ত আছে কিন্তু লকডাউনে মানুষ ফুল দিয়ে কী করবে? অনুষ্ঠান নেই, আমরা ফুল এনে বিক্রি করতে করতে পারি না। লকডাউন না থাকলে ও স্কুল-কলেজ খোলা থাকলে বেচাকেনা বাড়তো।

এদিকে, বিধিনিষেধের কারণে গাড়ি ভাড়া বেড়েছে। এ কারণে ফুলের পরিবহন ব্যয় ২০-৩০ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা।

ফুল ব্যবসায়ীরা বলছেন, যশোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকার সাভারসহ দেশের ২৩ জেলায় ফুলের চাষ হয়। এসব জায়গা থেকে ফুল আনতে পরিবহন খরচ বেড়েছে।

Advertisement

ব্যবসায়ী করিম বলেন, ফুল পাঠান কৃষকরা। সেটা যে ভাড়া হয়, সেটা তো আমাদেরই দিতে হয়। ফুলের দাম অনেক কম এখন। কিন্তু ঢাকায় ফুল আনতে যে ভাড়া লাগে, সেটা বেড়েছে। ফুল আনতে যে খরচটা হচ্ছে, বিক্রি করে সেটা উঠাতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রণোদনা চেয়েছি। কিন্তু কিছুই পাইনি। প্রণোদনা, ব্যাংক ঋণ কিছুই পাইনি।’

নাফি ফ্লাওয়ার গার্ডেনের রুহুল আমিন বলেন, ‘প্রতিদিন লস দিয়েই দোকান চালাতে হচ্ছে। বিক্রি না হলেও দিনে হাজার টাকা খরচ ঠিকই আছে। দোকানগুলোতে এক-দু’জন করে কর্মী আছে। তাদের মাস শেষে নিজের পকেট থেকে বেতন দিতে হচ্ছে।

তবে বিধিনিষেধ উঠে গেলে সামাজিক অনুষ্ঠান বাড়বে। খুলবে স্কুল-কলেজও। তখন ফুলের বেচাকেনা আবার আগের মতো হবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

এসএম/এএএইচ/এএসএম