দেশজুড়ে

খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক যেন মরণ ফাঁদ

খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের খুলনার জিরো পয়েন্ট থেকে ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর বাজার পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটার মহাসড়কটি মেরামতে ভালো কোনো খবর নেই। এ মহাসড়কের ১৭ কিলোমিটার মরণ ফাঁদে পরিণত হলেও সংস্কারের অনুমোদন মিলেছে মাত্র ৯ কিলোমিটার রাস্তার। ফলে দুর্ভোগ ও ভোগান্তি আপাতত শেষ হচ্ছে না মানুষের।সরেজমিনে দেখা গেছে, খুলনার জিরো পয়েন্ট থেকে চুকনগর বাজার পর্যন্ত ৩৩ দশমিক ৬৫ কিলোমিটার রাস্তাটি প্রায় তিন বছর ধরে ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে। এই মহাসড়কটি বাণিজ্যিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভোমরা স্থল বন্দর থেকে মাল খালাস হয়ে খুলনা বাগেরহাটসহ এ অঞ্চলের জেলাগুলোতে যাওয়ার একমাত্র আঞ্চলিক মহাসড়ক এটি। গুরুত্বপূর্ণ হলেও সড়কটি প্রায় তিন বছর ধরেই ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে। রাস্তার মধ্যেই সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। বিটুমিন উঠে খোয়া বের হয়ে গেছে রাস্তার অধিকাংশ জায়গায়। গত ঈদে তড়িঘড়ি করে কয়েকটি স্থানে জোড়া তালি দিলেও টেকেনি। সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে প্রতিনিয়ত ছোট বড় দুর্ঘটনা লেগেই আছে। যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে পথচারীসহ গাড়ির যাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ নেই সড়কটিতে। তবে এ মহাসড়কটি স্থায়ী সমাধানে কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না। সংস্কারে যে বরাদ্দ প্রয়োজন তার অর্ধেকও বরাদ্দ হয়নি চলতি অর্থ বছরে। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে আঞ্চলিক এ মহাসড়কটি মেরামতে বরাদ্দ হয়েছে মাত্র ১৮ কোটি টাকা। অথচ প্রয়োজন ছিল ৩৩ কোটি টাকা। সড়ক ও জনপথ খুলনার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মামুন কায়সার খুলনা চুকনগর মহাসড়কটির বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বলেন, এ মহাসড়কটির প্রায় ১৭ কিলোমিটার ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে। এটি মেরামতের জন্য প্রয়োজন প্রায় ৩৩ কোটি টাকা। সে আলোকে সড়কটি সংস্কারে চলতি অর্থবছরে ৩৩ কোটি টাকার প্রস্তাব দেয়া হয়। তবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে ৯ কিলোমিটার মেরামতের জন্য ১৭ কোটি টাকার অনুমোদন দেয়া হয়ছে। খুব শীঘ্রই এর কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, মহাসড়কটি পুনরায় নতুন করে মেরামত করার জন্য ডিপিপি তৈরি করা হয়েছে। যার ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। ডিপিপির অনুমোদন হলেই এ মহাসড়ক জাতীয় মহাসড়কের মতো হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সড়ক ও জনপথের একটি সূত্র জানিয়েছে, এ মহাসড়কটি জেলা সড়ক থেকে আঞ্চলিক মহাসড়ক ঘোষণা করা হলেও এর ধারণ ক্ষমতা মহাসড়ক অনুযায়ী নয়। এ মহাসড়ক দিয়ে বড় বড় গাড়ি চলায় সড়কটি খুব দ্রুতই নষ্ট হয়ে যায়। নিচে লেয়ার খুবই কম। পাথর, খোয়া ও বালুর পরিমাণ কম। এর উপরে বিটুমিন ও পিচ দিয়ে মেরামত করলেও কয়েকদিন পর আবার সেই অবস্থায় চলে যায়। এ মহাসড়কটি নতুন করে মেরামত করা প্রয়োজন বলে দাবি সূত্রটির।এদিকে এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকদের অভিযোগের অন্ত নেই। যানবাহন চালক রওশন আলী, আব্দুস সামাদ, আব্দুস সাত্তার ও মফিজুর রহমান বলেন, সংস্কার না হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হয় এ রাস্তায়। সড়কটি তড়িঘড়ি করে মেরামত করায় এটা টিকছে না। তারা দ্রুত এ মহাসড়কটি মেরামতের দাবি জানান।আলমগীর হান্নান/এমজেড/পিআর

Advertisement